Ajker Patrika

শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, সালিসে দেড় লাখ টাকা জরিমানা, বাকি ৫৮ হাজার

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২৫, ২৩: ০৬
শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, সালিসে দেড় লাখ টাকা জরিমানা, বাকি ৫৮ হাজার

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক মাদ্রাসাশিক্ষার্থী (১০) ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি জানাজানি হলে গতকাল শুক্রবার পুলিশ অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চালায়।

এর আগেই ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মাতবরেরা গ্রাম্য সালিসের আয়োজন করে। সালিসে ধর্ষককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার ৯২ হাজার টাকা দিলেও ৫৮ হাজার বাকি রাখা হয়।

ভুক্তভোগী ওই শিশু ও তার পরিবারের লোকজন ভয়ে মুখ না খুললেও ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। আজ শনিবার দুপুরে মির্জাপুর থানার পুলিশ ভুক্তভোগী শিশু ও তার মাকে থানায় নিয়ে ঘটনার বিষয়ে তথ্য নিয়েছে। পরে শিশুটির মা মামলা করেছেন। তবে এ মামলায় অভিযুক্ত ধর্ষকের পাশাপাশি মাতবরদের আসামি করা হয়েছে কি না, তা জানাতে চায়নি পুলিশ। মামলার খবরে মাতবরেরা গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন অভিযুক্ত সিএনজিচালক উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কুড়িপাড়া গ্রামের ফিরোজ মিয়া (৪৫) শিশুটির এক আত্মীয়ের বাড়ির কাছে জমিতে সার দিচ্ছিলেন। ওই জমির পাশে শিশুটি গাছ থেকে বরই পাড়ছিল। তখন ফিরোজ মিয়া শিশুটিকে ডেকে একটি টয়লেটে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে ধর্ষণের কথা কাউকে না বলতে ভয়ভীতি দেখান।

পুলিশ আরও জানায়, ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয়েছে। সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় শিশুটিকে।

শিশুটির মায়ের ভাষ্য উল্লেখ করে পুলিশ জানায়, ফিরোজ শিশুটিকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার শব্দ শিশুটির মা শুনেছিলেন। পরে বাড়িতে ফিরে শিশুটি চুপচাপ থাকায় তাকে জিজ্ঞেস করা হলেও কিছু বলছিল না। বারবার জিজ্ঞেস করায় একপর্যায়ে পুরো ঘটনা মাকে খুলে বলে ভুক্তভোগী শিশু।

একপর্যায়ে বিষয়টি প্রতিবেশীরা জেনে যায়। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মালেক, বাবুল, ফাজুসহ কয়েকজন ঘটনার এক সপ্তাহ পর গ্রাম্য সালিসের আয়োজন করেন। সালিসে ধর্ষক ফিরোজকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। গ্রাম্য মাতবরদের চাপে সালিস মেনে নিলেও জরিমানার ৫৮ হাজার টাকা এখনো বাকি রয়েছে বলে শিশুটির মা জানান।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে গতকাল রাতে অভিযুক্তকে আটক করতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। তবে ফিরোজ কয়েক দিন আগে এলাকা ছেড়েছেন বলে জানা গেছে।

শিশুটির মা জানান, তাঁর স্বামী প্রবাসী। এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। ঘটনার কথা ভয়ে প্রকাশ করেননি। তবু জানাজানি হয়ে গেছে। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর মতো কোনো অভিভাবক নেই। গ্রামের মাতবরদের কারণে সালিস মেনে নিয়েছিলেন।

মির্জাপুর থানার ওসি মো. মোশারফ হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারের স্বার্থে এ মুহূর্তে আসামিদের নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈশাখী মেলার নাগরদোলায় চড়িয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা

জেলা প্রশাসনের আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া সেই আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

এশিয়ার সেরা সুপ্ত সম্ভাবনা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত, বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ

ডিবিপ্রধানকে সরানোর সঙ্গে মডেল মেঘনার ঘটনার সম্পর্ক নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঢাকায় এসে ২০ জুলাইযোদ্ধার দৃষ্টিশক্তি ফেরালেন ব্রিটিশ চিকিৎসকেরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত