Ajker Patrika

সব নালা ঢেকে দেওয়া সম্ভব নয়: চসিক মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নগর ভবনের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। আজ রোববার দুপুরে তোলা। আজকের পত্রিকা
নগর ভবনের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। আজ রোববার দুপুরে তোলা। আজকের পত্রিকা

হালিশহরে খোলা নালায় এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, সব নালা ঢেকে দেওয়া সম্ভব নয়। কিছু নালা সার্ভিস লাইন হিসেবে খোলা রাখতে হয়। তবে পাশে নিরাপত্তাব্যবস্থা ও স্ল্যাব বসানো থাকে। যেখানে গার্মেন্টস নিজস্ব উদ্যোগে নালার কাজ করেছে, সেটি আমাদের নয়। মূলত পরিবার বা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব শিশুদের সুরক্ষা দেওয়া।

আজ রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে নগরীর বাটালি হিলের নগর ভবনের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মেয়র এসব কথা বলেন। কানাডা সফর শেষে নগরীর সার্বিক উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে মেয়র এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।

শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘হালিশহরের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে সিটি করপোরেশন কিংবা অন্য কোনো সংস্থার পক্ষে সব শিশুর তদারকি করা সম্ভব নয়। এ দায়িত্ব প্রথমেই পরিবারের বা অভিভাবকের।’ মেয়র বলেন, ‘একটি শিশু কখনোই স্বাধীন নয়, সে সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। গার্মেন্টস হোক বা অন্য কোনো কর্মস্থলে শিশুকে সঙ্গে নিয়ে গেলে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কর্মীরই। শিশুকে যদি সামলে রাখা সম্ভব না হয়, তবে গেটকিপার বা অন্য কারও কাছে দায়িত্ব দিয়ে যেতে হবে। এ দায়িত্ব অবহেলা করা যায় না।’

চসিক মেয়র বলেন, ‘আমরা পরিবার ও কেয়ারটেকারদের দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি এবং সিটি করপোরেশন থেকেও সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে। প্রতিবন্ধী, শিশু এবং বয়স্কদের জন্য বিশেষ সতর্কতা ও সচেতনতার প্রয়োজন।’

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘শহর পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব শুধু সিটি করপোরেশনের নয়, নাগরিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। আমরা ডোর-টু-ডোর ময়লা সংগ্রহ প্রকল্প চালু করেছি। প্রতি পরিবার মাসে ৬০ টাকা প্রদান করছে। কানাডার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সেখানে ধনী-গরিব সবাই নিজ হাতে ডাস্টবিনে ময়লা ফেলে। আমাদেরও এই অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ৬০ টাকা খরচ করেও যদি শহরকে সুন্দর রাখতে না পারি, সেটা দুঃখজনক।’ তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। ডোর-টু-ডোর সেবার ক্ষেত্রে ৬০ টাকার বেশি কেউ দাবি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কানাডা সফর নিয়ে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘কানাডা সফর আমাকে গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা দিয়েছে। টরন্টো সিটির সঙ্গে একটি সহযোগিতা চুক্তি (সিস্টার সিটি) স্বাক্ষরের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। এটি বাস্তবায়িত হলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কানাডার কনকর্ডিয়া ইউনিভার্সিটি ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মধ্যে যৌথ সহযোগিতার জন্য একটি চুক্তি হয়েছে। এর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও শিক্ষার্থী বিনিময়ের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। কানাডায় চট্টগ্রামের উন্নয়ন কার্যক্রম, আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তিনির্ভর সেবা, পরিবেশবান্ধব নগর গড়ে তোলার পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

কানাডা পুলিশের মডেল থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের পুলিশ ব্যবস্থাও সংস্কারের প্রয়োজন বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘কানাডার পুলিশ জনবান্ধব। তাঁরা ভদ্রভাবে জনগণের সঙ্গে কথোপকথন করে, তারপর আইন প্রয়োগ করে।’

চসিকের বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে মেয়র বলেন, ‘ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা ১০০ দিনের বিশেষ মশকনিধনের লক্ষ্যে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করেছি, যা তিন মাস চলবে।’

চট্টগ্রামবাসীর সুবিধার্থে নাগরিক অভিযোগ সমাধানে ‘আমার চট্টগ্রাম’ নামে একটি অ্যাপ শিগগিরই চালু করা হবে বলে জানান মেয়র।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী মো. ফরহাদুল আলম, ম্যালরিয়া ও মশকনিধন কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি, উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী ও জিয়াউর রহমান জিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত