Ajker Patrika

চাঁদাবাজির মামলায় ফরিদপুরে অবসরপ্রাপ্ত মেজরসহ গ্রেপ্তার ৫

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৫, ১২: ৫৯
অবসরপ্রাপ্ত মেজর গোলাম হায়দার। ছবি; সংগৃহীত
অবসরপ্রাপ্ত মেজর গোলাম হায়দার। ছবি; সংগৃহীত

ফরিদপুরে চাঁদাবাজির মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর গোলাম হায়দারসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে নিজ বাড়ি নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রাম থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। গোলাম হায়দার এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) স্বঘোষিত সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী।

আজ মঙ্গলবার সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নগরকান্দা থানার উপপরিদর্শক আমিরুল ইসলাম। তিনি জানান, রাতেই এদের থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং আজ বেলা ১১টার দিকে গ্রেপ্তার সবাইকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে এজাহারনামীয় ফরহাদ হোসেন নামে গোলাম হায়দারের এক সহযোগী রয়েছেন। বাকিদেরও অভিযানের সময় গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেলে থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) ও ডেকোরেটর ব্যবসায়ী মো. রাজু মোল্লা। তার অভিযোগের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ রাতেই যৌথ অভিযান চালায়।

মামলার বাদী রাজু মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রবীণ হওয়ায় বর্তমানে আমি প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার দায়িত্ব পালনকালে পরিষদে কোনো মালামাল এলে মেজর গোলাম হায়দার বিভিন্ন সময়ে তাঁর ভাগ দাবি করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে কাবিখা-কাবিটার ভাগ হিসেবে টাকা দাবি করে আসছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘গত ২৯ মে ফরহাদ নামে এক ব্যক্তি আমাকে গণকবরের পাশে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে মেজর নিজেই বসা ছিলেন এবং ভাগ না দিলে আমাকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়। গতকাল বিকেলে হঠাৎ করে নগরকান্দা বাজারে আমার দোকানের সামনে কয়েকজন মোটরসাইকেলে করে আসেন এবং এসেই মেজরের নামে হুমকি দিয়ে যান। পরে আমি থানায় গিয়ে অভিযোগ করি।’ রাজু মোল্লা আরও বলেন, ‘এই মেজরের ভয়ে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। উনি নিজেকে এনসিপির ক্যান্ডিডেট (প্রার্থী) পরিচয় দিয়ে বেড়াতেন।’

জানা গেছে, গ্রেপ্তার মেজর গোলাম হায়দার স্বঘোষিতভাবে এনসিপির প্রতিনিধিত্ব করতেন। এ ছাড়া ফরিদপুর-২ আসন থেকে সংগঠনটির প্রার্থী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। সচেতন সমাজের আহ্বায়ক হিসেবে এলাকায় পোস্টারও টানিয়েছেন। গত ২৪ মে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের হলরুমে জাতীয় নাগরিক পার্টি আয়োজিত মতবিনিময় ও জনতার সংলাপে এনসিপির প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দেন তিনি।

এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির জেলার সংগঠক মো. বায়েজিদ হোসেন (সাহেদ) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উনি (গোলাম হায়দার) এনসিপির কেউ নন। আমাদের দলে যোগদানের জন্য অনেকেই যোগাযোগ করছেন, বিভিন্ন প্রোগ্রামেও অংশগ্রহণ করছেন। সে হিসেবে মেজর হায়দার সাহেবও ছিলেন। কে কেমন সেটা তো এখনো আমরা জানি না। তবে বিষয়টি কেন্দ্রকে অবগত করা হবে।’

এই গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘উনি (গোলাম হায়দার) এনসিপি কিংবা বৈষম্যবিরোধীর কেউ নন। উনি আমাদের সাথেও খারাপ ব্যবহার করেছেন। ওনাকে গ্রেপ্তার করা মানে ভালো খবর। কারণ, বৈষম্যবিরোধীর উপদেষ্টা পরিচয় দিয়েও মানুষকে ভয়ভীতি দেখাতেন। আসলেই উনি একজন বাটপার প্রকৃতির লোক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত