মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ)
হাওরের বুক চিরে ছুটছে লাল ঘোড়া। গন্তব্য কোনো এক মৃত বাড়ি। সোয়ারির এক হাতে ঘোড়ার লাগাম, অন্য হাতে শাবল। কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে থাকে কোদাল, ছেনি, মাপের ফিতা, করাতসহ কবর খোঁড়ার হরেক যন্ত্র। ছুটছেন মৃত ব্যক্তির বাড়িতে, কাটবেন বাঁশ, খুঁড়বেন মানুষের শেষ ঠিকানা ‘কবর’। তিনি মনু মিয়া; স্বেচ্ছাশ্রমে কবর খনন করাই তাঁর নেশা।
গেল ৫০ বছরে ২ হাজার ৮৫৮টি কবর খুঁড়েছেন বলে দাবি মনু মিয়ার। জীবনের শেষ দিন অবধি এ কাজ করতে চান বলে নিজের আশার কথাও জানালেন।
শেষ ঠিকানার নিপুণ কারিগর মনু মিয়া (৭০) কিশোরগঞ্জের ইটনার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল হেকিম ও সারবানু দম্পতির সন্তান। তিনি ১৯৭২ সাল থেকে গতকাল শনিবার প্রয়াত রাষ্ট্রপতি, সিটি মেয়র, চেয়ারম্যান, আলেম, শিক্ষকসহ ২ হাজার ৮৫৮টি কবর খুঁড়েছেন।
মনু মিয়া কারও মৃত্যুর খবর পেলেই ছোটেন মৃতের বাড়িতে। কবর খোঁড়ার যন্ত্রপাতি নিয়ে বাঁশ কাটা ও কবর খোঁড়া শুরু করেন। নিজ উপজেলাসহ ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বহু কবর খনন করেছেন তিনি। হাওরজুড়ে শেষ ঠিকানার নিখুঁত ও দক্ষ কারিগর হিসেবে মনু মিয়ার খ্যাতি রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে মনু মিয়ার মা সারবানু মারা যান। গ্রামবাসী তাঁর কবর খনন করেন যত্নসহকারে। তা দেখে সেদিন থেকে মনু মিয়া কবর খোঁড়া শুরু করেন। তবে তাঁর জীবনের বড় আক্ষেপ জন্মদাতা বাবার কবর খুঁড়তে পারেননি তিনি। মোবাইলবিহীন আমলে ঢাকায় বেড়াতে যাওয়ার পর তাঁর বাবা আবদুল হাকিম মারা যান। বাবার মৃত্যুর সে খবর ১৫ দিন পর খবর পেয়েছিলেন তিনি।
প্রথম দিকে কবর খননে অন্যদের সহযোগিতা করতেন মনু মিয়া। একসময় দেখেন তিনি নিজেই সুন্দরভাবে কবর খনন করতে পারেন। মানুষজনও প্রশংসা করেন। এতে তাঁর আগ্রহ বেড়ে যায়।
ঝড়, বৃষ্টি, শরীর খারাপ—এমনকি কোনো কাজই মনু মিয়াকে থামাতে পারেনি। মোবাইলে বা লোকমুখে মৃতের খবর পেতে বিলম্ব হলেও খবর খোঁড়ার যন্ত্র নিয়ে ঘোড়ায় চড়তে তাঁর বিলম্ব হয় না। মৃতের পরিবার থেকে কোনো রকম টাকাপয়সা, যাতায়াত ভাড়া বা খাবার গ্রহণ করেন না তিনি। নিয়মিত দাফন শেষে বাড়ি ফিরে গোসল করেন। পরে লেখাপড়া জানা কাউকে ডেকে ডায়েরিতে মৃতের নাম ও ঠিকানা লিখে নেন। তারপর সাংসারিক কাজ করেন। অনেক সময় দাফন করা ব্যক্তির স্বজনেরা মৃত্যু তারিখ জানতে আসেন।
মনু মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাতে কবর খোঁড়ার চিন্তা নিয়ে যদি তিনি ঘুমান, তাহলে সারা রাত ভালো ঘুম হয় না তাঁর। শুধু অপেক্ষা করেন, কখন সকাল হবে। আর কেউ মারা গেলে তিনি কেমনে যে খবর পান, আমি বুঝি না। যদি কোথাও বেড়াতে গিয়ে শোনেন কেউ মারা গেছেন, তাহলে সেখানেই কবর খুঁড়তে লেগে যান তিনি। কখনো যদি শরীর একটু খারাপ থাকে, তখনও মৃতের খবরে ঘোড়া ও ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।’
মনু মিয়া বলেন, ‘মানুষ পৃথিবীতে সবকিছু ফেলে চলে যাওয়ার সময় তাঁর আর কিছুই থাকে না। চুড়ান্ত আশ্রয় শেষ ঠিকানা কবরটা একটু সুন্দর হোক—এটাই আমি সব সময় চাই। বিয়ের পর স্ত্রী রহিমা খাতুন আমার এ কাজে বাধা দিতেন। তারপরও নিষেধ অমান্য করে কবর খনন অব্যাহত থাকায় একসময় আমার স্ত্রীও মৃত নারীর গোসল করানো শুরু করেন।’
বহু মানুষের কবর খুঁড়েছেন জানিয়ে মনু মিয়া বলেন, ‘জীবনে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, রাষ্ট্রপতির ছোট ভাইসহ বহুজনের কবর খুঁড়েছি। শরীর ভালো থাকলে জীবনের শেষদিনও কবর খুঁড়তে চাই। সবচেয়ে খারাপ লাগছিল মায়ের কবর খুঁড়তে গিয়ে। আরেক দুঃখ রয়েছে যে, বাবার কবর খুঁড়তে পারি নাই।’
হাওরের বুক চিরে ছুটছে লাল ঘোড়া। গন্তব্য কোনো এক মৃত বাড়ি। সোয়ারির এক হাতে ঘোড়ার লাগাম, অন্য হাতে শাবল। কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে থাকে কোদাল, ছেনি, মাপের ফিতা, করাতসহ কবর খোঁড়ার হরেক যন্ত্র। ছুটছেন মৃত ব্যক্তির বাড়িতে, কাটবেন বাঁশ, খুঁড়বেন মানুষের শেষ ঠিকানা ‘কবর’। তিনি মনু মিয়া; স্বেচ্ছাশ্রমে কবর খনন করাই তাঁর নেশা।
গেল ৫০ বছরে ২ হাজার ৮৫৮টি কবর খুঁড়েছেন বলে দাবি মনু মিয়ার। জীবনের শেষ দিন অবধি এ কাজ করতে চান বলে নিজের আশার কথাও জানালেন।
শেষ ঠিকানার নিপুণ কারিগর মনু মিয়া (৭০) কিশোরগঞ্জের ইটনার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল হেকিম ও সারবানু দম্পতির সন্তান। তিনি ১৯৭২ সাল থেকে গতকাল শনিবার প্রয়াত রাষ্ট্রপতি, সিটি মেয়র, চেয়ারম্যান, আলেম, শিক্ষকসহ ২ হাজার ৮৫৮টি কবর খুঁড়েছেন।
মনু মিয়া কারও মৃত্যুর খবর পেলেই ছোটেন মৃতের বাড়িতে। কবর খোঁড়ার যন্ত্রপাতি নিয়ে বাঁশ কাটা ও কবর খোঁড়া শুরু করেন। নিজ উপজেলাসহ ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বহু কবর খনন করেছেন তিনি। হাওরজুড়ে শেষ ঠিকানার নিখুঁত ও দক্ষ কারিগর হিসেবে মনু মিয়ার খ্যাতি রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে মনু মিয়ার মা সারবানু মারা যান। গ্রামবাসী তাঁর কবর খনন করেন যত্নসহকারে। তা দেখে সেদিন থেকে মনু মিয়া কবর খোঁড়া শুরু করেন। তবে তাঁর জীবনের বড় আক্ষেপ জন্মদাতা বাবার কবর খুঁড়তে পারেননি তিনি। মোবাইলবিহীন আমলে ঢাকায় বেড়াতে যাওয়ার পর তাঁর বাবা আবদুল হাকিম মারা যান। বাবার মৃত্যুর সে খবর ১৫ দিন পর খবর পেয়েছিলেন তিনি।
প্রথম দিকে কবর খননে অন্যদের সহযোগিতা করতেন মনু মিয়া। একসময় দেখেন তিনি নিজেই সুন্দরভাবে কবর খনন করতে পারেন। মানুষজনও প্রশংসা করেন। এতে তাঁর আগ্রহ বেড়ে যায়।
ঝড়, বৃষ্টি, শরীর খারাপ—এমনকি কোনো কাজই মনু মিয়াকে থামাতে পারেনি। মোবাইলে বা লোকমুখে মৃতের খবর পেতে বিলম্ব হলেও খবর খোঁড়ার যন্ত্র নিয়ে ঘোড়ায় চড়তে তাঁর বিলম্ব হয় না। মৃতের পরিবার থেকে কোনো রকম টাকাপয়সা, যাতায়াত ভাড়া বা খাবার গ্রহণ করেন না তিনি। নিয়মিত দাফন শেষে বাড়ি ফিরে গোসল করেন। পরে লেখাপড়া জানা কাউকে ডেকে ডায়েরিতে মৃতের নাম ও ঠিকানা লিখে নেন। তারপর সাংসারিক কাজ করেন। অনেক সময় দাফন করা ব্যক্তির স্বজনেরা মৃত্যু তারিখ জানতে আসেন।
মনু মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাতে কবর খোঁড়ার চিন্তা নিয়ে যদি তিনি ঘুমান, তাহলে সারা রাত ভালো ঘুম হয় না তাঁর। শুধু অপেক্ষা করেন, কখন সকাল হবে। আর কেউ মারা গেলে তিনি কেমনে যে খবর পান, আমি বুঝি না। যদি কোথাও বেড়াতে গিয়ে শোনেন কেউ মারা গেছেন, তাহলে সেখানেই কবর খুঁড়তে লেগে যান তিনি। কখনো যদি শরীর একটু খারাপ থাকে, তখনও মৃতের খবরে ঘোড়া ও ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।’
মনু মিয়া বলেন, ‘মানুষ পৃথিবীতে সবকিছু ফেলে চলে যাওয়ার সময় তাঁর আর কিছুই থাকে না। চুড়ান্ত আশ্রয় শেষ ঠিকানা কবরটা একটু সুন্দর হোক—এটাই আমি সব সময় চাই। বিয়ের পর স্ত্রী রহিমা খাতুন আমার এ কাজে বাধা দিতেন। তারপরও নিষেধ অমান্য করে কবর খনন অব্যাহত থাকায় একসময় আমার স্ত্রীও মৃত নারীর গোসল করানো শুরু করেন।’
বহু মানুষের কবর খুঁড়েছেন জানিয়ে মনু মিয়া বলেন, ‘জীবনে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, রাষ্ট্রপতির ছোট ভাইসহ বহুজনের কবর খুঁড়েছি। শরীর ভালো থাকলে জীবনের শেষদিনও কবর খুঁড়তে চাই। সবচেয়ে খারাপ লাগছিল মায়ের কবর খুঁড়তে গিয়ে। আরেক দুঃখ রয়েছে যে, বাবার কবর খুঁড়তে পারি নাই।’
চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে। গত আট মাসে গুলি করে পাঁচজনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যার এসব ঘটনায় পর্যালোচনা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এসব হত্যাকাণ্ডে একই গ্যাং জড়িত।
৪ ঘণ্টা আগেমেয়াদ শেষের প্রায় দুই বছর হয়ে গেলেও কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণ ছাট গোপালপুরে দুধকুমার নদের তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। এতে দুধকুমারের তীরবর্তী অঞ্চলে ভাঙন-আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী ম্যানেজারের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের টাকা নিয়ে...
৪ ঘণ্টা আগেলালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে বসানো হয়েছে হাট-বাজার। এতে বিঘ্নিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার পরিবেশ। খেলাধুলার চর্চা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠানটিতে যাওয়া-আসা করতেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।
৪ ঘণ্টা আগেবালুমহাল হিসেবে ইজারা নেওয়া হয়নি; তবে দিব্যি নদীতীরের মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। রোজ শতাধিক ট্রাক মাটি উঠছে পাড় থেকে। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় ঘটছে এমন ঘটনা। বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতারা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এই মাটি ও বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় ইউএনওর বাসায় ককটেল ফোটানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগে