Ajker Patrika

‘কী করব, খাওন তো লাগব’

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
Thumbnail image

‘তিনডা পোলাপাইন (ছেলে-মেয়ে) পড়ালেখা করে। আমি আর বউ মিলে পাঁচজনের সংসার। সারা দিন যে ট্যাহা কামাই করি, তা দিয়াই কোনোমতে চলে সংসার। জিনিসের দাম যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে রোজগার বাড়ে নাই। কী করব; পেট আছে, খাওন তো লাগব।’ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার প্রতিক্রিয়ায় এভাবেই নিজের কথাগুলো বলছিলেন রূপলাল রবিদাস। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌর সদর বাজারে জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন তিনি। পৌর বাজারেই তাঁর বসতবাড়ি। 

আজ রোববার দুপুরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় রূপলালের। তিনি বলেন, তিন ছেলে-মেয়ের পড়ালেখার খরচসহ পাঁচজনের সংসার চলে তাঁর রোজগারে। পৈতৃকসূত্রে তিনি এ পেশার সঙ্গে জড়িত। প্রতিদিনের রোজগারে প্রতিদিনের বাজার-সদাই করতে হয়। গত দুই বছর ধরে করোনা মহামারি চলছে। এ সময় দোকান নিয়ে বসলেও তেমন একটা আয়-রোজগার হয়নি। সরকারি ত্রাণ ও সামান্য আয় নিয়েই কোনো রকমে দিন পার করছেন। কিন্তু এখন লকডাউন না থাকলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজের বাজার চড়া। প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম। সেভাবে আয়-রোজগার বাড়েনি। সারা দিন কাজ করে যে টাকা পাওয়া যায়, তা দিয়ে বাজার-সদাই আর সন্তানদের পড়ালেখা করাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে। 

রূপলাল রবিদাসের মতোই সোহেল মিয়া। নিম্ন আয়ের এই মানুষ পৌর সদর বাজারে রিকশা চালান। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনিও। আয়-ব্যয়ের হিসাব আর মিলছে না কোনোমতেই। বললেন, এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে। 

সোহেল মিয়া বলেন, চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, ব্রয়লার মুরগি, কাঁচাবাজারসহ সবকিছুর দামই বাড়তি। এত দিন খোলাবাজার থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে মোটা চাল কিনে খেয়েছেন। বললেন, ‘এখন নাকি তাও বন্ধ। কীভাবে কী করব, বুঝতে পারছি না।’ 

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় রূপলাল রবিদাস ও সোহেল মিয়ার মতো বিপাকে রয়েছেন নিম্ন আয়ের প্রতিটি মানুষ। এক কথায় দিশেহারা অবস্থা তাঁদের। খোলাবাজারে চাল বিক্রিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় তেল, ডাল, পেঁয়াজ ইত্যাদি বিক্রির ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। 

এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে। তা ছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে টিসিবি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত