Ajker Patrika

ভবনে অগ্নিনিরাপত্তার সব ব্যবস্থা ছিল, দাবি প্রকৌশলীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮: ৫৯
ভবনে অগ্নিনিরাপত্তার সব ব্যবস্থা ছিল, দাবি প্রকৌশলীর

রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরে গতকাল রোববার রাতে আগুন লাগা ১২ তলা ভবন ‘জাকির-মোশাররফ স্কাইলাইন’-এ অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণের একটি টিম ছিল, অ্যালার্মের ব্যবস্থাও ছিল। গতকাল আগুন লাগার পর অ্যালার্ম বাজলেও বাড়ির বাসিন্দাদের অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাননি। অগ্নিনিরাপত্তার সব ব্যবস্থা ভবনটিতে ছিল। আজ সোমবার এই বাড়ি নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এস কনার প্রকৌশলী দাবি করা মাহফুজুল হাসান নামের এক ব্যক্তি এসব কথা বলেন।

মাহফুজুল হাসান বাড়ির ১০ ও ১১ তলা ঘুরে এসে সাংবাদিকদের বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্ম বেজেছে। যাঁরা নিচের দিকে ছিলেন, তাঁরা নেমেছেন। আগুন লাগার পরে প্রত্যেকেই যদি সিঁড়ি দিয়ে বের হয়ে যেতেন, তাহলে সবাই নিরাপদ হয়ে যেতে পারতেন। অনেক সময় ভুল অ্যালার্ম হয়। যাঁরা বাসায় ছিলেন, তাঁরা মনে করেছিলেন ভুল অ্যালার্ম হয়েছে। যখন তাঁরা দেখেছেন আগুন এবং নিচ থেকে বলা হচ্ছিল আগুন লেগেছে, সবাই নেমে যান, তখন যে যতটুকু পেরেছেন নেমে এসেছেন।

মাহফুজুল হাসান বলেন, আগুন থেকে বাঁচার জন্য সব ব্যবস্থাই রেখেছিলেন। ভবনে অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণের একটি টিম ছিল। তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাও নিয়েছে।

দ্রুত আগুন ছড়িয়ে যাওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে মাহফুজুল হাসান বলেন, পুরো ভবনটিতেই কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। প্রতি বাসায় সেখান থেকে সংযোগ নেওয়া হয়েছিল। যখনই একটি বাসা থেকে প্রথমে ধোঁয়া যায়, আগুন কিন্তু যায়নি। ধোঁয়ার জন্যই বেশি সমস্যা হয়েছে। আর আগুন ওপরে দুই দিক থেকে বেশি হয়েছে।

একটি ভবনের নিরাপত্তার জন্য সব ব্যবস্থাই রাখা হয়েছে দাবি করে মাহফুজুল হাসান বলেন, ভবনটিতে সব সিস্টেমই করা আছে। রাজউক থেকে যে সার্টিফিকেট দেয়, ওটাও নেওয়া আছে।

এই ভবন নির্মাণের ঠিকাদারির কাজ করা প্রতিষ্ঠানের এনামুল হক নামের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভবনটির জমির মালিক মো. মোশাররফ হোসেন ও জাকির নামের দুজন। মোশাররফ ফেনী-৩ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন। জাকির বে-স্টেট লিমিটেডের মালিক। আজ দুপুরে তিনি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটি দেখতে এসে এসব কথা বলেন। তিনি আরও জানান, ভবনের কয়েকটি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে। বাকিগুলোর মালিক মোশাররফ ও জাকির। সেগুলো ভাড়া দেওয়া আছে। তবে জমির মালিকেরা কেউ এই বাড়িতে থাকেন না।

এদিকে আজ বেলা ১১টার দিকে আগুন লাগা ভবনটির নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। তারা বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে বাড়িটি হস্তান্তর করার পর ফিরতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা।

বাড়ির চারতলার এ-৪ ফ্ল্যাটের মালিক ওয়াশিম রেহমান। নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ভবন ঘুরে এসে তিনি বলেন, ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের গ্লাস ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। তিনি জানান, ভবনে ফায়ার এক্সটিংগুইশার, ফায়ার হাইড্রেন্ট ও ফায়ার এক্সিটও ছিল। সবকিছুই সচল ছিল। প্রতি দুই সপ্তাহ পর এখানে ফায়ার সেশন হতো। আগুনটা অনেক বড় হওয়ায় সেগুলো খুব বেশি কাজে লাগেনি। সবাই ফায়ার এক্সিট ব্যবহার করেছেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় দুজন মারা গেছেন। দুজনই অগ্নিকাণ্ডের সময় ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছিলেন। তাঁরা ভবনের বিভিন্ন ফ্ল্যাটে রাঁধুনির কাজ করতেন। রাতে আনোয়ার হোসেন নামের একজন মারা গেছেন এবং ভোরে রাজু নামের একজন মারা যান গুলশানের জেড এইচ শিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজের সিসিইউতে। রাজুর মরদেহ গাজীপুরে তাঁর গ্রামের বাড়ি কালীগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত