Ajker Patrika

চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড পেলেন সুবর্ণচরের সেই নির্যাতিতা

অর্চি হক, ঢাকা
চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড পেলেন সুবর্ণচরের সেই নির্যাতিতা

প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক গাঁয়ের বধূ তিনি। কিন্তু আর দশটা পল্লিবধূর মতো ঘরের কোণে মুখ লুকিয়ে চুপচাপ বসে থাকতেন না কখনোই। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেন সব সময়। আর এই অপরাধেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের সামনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হতে হয় তাঁকে। অনেকেরই হয়তো মনে পড়ে যাবে, নোয়াখালীর সুবর্ণচরের ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের ঘটনাটা। সেই নির্যাতিতার হাতেই আজ শনিবার উঠল ‘চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড’। আমরাই পারি জোট আয়োজিত নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতীয় সম্মেলনে তাঁর হাতে এই সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। 

আজকের পত্রিকাকে এই নির্যাতিতা বলেন, ‘পদক পেয়ে ভালো লাগছে। এটা তো একটা সাহস।’ 

সম্মেলনে যোগ দিতে নোয়াখালী থেকে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। কিন্তু সম্মেলনে যোগ দেওয়া অন্যদের মতো ঘুরে ফিরে সময় কাটাবার ফুরসত ছিল না তাঁর। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে নিজ গ্রামের পথে রওনা হতে হয়। সাহসী এই নারী জানান, কাল (রোববার) মামলার তারিখ আছে। নোয়াখালী আদালতে হাজির হতে হবে তাঁকে। তাই সময় নষ্ট করার অবকাশ নেই। 

সুবর্ণচরের এই নির্যাতিতাকে সহায়তা দিচ্ছে আমরাই পারি জোট। আমরাই পারির প্রধান নির্বাহী জিনাত আরা হক জানান, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের ঘটনাটার পর শুরুতে প্রচার করা হয়েছিল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে ওই নারীর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। কিন্তু পরবর্তীতে বিশদভাবে পর্যবেক্ষণের পর দেখা যায়, ভোট দেওয়া নয়, বরং ওই নারী অন্যায়ের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ থাকার কারণেই তাঁকে লক্ষ্য বানানো হয়েছিল। 

জিনাত আরা হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোট দেওয়ার জন্য গণধর্ষণ করা হয়েছে, এটা ভুল। তিনি সব সময় সোচ্চার থাকতেন বলেই তাঁকে ওই নৃশংসতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল।’ 

 ২০১৮ সালের ওই ঘটনার পর কেটে গেছে তিন বছর। কিন্তু এখনো লড়াই করে যেতে হচ্ছে সুবর্ণচরের নির্যাতিতাকে। মামলা তুলে নিতে এখনো পান হুমকি। তাঁকে নিয়ে হাসি ঠাট্টাও করে এলাকাবাসী। কিন্তু তারপরও দমে যাওয়ার পাত্রী নন তিনি। জানালেন, অপরাধীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি লড়ে যাবেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত