Ajker Patrika

অটোমেশন প্রক্রিয়া চালুর দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান

জাবি প্রতিনিধি 
অটোমেশন প্রক্রিয়া চালুর দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা
অটোমেশন প্রক্রিয়া চালুর দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, রেজিস্ট্রার অফিস ও পরিবহন অফিসের যাবতীয় কার্যক্রমে অটোমেশন প্রক্রিয়া চালুর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নেন।

এতে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলন ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহণ করেন। বেলা ২টা ৩০ মিনিটে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসে পরীক্ষার ফরম পূরণ, ফলাফল প্রকাশ করা এবং সব ফি অনলাইনে গ্রহণ করে পরীক্ষার সময়সূচি, প্রবেশপত্র ও সাময়িক সনদপত্র অনলাইনে প্রদান করতে হবে; রেজিস্ট্রার অফিসে সব শিক্ষার্থীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ডেটাবেজ তৈরি করে প্রয়োজনীয় তথ্যের প্রবেশাধিকার দিতে হবে; কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের বই ও জার্নালের অনলাইন প্রবেশাধিকার প্রদান করতে হবে এবং গ্রন্থাগারের যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনভিত্তিক করতে হবে; পরিবহন অফিসে বাস ও পরিবহন–সংক্রান্ত সব দরকারি তথ্য অনলাইনে সহজলভ্য করতে হবে এবং অটোমেটেড বাস ট্রাকিং সিস্টেম চালু করতে হবে।

অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সেখানে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সদস্যসচিব তৌহিদ সিয়াম। সমাবেশে বক্তারা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে অটোমেশনের রোডম্যাপ প্রকাশ না করা হলে কাঠোরতর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

অটোমেশন প্রক্রিয়া চালুর দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাবির শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অটোমেশন প্রক্রিয়া চালুর দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাবির শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ফারহানা বিনতে জিগার ফারিনা বলেন, ‘কোনো চূড়ান্ত পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে হলে প্রথমে হল অফিসে যেতে হয়, তারপর বিভাগীয় প্রধানের কাছে, তারপর আবার হল অফিসে, তারপর ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া, তারপর রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের শিক্ষা শাখায়, তারপর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে গিয়ে ফরম জমা দিতে হয়। এতগুলো জায়গায় আমাদের ঘুরতে হয়। এই প্রশাসনের উচিত ছিল দায়িত্বে আসার পরেই সমস্যাগুলো সমাধানের কাজ শুরু করা। কিন্তু আমারা দেখতে পাই, এই বিষয়গুলো নিয়ে না তারা কোনো প্রক্রিয়া শুরু করেছে না। প্রশাসন এমন কোন কাজে ব্যস্ত যে অটোমেশন চালুর জন্য কোনো কাজ শুরু করত পারছে না?’

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, ‘শিক্ষা সনদে বা পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কাগজে কোনো নামের বানান ভুল হলে বা কোনো সনদ তুলতে গেলে বা পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে গেলে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয় এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে দৌড়াতে হয়। এর ওপর টাকাও গুনতে হয়। এত সব ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের।’

মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, ‘ভুল করবেন তাঁরা, ভোগান্তি পোহাতে হবে আমাদের। অফিসে ঘুমাবেন তাঁরা, ভোগান্তি হবে আমাদের। দুপুরের খাবার খাবেন তাঁরা, ভোগান্তি আমাদের। এসব ভোগান্তি নিরসন করতে চাইলে অটোমেশন ছাড়া কোনো রাস্তা নাই। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে গ্রন্থাগার কার্ড নেওয়ার জন্য ভোগান্তি সহ্য করতে হয়। গ্রন্থাগারে কোন বইগুলো কোথায় আছে তা–ও জানেন না শিক্ষার্থীরা। প্রয়োজনের সময় প্রয়োজনীয় বই খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয় আমাদের। এ জন্য দরকার অটোমেশন। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে অবশ্যই অটোমেশন চালু করতে হবে। মান্ধাতার আমলে পড়ে থাকার কোনো মানে হয় না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আজকের এই কর্মসূচির সঙ্গে আমরা সংহতি জানাচ্ছি।’

জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলনের মুখপাত্র নাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্টের ধারাবাহিকতায় আমাদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও নতুন প্রশাসন এসেছে। আমরা ধারণা করেছিলাম, এই নতুন প্রশাসন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কাঠামোকে ডিজিটালাইজেশনের মধ্যে নিয়ে আসবে, কিন্তু আমরা দেখতে পাই প্রায় ৬ মাস পার হয়ে গেলেও আগের থেকে দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন দেখি নাই।’

নাজিবুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমাদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীদের একটি প্রাণের দাবি ছিল যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আমাদের যেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস আর রেজিস্ট্রার ভবনে দৌড়াদৌড়ি করে আমাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করতে না হয়। কিন্তু এই জায়গাগুলোতে এখনো কোনো পরিবর্তন আসেনি। আমরা আশা রাখব, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করবেন।’

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান আহসান বলেন, ‘আমরা অটোমেশন নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি। আজকে অটোমেশন নিয়ে মিটিং চলছে। কয়েকজন শিক্ষকের ওপর অটোমেশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ করছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যাপ্ত টাকা নেই। হিট নামক একটি প্রজেক্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও অটোমেশন নিয়ে কাজ করে। ওই প্রজেক্টটি পেলে আমরা কাজ শুরু করতে পারি। আর অটোমেশন নিয়ে যারা মিটিং করছে তাদের মিটিং শেষ হলে রোডম্যাপ ঘোষণার বিষয়ে কথা বলতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ওপর হামলাকারীরা সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে কি না—তা শতভাগ নিশ্চিত নয় বিজিবি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা

বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি বর্ষণকারী ব্যক্তিরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়েছে কি না—তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

সোমবার ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর বিজিবি ক্যাম্পে তিনি আরও জানান, শুক্রবার ৯টার মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সম্ভাব্য পাচারের রুটগুলো চিহ্নিত করে টহল এবং চেকপোস্ট বসানো হয় সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে। পরদিন অর্থাৎ শনিবারে পুলিশ এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। ঢাকা থেকে আগত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডারের নিয়মিত যোগাযোগ এবং অপারেশন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আলোচনায় দুটি স্থানে একসঙ্গে অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অবস্থানরত ফিলিপ স্নালকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশের আরেকটি টিম হালুয়াঘাট এলাকায় অপারেশনের প্ল্যান করে। হালুয়াঘাটে অপারেশনের বিষয়ে বিজিবির সোর্স এবং অন্যান্য বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করেছে। অপর দিকে নালিতাবাড়ীর বারোমারি এলাকায় অপারেশন পরিচালিত হয় বিজিবির নেতৃত্বে এবং ঢাকা হতে আগত ও হালুয়াঘাট থানার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে। কিন্তু ফিলিপকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি এবং মানব পাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।’

তাঁদের পরিবারের তিনজনসহ এ পর্যন্ত বিজিবি চারজনকে আটক করেছে। এঁদের মধ্যে সোমবার সকালে মানব পাচারকারী বেঞ্জামিন চিরামকে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরগুনায় স্বামীকে গলা টিপে হত্যা, স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক আটক

বরগুনা প্রতিনিধি
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার বামনা উপজেলায় পরকীয়া প্রেমের জেরে এক প্রবাসফেরত স্বামীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আব্দুল জলিল (৪৫)। তিনি উপজেলার রামনা ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫) ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিক আলামিনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আব্দুল জলিলের নিজ বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর ধরে একই এলাকার আবু খতিবের ছেলে আলামিন নিহতের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নাজমা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় ১৫ দিন আগে প্রবাস থেকে বাড়িতে ফিরে স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন আব্দুল জলিল।

অভিযোগ রয়েছে, রোববার বিকেলে স্ত্রী ও ওই গৃহকর্মী মিলে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জলিলকে গলা টিপে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে বামনা থানায় নিয়ে যায়। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা দুজনই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মহান বিজয় দিবসে মেট্রোরেল সাময়িক বন্ধ থাকবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় প্যারাজাম্প অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে প্যারাট্রুপারদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিএমটিসিএল ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর দুপুর ১১টা ৫০ মিনিট হতে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ মোট ৪০ মিনিটের জন্য মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

ডিএমটিসিএল সাময়িক অসুবিধার জন্য যাত্রীসাধারণের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। যাত্রীদের এই সময়সূচি মেনে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয়মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত

বাসায় আটকে রেখে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গত ২৯ নভেম্বর ডেমরা থানার উপপরিদর্শক এসআই মুরাদ হোসেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলামনি আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে। পরে এ সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

নোবেলের আইনজীবী মোসতাক আহমেদ জানান, এই ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করেছেন নোবেল। তাঁরা সংসার করছেন।

গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ইডেন কলেজের ওই ছাত্রী। নোবেলকে গ্রেপ্তার করার পর কারাগারে পাঠানো হলে বিয়ের শর্তে তিনি জামিন পান। ১৯ জুন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নোবেল ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন।

এই মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় নোবেলের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল তাঁর স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ছাত্রীকে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আটকে রাখেন, মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেন। এরপর ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। কথামতো না চললে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান।

অভিযোগে বলা হয়, ওই তরুণীকে ছয় মাস ধরে ডেমরার ওই বাসায় আটকে রাখা হয়, মারধর করা হতো প্রায়ই। দু-তিন জনের সহায়তায় বাদীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন নোবেল। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়ালে বাদীর বাবা-মা তাঁকে চিনতে পারেন। এরপর পরিবার পুলিশের সহায়তায় তাঁকে ১৯ মে উদ্ধার করে এবং পুলিশ নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নোবেল বাদীকে আটক রেখে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। বাসায় না থাকলে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নোবেল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে তাঁকে মারপিট করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, বাদীর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি নোবেল জামিনে আছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে আরও বলেছেন, বাদীকে মারধর ও ধর্ষণে আসামিকে আরও কয়েকজন সহযোগিতা করেছেন। তবে তাঁদের নাম-ঠিকানা উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে তাঁদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা সম্ভব হলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

এখন কী হবে:

নোবেলের আইনজীবী বলেছেন, নোবেল মামলার বাদীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। তাই এই অভিযোগপত্রে নোবেলের কোনো সমস্যা হবে না। বিচারিক ট্রাইব্যুনালে বাদী আপসনামা দেওয়ার পর মামলা নিষ্পত্তি হবে। খালাস পাবেন নোবেল।

উল্লেখ্য, ভারতের সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা’ দিয়ে পরিচিতি পান এই গায়ক। এর আগে মাদকে আসক্ত হয়ে সংগীত ছেড়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও শ্রোতাদের সামনে হাজির হন। সেবার নোবেল জানিয়েছিলেন, তিনি আর কখনো দর্শকদের হতাশ করবেন না। সব অতীত পেছনে ফেলে নিয়মিত গান উপহার দেবেন।

কিন্তু ২০২৩ সালে অগ্রিম টাকা নিয়ে গান গাইতে না যাওয়ায় প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জানা যায়, ওই বছর ১৬ মে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬-এর অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা অগ্রিম নেওয়ার প্রতারণায় অভিযোগে আটক হয়েছিলেন। সে সময় একদিন রিমান্ডেও ছিলেন এই গায়ক। পরে আপসের মাধ্যমে ওই মামলা থেকে অব্যাহতিও পান নোবেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত