Ajker Patrika

শ্রীপুরে চায়না দুয়ারি জালে মাছ শিকার, হুমকির মুখে জলজ প্রাণী 

আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৩, ২০: ১৭
শ্রীপুরে চায়না দুয়ারি জালে মাছ শিকার, হুমকির মুখে জলজ প্রাণী 

গাজীপুরের শ্রীপুরে নদ-নদী, খাল-বিলসহ ডোবায় মাছ শিকারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে চায়না দুয়ারি জাল। মাছের বংশবিস্তারে এই জাল হুমকি হওয়ায় ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেন না শিকারিরা। নিত্যদিনই এই জাল ফেলে করেছেন মাছ শিকার। স্থানীয়দের অভিযোগ নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরায় কমেছে প্রজনন। চায়না দুয়ারি বন্ধে উদ্যোগ নেই উপজেলা মৎস্য বিভাগের। 

উপজেলার শীতলক্ষ্যা, সুতিয়া, খিরু ও মাটিকাটা নদীতে গিয়ে দেখা যায়, বিকেল হলেই দল বেঁধে স্থানীয় জেলেরা চায়না দুয়ারি জাল নিয়ে নদীর তলদেশে বসাতে শুরু করেন। 

স্থানীয়রা জানান, জেলেরা বিকেল হলেই দল বেঁধে ডিঙি নৌকায় চায়না দুয়ারি জাল নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। তীরে বাঁশের খুঁটি পুঁতে একপাশ বেঁধে মাঝনদীর তলদেশ পর্যন্ত চায়না দুয়ারি বসিয়ে দেয়। নদীর দুই পাশে চলাচলকারী মাছসহ জলজ প্রাণী এই জালের ভেতরে প্রবেশের পর আর বের হওয়ার কোনো পথ থাকে না। ফলে জালে মাছসহ জলজ প্রাণীও আটকা পড়ে। এ সময় মাছগুলো সংগ্রহ করে সব ধরনের জলজ প্রাণী শুকনো স্থানে ফেলে রাখছে। এতে জলজ প্রাণীও মারা যাচ্ছে। 

কাওরাইদ সুতিয়া নদীর তীরে কথা হয় রমিজ উদ্দিন নামে এক জেলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে দূষণের কারণে নদ-নদীতে মাছ আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। এ ছাড়া আগের মতো তেমন পানি হয় না নদীতে। আগে নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকার করতাম। তখন প্রচুর পরিমাণ মাছ পাওয়া যেত। এখন নদীতে কারেন্ট জালসহ অনন্য জাল দিয়ে তেমন মাছ পাওয়া যায় না। বেশি মাছের আশায় চায়না দুয়ারি দিয়ে মাছ শিকার করছি।’ 

নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের জেলে রাখাল বর্মন বলেন, চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে মাছ শিকারে কষ্ট কম। বিকেলে একবার ফেলার পর সকালে ওঠাতে হয়। এখন আর তেমন কেউ অন্য জাল ফেলে মাছ শিকার করে না। চায়না দুয়ারি দিয়ে একটু বেশি মাছ পাওয়া যায়। 

রাখাল বর্মন আরও বলেন, ‘এই জালগুলো আমাদের অঞ্চলের হাটবাজারে সচরাচর পাওয়া যায় না। পাশের নরসিংদী জেলার বিভিন্ন বাজার থেকে কিনে আনতে হয়। একটি জাল ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হয়।’ 

পাইটালবাড়ি এলাকার জেলে কৃষ্ণ বর্মন বলেন, ‘এ নিষিদ্ধ এটা জানি। কী করব তবুও মাছ শিকারে এ জাল ব্যবহার করছি। প্রশাসনের কেউ কোনো দিন আসেনি নদীর তীরে। প্রায় প্রতিদিন একটি চায়না দুয়ারি থেকে যে পরিমাণ মাছ পাওয়া যাচ্ছে স্থানীয় বাজারে ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। ছোট মাছ ছেড়ে দিয়ে কি হবে সবই বিক্রি করা যায়। তাই যেকোনো মাছের পোনা ছেড়ে দেয় না।’ 

গাজীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কায়সার মুহাম্মদ মঈনুল হাসান বলেন, ‘প্রতিনিয়ত আমরা নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছি। শ্রীপুরের নদ-নদীগুলোতে অভিযান চালানোর জন্য উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আশা করি দ্রুত অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি নির্মূল করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত