Ajker Patrika

ছেলে হত্যার ঘটনায় বাবার মামলা-বাণিজ্যের অভিযোগ

  • হত্যাকাণ্ডের পরদিন দুজনের নামে মামলা করেন নিহতের বাবা
  • দ্বিতীয় দফায় ওই মামলায় আরও ২৮ জনকে আসামি করা হয়
  • আসামিদের কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ বাদীর বিরুদ্ধে
সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ
তৌহিদুল ইসলাম জিসান
তৌহিদুল ইসলাম জিসান

গত বছরের ৩০ জুলাই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মাছুমাবাদ এলাকায় ছুরিকাঘাতে খুন হন তৌহিদুল ইসলাম জিসান (২২)। তিনি ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক। হত্যাকাণ্ডের পরদিন তাঁর বাবা আলমগীর মোল্লা বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় জিসানের বন্ধু নাঈম ও তাঁর বাবা কামালের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও তিন-চারজনকে। তবে গত ৫ আগস্টের পর আদালতে ফের সিআর মামলা করার চেষ্টা করেন জিসানের বাবা আলমগীর। সেখানে প্রথম মামলায় থাকা দুই আসামিসহ আরও ২৮ জনকে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয়।

এদিকে, মামলায় নতুন নাম সংযুক্তির পরপরই উপজেলার মাছুমাবাদ ও মিঠাব গ্রামজুড়ে সৃষ্টি হয় অস্থিরতা। অভিযোগ রয়েছে, নতুন করে আসামির তালিকায় নাম দেওয়া ২৮ জনের অধিকাংশই বাদীর ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার। বিএনপি, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতি করা ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে।

নতুন করে মামলার আসামি হয়েছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁদের একজন তাজুল ইসলাম, যিনি মামলার ১৮ নম্বর আসামি। তাজুল ভুলতা ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘যে ছেলে বাড়ির কাছে মারামারি করে মারা যায়, সেই মামলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় কীভাবে রূপ দেওয়া হয়? তা ছাড়া মামলার বাদী আলমগীর নিজেও আওয়ামী লীগ করতেন। এখন তিনি মামলায় গ্রামের মানুষকে আসামি করে সবার থেকে ৩০ লাখ টাকা দাবি করেছেন।’

জিসানকে ছুরিকাঘাত করার পর গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর বন্ধু মাহিদ ইসলাম অংকন ও রাব্বী। অংকন নিজেও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। প্রথম করা মামলায় ১ নম্বর সাক্ষী ছিলেন তিনি। কিন্তু নতুন মামলায় তাঁকে করা হয়েছে ৩ নম্বর আসামি। অংকন বলেন, ‘৫ আগস্টের পর জিসানের বাবা এলাকায় চাঁদাবাজি শুরু করেন। আমাকে ডেকেছিলেন তাঁর সঙ্গে থাকতে; কিন্তু তাঁর কাজ দেখে আর যাইনি। এ জন্য মামলায় আমার নামেও দেন।’

ঘটনার পরদিন করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, পূর্বশত্রুতার জেরে জিসানের ওপর অতর্কিতে হামলা করে ছুরিকাঘাত করে হামলাকারীরা। তবে নতুন মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পর ৬ নম্বর আসামির (গোলাম দস্তগীর গাজীর) নির্দেশে মামলার প্রথম নয়জন আসামি জিসানকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করার পর হত্যা করে।

অভিযোগ অস্বীকার করে আলমগীর মোল্লা বলেন, ‘আমার ছেলে জিসান থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিল। একই পদে যেতে চাইত অংকন। জিসানকে মাইনাস করতে পরিকল্পনা করে ডেকে নিয়ে আওয়ামী লীগের লোকজনের হাতে তুলে দেয় সে।’

বিএনপির নেতা-কর্মীদের আসামি করা ও চাঁদা দাবির বিষয়ে আলমগীর বলেন, ‘যাঁরা বিএনপির নেতা-কর্মী বলে দাবি করছেন, তাঁরা বিএনপি করেন না। আর টাকা দাবি করলে তো আগেই করতে পারতাম।’

রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, ‘বাদীর চাঁদা দাবির বিষয়ে এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি।’

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তকারী কর্মকর্তা (পরিদর্শক) হাবিব বাহার বলেন, ‘বাদী যদি আসামিদের কাছে টাকা চান, সেটা তো আমার নলেজের বাইরে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

সৈয়দ জামিলের অভিযোগের জবাবে যা লিখলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা

বগুড়ায় ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত