Ajker Patrika

উপকূলের উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান উন্নয়ন সংস্থাগুলোর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২২, ১৬: ২৬
উপকূলের উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান উন্নয়ন সংস্থাগুলোর

উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের প্রতিনিধিরা। আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান উপস্থিত বক্তারা। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স, ওয়াটারকুপারস বাংলাদেশ এবং সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন এই আয়োজন করে। 

সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর ও খুলনা জেলার কয়রা উপজেলাসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙে ক্ষতি হয়েছে এবং বহু মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে। আলোচকেরা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে (খুলনা-সাতক্ষীরা-বাগেরহাট) জনজীবনে সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে উল্লেখ করেন বক্তারা। একের পর এক ঘূর্ণিঝড়সহ প্রকৃতি পূর্ণ হয়ে পড়েছে সেখানকার বেড়িবাঁধ। ফলে স্বাভাবিক জোয়ারের পানির চাপে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হচ্ছে। 

জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মাথায় রেখে উপকূলে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণ করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের প্রতিনিধিরা। জনসংখ্যার অনুপাতে পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টারসহ প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে উপকূলীয় মানুষের সুপেয় পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করার কথাও উল্লেখ করেন তাঁরা। এ ছাড়া বক্তারা টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করার আহ্বান জানান। 

উপকূলের ঝুঁকির চিত্র তুলে ধরে মোহন কুমার মণ্ডল বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে গত ৩৫ বছরে লবণাক্ততা আগের তুলনায় ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর পরিমাণ ২ পিপিটি থেকে বেড়ে ৭ পিপিটি হয়ে গেছে। লবণাক্ততার কারণে কৃষি ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনকভাবে। এ ছাড়া লবণাক্ততা বৃদ্ধি এ অঞ্চলের মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতেও ফেলেছে। চিকিৎসাবিদদের মতে, এই এলাকায় বসবাসকারীদের উচ্চরক্তচাপে ভোগার সম্ভাবনা বাড়ছে। লবণাক্ততার কারণে উপকূলের নারীদের জরায়ু সংক্রমণ বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। 

মূল প্রবন্ধে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পেয়েছে উপকূলে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বঙ্গোপসাগর ক্রমেই উত্তাল হয়ে উঠছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ১৯৫৫ থেকে ১৯৭৫ বিশ বছরের তুলনায় ২০০০ থেকে ২০২০ বিশ বছরে এই অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েছে ১০ গুণ। 

উপকূলের প্রকল্পগুলোতে প্রয়োজন অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল। তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ খুলনা-সাতক্ষীরাকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করলেও প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে তা বিবেচনায় নেওয়া হয় না। বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সুপেয় পানি প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয়। উপকূলের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত