মাদারীপুর প্রতিনিধি
লিবিয়ার অভিবাসী বন্দিশালায় দালালদের শারীরিক নির্যাতনে মাদারীপুরের দুই তরুণের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই দুই তরুণ অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে লিবিয়ায় অবস্থান করছিলেন। নিহত দুই তরুণের স্বজনেরা লিবিয়া থেকে তাঁদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন।
মৃত দুই তরুণ হলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার মধ্য খাগদী এলাকার আবুল কালাম খানের ছেলে সাব্বির খান (২১) ও বড়াইলবাড়ি এলাকার মো. হাবিবুর রহমান তালুকদারের ছেলে সাকিবুল হাসান ওরফে সুরুজ (২২)।
নিহত তরুণদের স্বজন ও পুলিশের সূত্র জানায়, প্রায় দেড় মাস আগে স্থানীয় দালাল সবুজ মীরের মাধ্যমে ৮ লাখ টাকা চুক্তিতে লিবিয়া হয়ে ইতালির উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন সাকিবুল। চুক্তির অর্ধেক টাকা পরিশোধ হলেও বাকি টাকা ইতালি পৌঁছানোর পর দেওয়ার কথা। তবে লিবিয়াতে পৌঁছানোর পরই বাকি ৪ লাখ টাকার জন্য দালাল চক্র সাকিবুলকে একটি বন্দিশালায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায়। এরপর গত শনিবার রাতে দালালদের নির্যাতনে মারা যান সাকিবুল।
অন্যদিকে সাব্বির খান চরনাছনা এলাকার দালাল কাশেম মোড়লের মাধ্যমে সাড়ে সাত লাখ টাকার চুক্তিতে ছয় মাস আগে লিবিয়া পৌঁছান। এরপরে তাঁকেও লিবিয়ার বন্দিশালায় আটক রাখা হয়। টাকার জন্য তাঁকেও শারীরিক নির্যাতন করে দালালেরা।
আজ সোমবার সকালে সাব্বিরের বাড়ি মধ্য খাগদী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি ভর্তি মানুষ। সবার চোখে পানি। বাড়ির আঙিনায় সাব্বিরের মা, ছোট দুই ভাই, এক বোনসহ স্বজনেরা আহাজারি করছেন। প্রতিবেশী কেউ কেউ তাঁদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পুরো বাড়িতে চলছে মাতম।
আহাজারি করতে করতে সাব্বিরের মা নাজমা বেগম বলেন, ‘রাইতে আমি বাড়ি ছিলাম না। মেলা রাইতে ভাইর বিডি (ভাইয়ের মেয়ে) হঠাৎ ফোন দিছে, ভাবছি মায় মইরা গেছে। বাড়িতে আইসা শুনি আমার পোলা মইরা গেছে। হায় আল্লাহ আমার পোলারে তুমি ফিরাইয়া দাও। আমার পোলা এম্মে মরতে পারে না।’
সাব্বিরের এক চাচি জানান, স্থানীয় দালাল আতিবার, তোতা ও কাশেম ছয় মাস ধরে সাব্বিরকে লিবিয়া নিয়ে আটকে রেখেছে। লবণ ছাড়া শুধু এক বেলা ভাত খেতে দিয়েছে। এত কষ্ট সহ্য করছে, তবু ওরা সাব্বিরকে মেরে ফেলল।
সাব্বিরের খালু মো. ওবায়দুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘সাব্বিরের মাথায় ধারালো কিছু একটা দিয়ে আঘাত করেছে। এ কারণে সাব্বির মারা গেছে। সাব্বিরের সঙ্গে যারা ছিল, ওরা আমাগো ফোনে ভিডিও কলে সব দেখাইছে। সাব্বিরের মৃত্যুর জন্য যে কয়জন দালাল দায়ী, আমরা তাদের উপযুক্ত বিচার চাই।’
সোমবার সকালে সাকিবুল হাসানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো বাড়ি সুনসান। সাকিবুলের মা নেই। বৃদ্ধ বাবাও বয়সের ভারে ন্যুব্জ। ছোট ভাইয়ের মৃত্যুতে চার ভাই শোকাহত। কিন্তু ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর খবর বাবার কানে গেলে সে হয়তো সহ্য করতে পারবেন না। তাই সবাই নীরব।
সাকিবুলের মেজো ভাই আরিফুর রহমান বলেন, ‘ভাইডা বিএ পড়ত। পড়ালেখা বাদ দিয়ে বিদেশে যাওয়ার জন্য পাগল ছিল। তাই আমরা আর আটকায় নাই। দালালের সঙ্গে চুক্তি ছিল, লিবিয়া পর্যন্ত পৌঁছালে অর্ধেক টাকা দিতে হবে। পরে ইতালি পৌঁছে দিতে হবে বাকি টাকা। কিন্তু পৌঁছানোর আগেই এভাবে মারা যাইবে, তা মানতে পারছি না। যারা আমার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী, আমরা তাদের বিচার চাই।’
মাদারীপুরে চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে (অক্টোবর পর্যন্ত) মানব পাচার আইনে ৩০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরপরেও দালালদের দৌরাত্ম্য কমছে না।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘লিবিয়াতে মাদারীপুরের দুজন মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত নিহত তরুণদের পরিবার কোনো সহযোগিতার জন্য আসেনি। এরপরও নিহত ওই দুই পরিবারের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’
মানব পাচার বন্ধে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে এসপি গোলাম মোস্তফা বলেন, ভুক্তভোগীরা পুলিশের কাছে মামলা বা অভিযোগ দিতে তেমন একটা আসে না। আবার যাঁরা ইউরোপে যাচ্ছেন, জেনেশুনেই এই অবৈধ পথে যাচ্ছেন। তাঁরা জানে প্রথমে লিবিয়া হয়ে যাবে। পরে ঝুঁকি নিয়ে সেখান থেকে সাগরে নৌকায় করে ইতালি যাবে।
এসপি আরও বলেন, ‘এখানে সচেতনতা বা প্রচারণা করেও লাভ নেই। কারণ, বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে ইতালি যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যাঁরা ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা বেশির ভাগ ইতালি পৌঁছে ভালো আছেন। দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন। এটা দেখে অন্যরা উৎসাহিত হচ্ছেন। তাই এঁদের ফেরানো যাচ্ছে না।’
লিবিয়ার অভিবাসী বন্দিশালায় দালালদের শারীরিক নির্যাতনে মাদারীপুরের দুই তরুণের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই দুই তরুণ অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে লিবিয়ায় অবস্থান করছিলেন। নিহত দুই তরুণের স্বজনেরা লিবিয়া থেকে তাঁদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন।
মৃত দুই তরুণ হলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার মধ্য খাগদী এলাকার আবুল কালাম খানের ছেলে সাব্বির খান (২১) ও বড়াইলবাড়ি এলাকার মো. হাবিবুর রহমান তালুকদারের ছেলে সাকিবুল হাসান ওরফে সুরুজ (২২)।
নিহত তরুণদের স্বজন ও পুলিশের সূত্র জানায়, প্রায় দেড় মাস আগে স্থানীয় দালাল সবুজ মীরের মাধ্যমে ৮ লাখ টাকা চুক্তিতে লিবিয়া হয়ে ইতালির উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন সাকিবুল। চুক্তির অর্ধেক টাকা পরিশোধ হলেও বাকি টাকা ইতালি পৌঁছানোর পর দেওয়ার কথা। তবে লিবিয়াতে পৌঁছানোর পরই বাকি ৪ লাখ টাকার জন্য দালাল চক্র সাকিবুলকে একটি বন্দিশালায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায়। এরপর গত শনিবার রাতে দালালদের নির্যাতনে মারা যান সাকিবুল।
অন্যদিকে সাব্বির খান চরনাছনা এলাকার দালাল কাশেম মোড়লের মাধ্যমে সাড়ে সাত লাখ টাকার চুক্তিতে ছয় মাস আগে লিবিয়া পৌঁছান। এরপরে তাঁকেও লিবিয়ার বন্দিশালায় আটক রাখা হয়। টাকার জন্য তাঁকেও শারীরিক নির্যাতন করে দালালেরা।
আজ সোমবার সকালে সাব্বিরের বাড়ি মধ্য খাগদী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি ভর্তি মানুষ। সবার চোখে পানি। বাড়ির আঙিনায় সাব্বিরের মা, ছোট দুই ভাই, এক বোনসহ স্বজনেরা আহাজারি করছেন। প্রতিবেশী কেউ কেউ তাঁদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পুরো বাড়িতে চলছে মাতম।
আহাজারি করতে করতে সাব্বিরের মা নাজমা বেগম বলেন, ‘রাইতে আমি বাড়ি ছিলাম না। মেলা রাইতে ভাইর বিডি (ভাইয়ের মেয়ে) হঠাৎ ফোন দিছে, ভাবছি মায় মইরা গেছে। বাড়িতে আইসা শুনি আমার পোলা মইরা গেছে। হায় আল্লাহ আমার পোলারে তুমি ফিরাইয়া দাও। আমার পোলা এম্মে মরতে পারে না।’
সাব্বিরের এক চাচি জানান, স্থানীয় দালাল আতিবার, তোতা ও কাশেম ছয় মাস ধরে সাব্বিরকে লিবিয়া নিয়ে আটকে রেখেছে। লবণ ছাড়া শুধু এক বেলা ভাত খেতে দিয়েছে। এত কষ্ট সহ্য করছে, তবু ওরা সাব্বিরকে মেরে ফেলল।
সাব্বিরের খালু মো. ওবায়দুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘সাব্বিরের মাথায় ধারালো কিছু একটা দিয়ে আঘাত করেছে। এ কারণে সাব্বির মারা গেছে। সাব্বিরের সঙ্গে যারা ছিল, ওরা আমাগো ফোনে ভিডিও কলে সব দেখাইছে। সাব্বিরের মৃত্যুর জন্য যে কয়জন দালাল দায়ী, আমরা তাদের উপযুক্ত বিচার চাই।’
সোমবার সকালে সাকিবুল হাসানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো বাড়ি সুনসান। সাকিবুলের মা নেই। বৃদ্ধ বাবাও বয়সের ভারে ন্যুব্জ। ছোট ভাইয়ের মৃত্যুতে চার ভাই শোকাহত। কিন্তু ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর খবর বাবার কানে গেলে সে হয়তো সহ্য করতে পারবেন না। তাই সবাই নীরব।
সাকিবুলের মেজো ভাই আরিফুর রহমান বলেন, ‘ভাইডা বিএ পড়ত। পড়ালেখা বাদ দিয়ে বিদেশে যাওয়ার জন্য পাগল ছিল। তাই আমরা আর আটকায় নাই। দালালের সঙ্গে চুক্তি ছিল, লিবিয়া পর্যন্ত পৌঁছালে অর্ধেক টাকা দিতে হবে। পরে ইতালি পৌঁছে দিতে হবে বাকি টাকা। কিন্তু পৌঁছানোর আগেই এভাবে মারা যাইবে, তা মানতে পারছি না। যারা আমার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী, আমরা তাদের বিচার চাই।’
মাদারীপুরে চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে (অক্টোবর পর্যন্ত) মানব পাচার আইনে ৩০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরপরেও দালালদের দৌরাত্ম্য কমছে না।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘লিবিয়াতে মাদারীপুরের দুজন মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত নিহত তরুণদের পরিবার কোনো সহযোগিতার জন্য আসেনি। এরপরও নিহত ওই দুই পরিবারের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’
মানব পাচার বন্ধে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে এসপি গোলাম মোস্তফা বলেন, ভুক্তভোগীরা পুলিশের কাছে মামলা বা অভিযোগ দিতে তেমন একটা আসে না। আবার যাঁরা ইউরোপে যাচ্ছেন, জেনেশুনেই এই অবৈধ পথে যাচ্ছেন। তাঁরা জানে প্রথমে লিবিয়া হয়ে যাবে। পরে ঝুঁকি নিয়ে সেখান থেকে সাগরে নৌকায় করে ইতালি যাবে।
এসপি আরও বলেন, ‘এখানে সচেতনতা বা প্রচারণা করেও লাভ নেই। কারণ, বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে ইতালি যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যাঁরা ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা বেশির ভাগ ইতালি পৌঁছে ভালো আছেন। দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন। এটা দেখে অন্যরা উৎসাহিত হচ্ছেন। তাই এঁদের ফেরানো যাচ্ছে না।’
হবিগঞ্জের লাখাইয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় যাত্রী নেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে উপজেলার সিংহ গ্রামের মাইজহাটি ও দাইরল এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে দুই ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে।
২ মিনিট আগেরাজশাহীর মোহনপুরে ভটভটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আবুল বাসার (১৮) নামের এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার চক বেলনা মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল বাসার উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে।
৫ মিনিট আগেসুনামগঞ্জ-পাগলা-জগন্নাথপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের কাটাগাঙ্গ বেইলি সেতুর পাটাতন খুলে যাওয়ায় টানা ১২ ঘণ্টা যানচলাচল বন্ধ ছিল। আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে মেরামত কাজ শেষে পুনরায় যানচলাচল শুরু হয়েছে। এর আগে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঝুঁকিপূর্ণ ওই বেইলি সেতুর পাটাতন খুলে সেতু দিয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়
৬ মিনিট আগেফরিদপুরে পদ্মা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় মাছ ধরার ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই ট্রলারে থাকা দুই জেলে গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের নদীতে ভেসে থাকতে দেখে অন্য জেলেরা উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করেন।
৭ মিনিট আগে