Ajker Patrika

রাজবাড়ীতে ৬৭ গ্রামের মানুষ পানিবন্দী

প্রতিনিধি, রাজবাড়ী
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬: ৩৪
রাজবাড়ীতে ৬৭ গ্রামের মানুষ পানিবন্দী

রাজবাড়ীতে গত কয়েক দিন ধরে ফের বাড়তে শুরু করেছে পদ্মার পানি। যেকারণে পদ্মা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল আবারও পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে জেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৬৭টি গ্রামের সাড়ে সাত হাজার পরিবারের ত্রিশ হাজার মানুষ। জেলার তিনটি পয়েন্টেই পানি এখন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

সরেজমিন রাজবাড়ী সদরের বরাট ও গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। প্রতিদিন বেড়েই চলেছে পদ্মার পানি। এক একটি বাড়ি যেন এক একটি দ্বীপ। কারও ঘরে মধ্যে কারও বাড়ির চারপাশে পানি। পথ ঘাট তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ইরি খেত, সবজি খেত। ভেঙে পরেছে শৌচাগার ব‍্যবস্থা। টিউবওয়েল গুলো অর্ধেক তলিয়ে আছে পানিতে। রান্না ঘরে পানি প্রবেশ করায় অনেকেই রান্নার কাজ করছে ঘরের চৌকির ওপর। ফলে ওই সব এলাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে গৃহপালিত পশু নিয়েও রয়েছে বিপাকে। ওই সব এলাকায় যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এখন নৌকা। সেটাই অপ্রতুল। 

বরাট ইউনিয়নের অন্তর মোড় এলাকার সুফিয়া বেগম জানান, পানিতে খালি কষ্ট নাকিরে বেটা। একটা গরু আছে তাও পানির মধ্যে আছে। রাস্তায় একটা ছাপড়া করব তাও পারতিছি না । টিন লাগে, বাঁশ লাগে, টাকা নাই। পানির ভেতর যাওয়া আসা খুবই কষ্ট। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা কোনো  খোঁজ নেয় না। আজ পর্যন্ত কেউ আসে নাই, কোনো  খবর নেয় নাই। চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে গেলে বলে আসে নাই, পাই নাই। 

দেবগ্রাম ইউনিয়নের চরবরাট এলাকার বাচ্চু শেখ জানায়, সবজি, ধান খেত তলিয়ে গেছে। ঘরের মধ্যে পানি। মাঝে মধ্যেই বিছানায় সাপ উঠে থাকে। ভয়ে থাকি বাড়িতে শিশু বাচ্চা আছে। নিজেরা দুইবেলা খেতে পারলেও গরু ছাগল নিয়ে আছি মহাবিপদে। চেয়ারম্যান-মেম্বার কেউ আসে নাই। 

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড এর তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ওপরে, পাংশার সেনগ্রাম পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার এবং সদরের মাহেন্দ্রপুর পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

রাজবাড়ী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুল হক জানান, জেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৬৭টি গ্রামের ৭ হাজার ৫১৫টি পরিবারের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ছয় হাজার পরিবারকে চাল ও শুকনা খাবার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত