Ajker Patrika

বিমর্ষ ঈদ কাটাল মিতুর পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ১৬ মে ২০২১, ১৬: ০৪
বিমর্ষ ঈদ কাটাল মিতুর পরিবার

ঢাকা: স্ত্রী হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। ২০১৬ সালের ৫ জুন সাত বছর বয়সী ছেলের সামনেই নৃশংসভাবে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। তারপর থেকে প্রায় ছয় মাস ছেলেমেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন বাবুল আক্তার। দুই নাতি–নাতিনকে আগলে মেয়েকে হারানোর কষ্ট ভুলে থাকার চেষ্টায় ছিলেন মাহমুদা খানম মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন ও মা শাহিদা মোশাররফ।

‘বুকডা ফাইড্ডা যায়, কেমনে আপনারে বলি। নাতিগুলোরে দেহি না তিন বছরেরও বেশি। ঈদ গেল, একডা নতুন জামা দিতে পারলাম না। কিছু খাওয়াইতে পারলাম না। কই যে আছে আমার মা মরা নাতিগুলা, আল্লাহ জানে'। আক্ষেপ করে এভাবেই কষ্টের কথা বলছিলেন মিতুর মা শাহিদা মোশাররফ।

রাজধানীর মেরাদিয়ার ভূঁইয়াপাড়ায় অবস্থিত মাহমুদা খানম মিতুর বাড়িতে এবারও ঈদ আসেনি । ছোট মেয়ের একমাত্র মেয়েকে সারাক্ষণ কোলে কোলে রাখেন মিতুর বাবা-মা । চেষ্টা করেন বড় মেয়ের সন্তানদের শূন্যস্থান পূরণের।

মিতুর বাবার দায়ের করা মামলায় বাবুল আক্তারের মোহাম্মদপুরের যে বাসার ঠিকানা ছিল, সেখানে যেয়ে দেখা যায় ভুল ঠিকানা দিয়েছেন বাবুল। পুলিশও যাচাই না করেই মামলায় তা নথিভুক্ত করেন। মামলার পর বাবুলের বর্তমান স্ত্রী বাচ্চার খোঁজে গেলেও কাউকে পায়নি তদন্তকারী দলের সদস্যরা।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাবুল আক্তার যে ঠিকানা দিয়েছিলেন সেটা সঠিক নয়। আমরা তার কাছে আবারও এ বিষয়ে জানতে চেয়েছি। দুটো শিশুর অবস্থান জানা দরকার। বাবুল-মিতু দম্পতির বড় সন্তান খুনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীও।’

মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, খুনের পর থেকে আমাদের বাসাতেই সন্তানদের নিয়ে ছিল বাবুল। আমরা ধীরে ধীরে বুঝতে পারি, আমার মেয়ে হত্যায় বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা ছিল। তারপর থেকেই সে নাতিদের নিয়ে চলে যায়। গত প্রায় সাড়ে তিন বছরে বাচ্চা দুটোর সঙ্গে একবারের জন্যই দেখা বা কথা বলতে দেয়নি আমাদের। মা মারা গেছে,বাবা জেলে এখন ওদের সঠিক পরিচর্যা দরকার। প্রধানমন্ত্রী যেন, ওদের আমাদের জিম্মায় দেন। যদি আদালতের মাধ্যমে যেতে হয়, আমরা সেভাবে আগাতেও প্রস্তুত।

বনজ কুমার মজুমদার বলেন, দুই শিশুকে খুঁজে বের করার ওপর জোর দিচ্ছি আমরা। এরই মধ্যে তাদের বাবার আত্মীয়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ওনার বর্তমান স্ত্রীসহ বাচ্চারা কোথায় আছেন, এটা পরিষ্কার হওয়া দরকার। অভিভাবকত্ব নিয়ে কি হবে, সেটা আইন প্রক্রিয়া। আমরা বাচ্চাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি।। যেন আর কোনও মানসিক ট্রমার মধ্যে তারা না পড়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত