Ajker Patrika

ঝিনাইদহ সরকারি খাদ্যগুদামে পচা ও ছত্রাক ধরা গম, আরও গম আনার চেষ্টা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ সদর খাদ্যগুদামে ছত্রাক ধরা পচা গমবাহী ট্রাক। ইনসেটে পচা গম। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিনাইদহ সদর খাদ্যগুদামে ছত্রাক ধরা পচা গমবাহী ট্রাক। ইনসেটে পচা গম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহ সদর খাদ্যগুদামে ৬৪ টন পচা ও নিম্নমানের গম সরবরাহ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার চাহিদার বিপরীতে খুলনা বিভাগীয় খাদ্যগুদাম থেকে এসব গম পাঠানো হয়। সরকার নির্ধারিত ঠিকাদারের মাধ্যমে গত বৃহস্পতিবার ভোরে ঝিনাইদহ সদর খাদ্যগুদামের গেটে এই মাল প্রবেশ করে। মালের ডেলিভারি স্লিপ দেখে উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন মালের মান চেক করতে গিয়ে দেখেন অত্যন্ত নিম্নমানের পচা গম আনা হয়েছে। তখন গমবোঝাই ট্রাকগুলো আনলোড না করে আটকে রাখেন তিনি। তখন ট্রাকের চালক এবং মালিকদের সঙ্গে খাদ্য পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেনের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

এদিকে ঘটনার এক দিন পর শুক্রবার এমন খবর গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পৌঁছালে তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পচা ওই গম আনলোড করা দেখতে পান।

খাদ্য পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ঝিনাইদহ সদর খাদ্যগুদাম থেকে দুই সপ্তাহ আগে ৩০০ টন গমের চাহিদা দেওয়া হয়। চাহিদার বিপরীতে গত বৃহস্পতিবার আটটি ট্রাকে ৬৪ টন গম আসে। বাহকদের কাছ থেকে বুঝে নেওয়ার সময় দেখা যায় গমগুলো ছত্রাক ধরা ও নিম্নমানের। তখন আনলোড না করে এই গম খুলনায় ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করি। পরের দিন শুক্রবার হওয়ায় ট্রাকগুলো গুদাম এরিয়ায় আটকে রাখা হয় এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।’ পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে গমগুলো আনলোড করে গুদামে রাখা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

খাদ্য অফিসের একটি সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে একটি পরিদর্শক টিম এসে এই নিম্নমানের পচা গম ঝিনাইদহ সরকারি খাদ্যগুদামে রাখার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে ঝিনাইদহ সদরের খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত গুদাম রক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন তা গুদামজাত করতে বাধ্য হন। শুক্রবার পর্যন্ত দুই দিন ট্রাক আটকে রাখার দায়ে হরিণাকুণ্ডু ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান লিটন তাঁর ট্রাকের ক্ষতিপূরণ দাবি করলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। তখন ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ও জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষয়টি মীমাংসা করেন এবং ট্রাক থেকে মাল আনলোড করে ট্রাকগুলো ছেড়ে দেন।

এখন বাকি ২০০ টনের অধিক গম আসার কথা, সেটাও নিম্নমানের মাল বলে ধারণা করছেন জেলার ওএমএস ডিলাররা।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়ার টিটন হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে খাদ্যগুদামের সামনের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। খাদ্যগুদামের ভেতরে হট্টগোল দেখে এগিয়ে দেখি গম আনলোড করা নিয়ে অফিসের লোকজন ও ট্রাকমালিকদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হচ্ছে। খাদ্য অফিসের লোকজনের দাবি, গম খুবই নিম্নমানের। আমরাও হাতে করে দেখি গমে ছত্রাক ধরে গেছে, অনেক পুরোনো।’

এ বিষয়ে জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) প্রিয় কমল চাকমা বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি এখনই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।’

ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘পচা বা নিম্নমানের গম আমাদের খাদ্যগুদামে আসবে না। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি, যদি এসে থাকে তাহলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পানছড়ি বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করলেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতায় নিহতদের ময়নাতদন্ত কেন হয়নি, ব্যাখ্যা দিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

‘ক্ষমা না চাইলে এনসিপিকে ফেনীতে ঢুকতে দেওয়া হবে না’

খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত নেতানিয়াহু

ইতিহাসে প্রথম আপিল বিভাগে চেম্বার আদালত বেড়ে দুটি হলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত