Ajker Patrika

‘সৌন্দর্যহানি’: রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্য সরিয়ে বলল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১: ১০
Thumbnail image

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে পেরেকবিদ্ধ ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থ হাতে, আর মুখে ‘টেপ’ লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রাজু ভাস্কর্যের দক্ষিণে সাড়ে ১৯ ফুটের এই প্রতিবাদী ভাস্কর্যটি গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে স্থাপন করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায় সেটি উধাও! 

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানাল, তাঁরা সেটি সরিয়ে ফেলেছেন। যুক্তি হিসেবে বলা হচ্ছে, ভাস্কর্যটি সৌন্দর্য নষ্ট করছে! 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের প্রতীক রাজু ভাস্কর্যের পাশে এ রকম ভাস্কর্য তৈরি করা সমীচীন নয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটি সরিয়ে ফেলেছে।’ 

রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্য উধাও হওয়ার পর ব্যানার টানিয়ে দিয়েছেন আয়োজকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ সকালে রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্যটি না পেয়ে সেখানে ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ’ সংবলিত একটি ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছেন আয়োজকেরা। 

সারা দেশে সেন্সরশিপ চলছে, সাংবাদিকেরা লিখতে পারছে না, লেখক তাঁর বই প্রকাশ করতে পারছেন না, বিরোধী মতের বই প্রকাশ করায় বইমেলায় প্রকাশকদের স্টল বরাদ্দ দিচ্ছে না বাংলা একাডেমি—এরই প্রতিবাদ হিসেবে রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্যটি বসানো হয়। বইমেলা পর্যন্ত এ ভাস্কর্য থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন ভাস্কর্য তৈরির সঙ্গে জড়িত বাম ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একাংশের সভাপতি শিমুল কুম্ভকার। 

রবীন্দ্রনাথ ‘গুম’ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে শিমুল কুম্ভকার বলেন, ‘সকাল থেকে রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্যটি নেই, কারা সরিয়েছে তা জানার চেষ্টা করছি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছি।’ 

বাক স্বাধীনতার হরণের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্য স্থাপন করেছিলেন চারুকলার একদল শিক্ষার্থী। ছবি: আজকের পত্রিকাএ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিশ্ববরেণ্য কবি রবীন্দ্রনাথের এ ভাস্কর্য স্থাপন করে বিশ্ববিদ্যালয় সৌন্দর্য নষ্ট ও নান্দনিক একটি ভাস্কর্যের সৌন্দর্য নষ্ট করা হয়েছে। যে বা যারা বসিয়েছে তারা কাজটি ভালো করেনি, নানা মহলে বিষয়টি সমালোচিত হয়েছে, তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরিয়ে ফেলছে।’ 

যারা ভাস্কর্য বসিয়েছে ভবিষ্যতে তাঁদের এসব বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান অধ্যাপক রব্বানী। 

ভাস্কর্যটি কখন সরানো হয়েছে জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সময় সুযোগ মতো ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত