Ajker Patrika

সুন্দরী নারীদের মাধ্যমে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের প্রেমের ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিলেন মেঘনা আলম, পুলিশের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ৩৯
মেঘনা আলম। ছবি: ফেসবুক
মেঘনা আলম। ছবি: ফেসবুক

সুন্দরী নারীদের মাধ্যমে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ‘প্রেমের ফাঁদে’ ফেলতে চেয়েছিলেন—এমন অভিযোগে কারাগারে গেলেন মডেল ও মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মেঘনা আলম। এর আগে গত ১০ এপ্রিল বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকাদেশ দিয়ে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে।

ঢাকার ধানমন্ডি থানায় মেঘনার বিরুদ্ধে দায়ের করা এই প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য, যারা সুন্দরী নারীদের মাধ্যমে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনী ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করতেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, মেঘনা আলম ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেওয়ান সামির এবং আরও দুই-তিনজন মিলে গত ২৯ মার্চ ধানমন্ডির একটি জাপানি রেস্টুরেন্টে এক কূটনীতিকের কাছ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার চাঁদা আদায়ের পরিকল্পনায় বৈঠক করেন।

দেওয়ান সামির কাওয়াই গ্রুপের সিইও এবং সঞ্জনা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক।

গত ১৫ এপ্রিল ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ আবদুল আলিম মেঘনা আলম, দেওয়ান সামির এবং আরও দুজনের বিরুদ্ধে এই প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলাটি দায়ের করেন।

এই মামলায় আজ বৃহস্পতিবার কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হলে মেঘনাকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া। অন্যদিকে দেওয়ান সামিরকে ভাটারা থানার একটি চাঁদাবাজির মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে শেষে ধানমন্ডি থানার এই মামলায় আবারও ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. আখতার হোসেন দুজনকে ধানমন্ডি থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। সামিরের ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন তিনি।

শুনানি শেষে আদালত মেঘনা ও সামিরকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন। সামিরকে গ্রেপ্তার দেখানোর পরে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

ঢাকা মহানগর আদালতের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

উল্লেখ্য, গত ৯ এপ্রিল রাতে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার নিজ বাসা থেকে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ১০ এপ্রিল আদালত তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে মেঘনার বাবার করা এক রিটের প্রেক্ষিতে ১৩ এপ্রিল হাইকোর্ট একটি রুল জারি করে জানতে চান, বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না।

পরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া ‘সঠিক’ হয়নি।

মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার ও আটক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি এই গ্রেপ্তারকে ‘ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদী পদক্ষেপ’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং মেঘনা আলমকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। বিভিন্ন সংগঠন মেঘনাকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে মুক্তি দাবি করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত