Ajker Patrika

১৪ মাসের কাজ শেষ হয়নি তিন বছরেও

  • ১০ কোটির প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে।
  • ঠিকাদারের ম্যানেজারের কাছে কয়েক লাখ টাকা পাবেন স্থানীয়রা।
শামসুজ্জোহা সুজন, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম)
বাঁধের জন্য তৈরি করা হয়েছে ব্লক। সম্প্রতি কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর দক্ষিণছাট গোপালপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাঁধের জন্য তৈরি করা হয়েছে ব্লক। সম্প্রতি কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর দক্ষিণছাট গোপালপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেয়াদ শেষের প্রায় দুই বছর হয়ে গেলেও কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণ ছাট গোপালপুরে দুধকুমার নদের তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। এতে দুধকুমারের তীরবর্তী অঞ্চলে ভাঙন-আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী ম্যানেজারের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের টাকা নিয়ে গা ঢাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নদীভাঙন প্রতিরোধে ‘কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন’ প্রকল্প গ্রহণ করে। এ প্রকল্পের আওতায় তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণ ছাট গোপালপুর গ্রামে ৫০০ মিটার তীর রক্ষা বাঁধ (প্যাকেজ নম্বর-১০) নির্মাণকাজ পায় এসএ-এসআই প্রাইভেট লিমিটেড অ্যান্ড টিআই জেভি নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বাঁধ নির্মাণ ব্যয় ১০ কোটি ২৫ লাখ ৯১ হাজার ৩০ টাকা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০২২ সালের ১ মে তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু করে। বাঁধ নির্মাণের সময় ধরা হয় ১৪ মাস। সেই হিসাবে বাঁধ নির্মাণকাজ ২০২৩ সালের ২৯ জুন শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুই বছর কাজ করেও এ পর্যন্ত ১ ইঞ্চি পরিমাণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। ভাঙনকবলিত স্থানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কিছু জিও ব্যাগ ফেলেছে। বাঁধ নির্মাণের জন্য তৈরি করা কংক্রিট ব্লক পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

এদিকে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী ম্যানেজার সোহাগের কাছে অন্তত কয়েক লাখ টাকা পাবেন বলে জানা গেছে। গত বছরের মার্চের মাঝামাঝি গা ঢাকা দেন সোহাগ।

ভাঙনের শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন বলেন, বাঁধের কাজ শুরু হলে দুধকুমারের তীরে বাস করা মানুষের মনে স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু এক বছর ধরে বাঁধের কাজ বন্ধ থাকায় তাঁদের মনে ভাঙন-আতঙ্ক বিরাজ করছে।

নাইটগার্ডের দায়িত্ব পালন করা মশিউর রহমান বলেন, ‘মাসিক ৯ হাজার টাকা বেতনে নাইটগার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বকেয়া বেতন বাবদ আমি তাঁর কাছে ২ লাখ টাকা পাই। আমার ভাই মিলন সাব-কন্ট্রাক্টে বালু সরবরাহ ও শ্রমিকের মজুরি প্রদান করেছে। সে প্রায় ৩ লাখ টাকা পাবে।’

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা নুর ইসলাম বলেন, ‘কাজের মজুরি বাবদ ১ লাখ এবং ধার বাবদ আরও ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাব।’ জমি লিজদাতা আবু সাঈদ বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১ বিঘার বেশি জমি লিজ দেওয়া হয়েছে। দুই বছর ধরে তাঁরা লিজের টাকা দিচ্ছে না। অন্য লিজদাতাদেরও একই অবস্থা।’

দিনমজুর পাপ্পু বলেন, ‘এলাকার সবাই জানে সোহাগ নামের যে ম্যানেজার ছিলেন তিনি আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার নিয়েছেন। আমার মতো আরও ১২ থেকে ১৫ জন সোহাগের কাছে টাকা পাবেন।’

অভিযুক্ত সোহাগের বক্তব্য জানতে তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএ-এসআই প্রাইভেট লিমিটেড অ্যান্ড টিআই জেভির জেনারেল ম্যানেজার খাইরুল হাসান রাব্বি বলেন, একযোগে বেশ কিছু বাঁধের কাজ করা হচ্ছে। বিল পেতে বিলম্ব হওয়ায় আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ কারণে বাঁধের কাজ বন্ধ রয়েছে। দ্রুত বাঁধের কাজ শুরু করা হবে। সোহাগকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর কাছে যাঁরা টাকাপয়সা পাবেন, সেগুলো যাচাই করে পরিশোধ করা হবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আলোচনা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত