Ajker Patrika

জাবিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হত্যা: বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লা হত্যায় আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের আটজন ও অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের আট শিক্ষার্থী হলেন—শহীদ রফিক জব্বার হলের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক বিভাগের ৪৯ ব্যাচের মো. আহসান লাবীব, আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫ ব্যাচের রাজু আহাম্মদ, শেখ রাসেল হলের ইংরেজি বিভাগের ৫০ ব্যাচের মো. মাহউদুল হাসান রায়হান, শহীদ রফিক জব্বার হলের ইতিহাস বিভাগের ৪৪ ব্যাচের জুবায়ের আহমেদ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ইংরেজি বিভাগের ৪৯ ব্যাচের হামিদুল্লাহ সালমান, একই হলের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৪৯ ব্যাচের মো. আতিকুজ্জামান, মাওলানা ভাসানী হলের সিএসই বিভাগের ৪৭ ব্যাচের সোহাগ মিয়া, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ হলের ৪৬ ব্যাচের সরকার ও রাজনৈতিক বিভাগের মোহাম্মদ রাজন মিয়া। 
 

অভিযোগে বলা হয়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর আনুমানিক সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষের ৩৯-তম ব্যাচের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শামীম মোল্লা প্রান্তিক গেটে এলে কতিপয় ব্যক্তি তাঁকে মারধর করতে থাকে। এমন খবর জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। প্রক্টর অফিসের একটি কক্ষে তাঁকে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও আশুলিয়া থানা-পুলিশকে অবহিত করেন প্রক্টর এবং পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার জন্য দ্রুত পুলিশ টিমকে প্রক্টর অফিসে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন। এই সময়ের মধ্যে কতিপয় ব্যক্তি প্রক্টরিয়াল টিমকে না জানিয়ে জোরপূর্বক শামীম মোল্লাকে প্রক্টর অফিসের পাশে অবস্থিত নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ প্রক্টর ঘটনাটি জানতে পেরে নিরাপত্তা অফিসে গিয়ে বিক্ষুব্ধদের সরিয়ে দেন এবং নিরাপত্তা অফিসের কলাপসিবল গেট তালাবদ্ধ করে দেন। 

কয়েক দফা মারধর করা হয় শামীমকে। ফাইল ছবিঅভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, এ সময় প্রক্টর পুলিশের টিমকে আসতে অনুরোধের জন্য কলাপসিবল গেটের সামনে দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীদের পাহারায় রেখে নিজ অফিসে ফিরে আসেন এবং পুনরায় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং উপস্থিত সংবাদ প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। এর মধ্যে আবারও কতিপয় ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে নিরাপত্তা অফিসের কলাপসিবল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে শামীম মোল্লাকে মারধর করেন। 

এ সময় প্রক্টরের নেতৃত্বাধীন প্রক্টরিয়াল টিম ও নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তাগণ নিজেরা ঢালস্বরূপ শামীম মোল্লার সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের নিবৃত্ত করেন। রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার সময় পুলিশের টিম প্রক্টর অফিসে আসে। দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার খোঁজ-খবর নিয়ে জানান, শামীম মোল্লার নামে থানায় পূর্বের একাধিক মামলা (ছিনতাই, অস্ত্র, মাদক) রয়েছে। রাত আনুমানিক ৮টার সময় প্রক্টরিয়াল টিম ও নিরাপত্তা শাখা আবারও ঢালস্বরূপ শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয়। আশুলিয়া থানায় শামীম মোল্লাকে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা শামীম মোল্লাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

উল্লেখিতসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০ / ২৫ জন ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়ায় অভিযোগ দায়ের করতে বিলম্ব হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত