Ajker Patrika

বুড়িগঙ্গা দূষণের বড় কারণ শ্যামপুরের ডাইং কারখানাগুলো: ওয়াটারকিপার্স

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

রাজধানী শ্যামপুরে ডাইং দূষণ বন্ধ না হলে বুড়িগঙ্গা নদীর পারে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল। তিনি বলেন, ‘ডাইংয়ের কারণে যে রাসায়নিক দূষণ, এটা যদি আমরা বন্ধ না করি, তাহলে আমরা নদী বাঁচাতে পারব না। এতে নদীর পারের মানুষের জীবনে মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে।’ 

আজ মঙ্গলবার শ্যামপুরের ফায়ার সার্ভিস ঘাটে ‘ডাইং শিল্পের নির্গত বর্জ্যের মাধ্যমে বুড়িগঙ্গা দূষণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে শরীফ জামিল এ কথা বলেন। এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ। এ সময় নৌকায় করে বুড়িগঙ্গায় ডাইংয়ের দূষণ এলাকাগুলো গণমাধ্যমকর্মীদের দেখানো হয়। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগে বুড়িগঙ্গা দূষণের জন্য ৭০ শতাংশ দায়ী ছিল হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প ও শ্যামপুরের ডাইং কারখানা। ট্যানারি শিল্প হেমায়েতপুর নেওয়ার পর তারা উজানে দূষণ করছে। আর বুড়িগঙ্গায় এখন বড় দূষণ ঘটাচ্ছে শ্যামপুর। এখানে প্রায় ১০০টি ডাইং কারখানা রয়েছে। তবে সরকারি তালিকাতে রয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টি। যারা এক কিলোমিটার দূর থেকে পাইপ লাগিয়ে বুড়িগঙ্গায় ময়লা পানি ফেলে। শ্যামপুরের রাসায়নিক দূষণ মানুষের স্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই দূষণের সংস্পর্শে এসে অনেকে মরণব্যাধি ক্যানসারসহ দুরারোগ্য রোগে ভুগছেন। নদীতে জলজ প্রাণী নেই বললেই চলে। কারণ পানিতে অক্সিজেন শূন্যের কোটায়। 

ওয়াটারকিপার্সের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, ‘শ্যামপুরে ডাইং দূষণ নিয়ে সরকার চিন্তিত, যারা ব্যবসায়ী, তারাও চিন্তিত। সরকারও কারখানাগুলো উচ্ছেদের জন্য বিভিন্ন সময় অভিযান চালায়। আমরা সরকার, শিল্প কারখানা বা কোনো ব্যবসায়ীর বিপক্ষে না। আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে সমাধান করতে হবে। ডাইং শিল্পের জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে দূষণের মাত্রা অনেক কমে আসবে, খরচও কমবে। কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তৈরি করতে হবে। 

দখল ও দূষণের মাধ্যমে ঢাকার নদীগুলো খালে পরিণত হচ্ছে জানিয়ে শরীফ জামিল বলেন, ‘আমদের এই নদীমাতৃক দেশে একটা নদী দূষণের কবলে পড়া মানে অন্য নদীগুলোকেও ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া। এর জন্য সরষের ভেতরে যত ভূত আছে, সেগুলো তাড়িয়ে নির্মোহভাবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নদী বাঁচাতে কাজ করতে হবে। নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে। নদীর পানিকে রান্না ও গোসলের কাজে ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে।’

ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. কামরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে নদী দূষণ নিয়ে গবেষণালব্ধ তথ্য তুলে ধরেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত