Ajker Patrika

কেরানীগঞ্জে কবিরাজকে খুনের পর লাশ গুম, দেবর-ভাবির মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কেরানীগঞ্জে মফিজুর রহমান ওরফে কবিরাজ মফিজ নামে এক ব্যক্তিকে খুনের পর লাশ গুমের দায়ে এক নারী ও এক পুরুষকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। ওই নারী ও পুরুষ সম্পর্কে দেবর-ভাবী। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত দায়রা জজ ইসরাত জাহান মুন্নি এই রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—মাকসুদা আক্তার লাকি ও মো. সালাউদ্দিন। দুজনেই কেরানীগঞ্জের বেউতা হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত।

রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি কারাগার থেকে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।

আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন, প্রত্যেককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। তবে তার আগে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টের অনুমোদন নিতে হবে। আসামিরা ইচ্ছা করলে এই রায়ের বিরুদ্ধে সাত দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি দুপুর ১টার দিকে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ তারানগর ইউনিয়নের বেউতা কবরস্থানের সামনে ডোবা থেকে হাত-পা ও মাথাবিহীন একটি মৃতদেহের কোমর থেকে গলা পর্যন্ত অংশ উদ্ধার করে। দেহটি নাভি থেকে তলপেট ও পিঠের অংশে ধারালো অস্ত্র দ্বারা লম্বালম্বি কাটা ছিল।

তাৎক্ষণিক পরিচয় না পাওয়ায় ঢাকার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের পর কেরানীগঞ্জ থানার এস আই এস এম মেহেদী হাসান হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা তদন্তকালে পুলিশ কেরানীগঞ্জ থানায় মাকসুদা আক্তার লাকীর করা একটি সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে কেরানীগঞ্জের একই এলাকার মফিজুর রহমান ওরফে কবিরাজ মফিজের একটি মোবাইল নম্বর উদ্ধার করে।

ওই মোবাইল নম্বর পর্যালোচনা করে তদন্ত কর্মকর্তা জানতে পারেন, কবিরাজ মফিজের সঙ্গে মাকসুদা লাকীর ঘটনার আগে অনেকবার কথা হয়েছে।

মাকসুদাকে গ্রেপ্তারের পর তিনি স্বীকার করেন, ‘তাঁর স্বামী মালয়েশিয়াপ্রবাসী। সন্তান না হওয়ায় মাকসুদা মফিজ কবিরাজের কাছে চিকিৎসা নিতেন। পরে তাঁর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক সময় স্বামীর কথা চিন্তা করে মাকসুদা সরে আসতে চাইলে কবিরাজ তাঁকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতে থাকে। কবিরাজের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ মাকসুদা দেবরদের সঙ্গে পরামর্শ করে তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করেন। কবিরাজের লাশ উদ্ধারের আগের রাতে মাকসুদা কবিরাজকে তাঁর বাসায় নিয়ে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে পরে তাঁর দুই দেবর নজরুল ইসলাম ও সালাউদ্দিনকে নিয়ে কবিরাজকে খুন করেন। এরপর তাঁর হাত পা মাথা কেটে ডোবার মধ্যে ফেলে দেন।

মামলার তদন্ত শেষে মাকসুদা এবং তাঁর দুই দেবর নজরুল ইসলাম ও সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। পরে ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

মামলার বিচার চলাকালে নজরুল ইসলাম মারা যান। এ কারণে দুইজনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে খান মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম ও আসামি পক্ষে রবিউল ইসলাম ও অন্যান্য আইনজীবীরা মামলা পরিচালনা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে নারীকে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া ‘শিবিরের লোক’ আকাশ চৌধুরীকে ধরছে না পুলিশ

প্রফেসর আনোয়ারা আ.লীগের লোক হলে এত অপমান নিয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হত না: ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময়

বৈষম্যবিরোধীদের মিছিল থেকে জি এম কাদেরের বাড়ি ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে আগুন

ফারুক কেন নিঃসঙ্গ হলেন

পরিচালক পদ বাতিল, বিসিবি সভাপতির পদ থেকে ফারুককে অপসারণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত