Ajker Patrika

ফরিদপুরে স্কুলছাত্রীকে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরে স্কুলছাত্রীকে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড

ফরিদপুরে স্কুলছাত্রী ফারিয়াকে (১২) ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। 

আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট স্বপন পাল রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ ফারিয়ার পরিবার ন্যায়বিচার পেয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।’ 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাসেল শিকদার (২২) জেলার বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের ইছাডাঙ্গা গ্রামের মো. মনোয়ার শিকদারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। 

এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, বাড়ি সংলগ্ন নিজেদের মুদি দোকান দেখাশোনা করত ফারিয়া। ওই দোকান থেকে বিভিন্ন সময় বাকিতে মাল নিত আসামি। ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট ঘটনার দিন বাকি হওয়া ১৫০ টাকা দেওয়ার কথা বলে ফারিয়াকে কৌশলে ঘরে ডেকে নেয় রাসেল শিকদার। একপর্যায়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনাটি যাতে কেউ না জানতে পারে সে জন্য তার মুখের ভেতর ওড়না ঢুকিয়ে ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। 

এরপর লাশটি গোসলখানার ভেতর রেখে পালিয়ে যায় রাসেল। এ ঘটনার পর ফারিয়াকে না পেয়ে এলাকায় মাইকিং ও খোঁজাখুঁজি করে পরিবার ও প্রতিবেশীরা। একপর্যায়ে ব্রাসেলসে কৌশলে বাড়িতে ডেকে আনেন এলাকাবাসী। 

পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করার পর ওই গোসল খানার ভেতর থেকে হাত-পা বাঁধে অবস্থায় নিথর দেহ উদ্ধার করে থানা–পুলিশ। এরপর পার্শ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

এ ঘটনার পরদিন বোয়ালমারী থানায় রাসেল শিকদারকে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা মো. মোক্তার হোসেন শিকদার। এরপর থেকে দীর্ঘ শুনানি শেষে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন আদালত। 

আদালত সূত্রে জানা যায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (৪) ধারায় উক্ত আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয় এবং দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। 

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগীর পরিবার। আদালতে উপস্থিত থাকা ফারিয়ার মা জুলি বেগম বলেন, ‘আমরা সঠিক বিচার পেয়েছি। এখন এ রায়ের দ্রুতই কার্যকারিতা দেখতে চাই।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘মামলার পর থেকে আসামিপক্ষ আমাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। আজকের রায়ের ঘটনায়ও আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত