Ajker Patrika

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বশেমুরবিপ্রবি কর্মচারীদের বিক্ষোভ, ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ উপাচার্য

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ মে ২০২৩, ১২: ৪২
Thumbnail image

গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রারকে প্রায় ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন চুক্তি ভিত্তিক কর্মচারীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত কর্মচারীরা।

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে অবরুদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি ভিত্তিক ১৩৪ জন কর্মচারী।

উপাচার্যের দপ্তরের সামনের প্রধান ফটকে তালাবন্ধ করে উপাচার্য প্রফেসর ড. একিউএম মাহবুব, ট্রেজারার ড. মোবারক হেসেন ও রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রারকে প্রায় ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন চুক্তি ভিত্তিক কর্মচারীরাএদিকে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটের দিকে উপাচার্যের সঙ্গে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সদস্যরা ফটকের তালা ভাঙার চেষ্টা করেন। তালা ভাঙতে না পেরে পরে তাঁরা (সমিতির সদস্যরা) গেটে দড়ি বেঁধে টেনে টেনে গেট ভেঙে ফেলে তাঁদের ওপর চড়াও হন বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, দুপুর ২টা ৩৭ মিনিটের দিকে উপাচার্য তাঁর কক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় আন্দোলনকারীদের ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং সেখানে শুয়ে থাকা এক আন্দোলনকারীর মোবাইল কেড়ে নিতে যান। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে থাকা কর্মচারী পরিষদের সদস্যরাও তাঁদের ওপর চড়াও হন। পরে আন্দোলনকারীদের ডিঙিয়ে উপাচার্য বাইরে বেরিয়ে যান।

কর্মচারী সমিতির সদস্যরা গেটে দড়ি বেঁধে টেনে টেনে গেট ভাঙার চেষ্টা করেনঅবস্থান কর্মসূচি পালনকারী জনসংযোগ দপ্তরের চুক্তি ভিত্তিক কর্মচারী মো. শামীম আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিগত সাত-আট বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি করে আসছি। বিগত উপাচার্য ও বর্তমান উপাচার্য আমাদের বারবার চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস দিলেও কোনো কাজ হয়নি। গতকাল অনুষ্ঠিত একাডেমি কাউন্সিলেও আমাদের বিষয় এই বিষয়ে কেন আলোচনা হয়নি? তাই আমরা বাধ্য হয়ে উপাচার্যের দপ্তরে তালা লাগিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন কর যাব। তালা না খোলায় দুপুর সোয়া ১টার দিকে কর্মচারী পরিষদের সদস্যরা গেট ভেঙে ফেলেন। এ সময় আমাদের কয়েকজন আঘাতপ্রাপ্ত হন। গেট ভেঙে তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়। আমাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস দেয়নি কেউ। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী পরিষদের সভাপতি মো. তরিকুল বলেন, ‘সামনে সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটা ইস্যু বানানোর চেষ্টা করছে। কারণ এটি প্রধানমন্ত্রীর জেলা। এই অরাজকতার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’ তবে গেট ভাঙার বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত কর্মচারীরাবিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টায় জরুরি মিটিংয়ে আমরা ভিসি স্যারের রুমে ছিলাম। হঠাৎ করে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভিসি স্যারের রুমের সামনে শোরগোল শুনতে পাই। পরে খবর পাই চুক্তি ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা ভিসি দপ্তরের সামনের গেটে তালা মেরে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। তারা কেন আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটি অবগত নয়। কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই তারা আন্দোলন করছে। তারা চাচ্ছে এখনই তাদের চাকরি স্থায়ী করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন চাকরি স্থায়ী করতে পারে না। তারা যদি তালা না দিয়ে এসে কথা বলত সেটি একটি বিষয় ছিল।’ 

গেট ভাঙার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘গেট ভাঙার বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আমরা দেখব গেটটি কারা ভেঙেছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত