আন্দোলনের নামে শিক্ষাব্যবস্থাকে জিম্মি করলে রুখে দাঁড়ানোর হুঁশিয়ারি ছাত্রলীগের

আন্দোলনের নামে শিক্ষাব্যবস্থাকে জিম্মি করলে এবং জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটালে রুখে দাঁড়াবে ছাত্রলীগ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যানটিনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাডেমিক পরিবেশ অব্যাহত রাখা, জনদুর্ভোগ তৈরি না করে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে আসা এবং কোটা ইস্যুর যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ইতিবাচক সমাধানের দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এক সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘কোটা-সংক্রান্ত বিষয়টি বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আদালতের প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করে জানাচ্ছে যে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতীক উচ্চ আদালত এ দেশের মহান সংবিধানে উল্লিখিত অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থান এবং সুযোগের সমতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান বাস্তবতায় কোটা নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, যাতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ সন্তুষ্ট হবে, দেশের প্রতিটি নাগরিককে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দান করবে।’

সাদ্দাম আরও বলেন, ‘আন্দোলনের নামে দেশের শিক্ষার্থী সমাজ ও শিক্ষাব্যবস্থাকে জিম্মি করে, জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার পরিকল্পিত স্মার্ট বাংলাদেশ অভিমুখে অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে দেশের ছাত্রসমাজকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দাঁড়াবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।’

বক্তব্যে কোটা নিয়ে চলমান আন্দোলনকারীদের বেশ কয়েকটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাদ্দাম। সেগুলো হলো—আন্দোলনের নামে অনিঃশেষ অবরোধ কার্যক্রম পরিচালনা কোনোভাবেই দাবির সুষ্ঠু সমাধান নিয়ে আসতে পারে না; চলমান এইচএসসি পরীক্ষা, তীব্র তাপপ্রবাহ এবং মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিবেচনায় সড়ক অবরোধ, নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা ও জীবনযাত্রায় বাধা সৃষ্টি এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে ফিরে আসতে হবে।

ছাত্রলীগের সভাপতি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, কোটাব্যবস্থা বাতিল করেছে দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকার। উচ্চ আদালতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বহালের জন্য কাজ করছে সরকারের আইনজীবী; তাই দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রেখে স্বাভাবিক আইনগত প্রক্রিয়ায় কোটাসংক্রান্ত জটিলতার যৌক্তিক সমাধান নিয়ে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের সব রকম বিশৃঙ্খলাপূর্ণ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে।’

কোটা-সংক্রান্ত বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন উল্লেখ করে সাদ্দাম বলেন, ‘কোটা-সংক্রান্ত বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন এবং কেউই দেশের প্রচলিত আইনের ঊর্ধ্বে নয় বিধায় আইনি প্রক্রিয়াতেই এর চূড়ান্ত, স্থায়ী, যৌক্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধানের দিকে এগোতে হবে। এ ক্ষেত্রে দেশের শিক্ষার্থী সমাজের নির্ভরতার প্রতীক দেশরত্ন শেখ হাসিনা তাদের পাশে রয়েছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাদের পাশে রয়েছে এবং তারা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে গিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক পরিবেশ স্বাভাবিক রাখবে এটিই সবাই প্রত্যাশা করে।’

এ সময় সাদ্দাম আরও বলেন, ‘বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে দেশের শিক্ষার্থী সমাজের পাশে অবস্থান করছে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সমস্যার গভীরে গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাৎক্ষণিক সমাধান নয় বরং বিচার বিভাগীয় পর্যবেক্ষণের আলোকে সাংবিধানিক অনুশাসন অক্ষুণ্ন রেখে, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রতি দায়বদ্ধতাকে বিবেচনায় নিয়ে, জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকল্পে, প্রান্তিক ও নিম্নবর্গীয় মানুষের প্রতি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের আলোকে যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থায়ী, যুগোপযোগী, ইতিবাচক সমাধান নিয়ে আসার জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।’

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি ও সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডুসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দ।