Ajker Patrika

দেশের প্রচলিত আইনে শ্রমিকেরা পুঁজিপতিদের ক্রীতদাসে পরিণত হয়েছে: যুব বাঙালি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মহান মে দিবস উপলক্ষে ১ মে (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর পরিবাগ ডিসিসি সুপার মার্কেট প্রাঙ্গনে যুব বাঙালি আয়োজিত ‘মহান মে দিবসে ‘শ্রম-কর্ম-পেশাজীবীদের ক্ষমতায়নে অংশীদারিত্বের গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
মহান মে দিবস উপলক্ষে ১ মে (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর পরিবাগ ডিসিসি সুপার মার্কেট প্রাঙ্গনে যুব বাঙালি আয়োজিত ‘মহান মে দিবসে ‘শ্রম-কর্ম-পেশাজীবীদের ক্ষমতায়নে অংশীদারিত্বের গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

শ্রম দেওয়া ছাড়া উৎপাদন প্রক্রিয়ায় শ্রমিকের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা বাংলাদেশের আইনে নেই। এ কারণে প্রচলিত আইনে শ্রমিকেরা মালিকের বা পুঁজিপতিদের ক্রীতদাসে পরিণত হয়ে আছে। মহান মে দিবস উপলক্ষে ১ মে (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর পরিবাগ ডিসিসি সুপার মার্কেট প্রাঙ্গনে যুব বাঙালি আয়োজিত ‘মহান মে দিবসে ‘শ্রম-কর্ম-পেশাজীবীদের ক্ষমতায়নে অংশীদারিত্বের গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক শরীফুল ইসলাম হৃদয় স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সংগঠনের সভাপতি রায়হান তানভীরের সভাপতিত্বে ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী পারভেজের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য তাসমিনা রানা, ফিলিস্তিন ফেরত মুক্তিযোদ্ধা সমিতির সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু, নব্বইয়ের গণআন্দোলনের ছাত্র নেতা শরীফ মোহাম্মদ খান, সংগঠনের উপদেষ্টা কামরুজ্জামান অপু, অয়ন আমান, কাজী তানসেন, ছাত্রলীগের (জেএসডি) সভাপতি তৌফিক উজ জামান পীরাচা, প্রচার সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান, যুব বাঙালির দপ্তর সম্পাদক শরীফুল ইসলাম হৃদয়, সংগঠক তোফাজ্জল হোসেন, সাগর খালাসি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সশস্ত্র যুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শ্রম-কর্ম-পেশাজীবীদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে বলে জানান বক্তারা। তারা বলেন, তারই পথ পরিক্রমায় স্বাধীন বাংলাদেশে শ্রম-কর্ম-পেশাজীবীদের ‘অধিকার’ থাকলেও তারা ‘ক্ষমতা’ ও ‘কর্তৃত্বহীন’।  শ্রম-কর্ম-পেশার জনগণ ট্রেড ইউনিয়নের মাধ্যমে শুধু মাত্র বেতন ভাতা ও ছুটির জন্য দাবি উত্থাপন করা ছাড়া আর কোনো অধিকার রাখে না। পরাধীন আমলের কারখানা ও শ্রমিক অধিকার আইন এ যাবৎ স্বাধীন বাংলাদেশে বহাল থাকায় মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক রয়ে গেছে ঔপনিবেশিক আমলের প্রভু-দাসের মতোই।

সমাজ পরিচালনা, উৎপাদন-বন্টন ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রীয়-কাঠামোয় শ্রম-কর্ম-পেশাজীবীদের আইনগত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করাই মহান মে দিবসের অঙ্গীকার হওয়া জরুরী বলে মনে করেন বক্তারা।

তারা বলেন,  উৎপাদন বন্টনে শ্রমিকের শ্রম দেয়া ছাড়া আর কোনো অংশগ্রহণ বা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় শ্রমিকের কোন ধরনের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থার জন্য আমাদের দেশে আইন নেই। এভাবে দেশের প্রচলিত আইনে শ্রমিকরা মালিকের বা পুঁজিপতিদের ক্রীতদাসে পরিণত হয়ে আছে। ফলে দেশে বার বার শ্রমিক অসন্তোষসহ নানা ধরণের সামাজিক ও রাজনৈতিক সঙ্কট দেখা দেয়। এই সঙ্কট নিরসনে মালিক-শ্রমিকের প্রাতিষ্ঠানিক ঐক্য প্রয়োজন। সেই প্রাতিষ্ঠানিক ঐক্যের জন্য কারখানা পরিচালনায় ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় শ্রম-কর্ম-পেশাজীবীদের আইনগত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

বক্তরা বলেন, কারখানা পরিচালনায় শ্রমিকের প্রতিনিধি থাকলে একদিকে যেমন তাদের বেতন-ভাতা, কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে অন্যদিকে মালিকের মুনাফা অর্জনের দিকটিও সুনিশ্চিত হবে। রাষ্ট্রীয় কাঠামো, শাসনব্যবস্থা ও শ্রম আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে এই প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

বিদ্যমান ব্রিটিশ-পাকিস্তানি রাষ্ট্র কাঠামো ও শাসনব্যবস্থা শ্রম-কর্ম-পেশাজীবী মানুষের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির অন্তরায় বলে মনে করেন বক্তরা। তারা বলেন, উৎপাদন-বন্টন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনায় শ্রম-কর্ম-পেশাজীবীদের আইনী প্রতিনিধিত্বই পারে সকল জনগণের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির পথ প্রসারিত করতে। তাই উৎপাদন-বন্টন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনায় শ্রম-কর্ম-পেশাজীবীদের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠাই হোক মহান মে দিবসের অঙ্গীকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত