Ajker Patrika

পোস্টার ছিঁড়তে লোক নিয়োগ! 

বন্দর (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
পোস্টার ছিঁড়তে লোক নিয়োগ! 

তখন ঘুটঘুটে রাত। চারদিক সুনসান। এমন গভীর রাতে একজন অচেনা ব্যক্তির দেখা মেলে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ধামগড়ের জাঙ্গাল এলাকায়। হাতে তাঁর কালো লাঠি, যার মাথায় ধারালো আংটা বাঁধা। ইজিবাইকে করে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছিলেন তিনি। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি জানালেন, টেলিফোন মার্কার পোস্টার কাটার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। আর সে জন্যেই রাত একটায় এমন ঘোরাঘুরি! 

তবে কে দিয়েছে এই দায়িত্ব? কোথা থেকে এসেছেন তিনি? কিংবা তাঁর পরিচয় কি, তা জানাতে রাজি হননি। অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত পালিয়ে যান পোস্টার কাটার দায়িত্বে থাকা এই ব্যক্তি।

আজ বুধবার সকালে ধামগড় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আইলপাড়া, জাঙ্গাল এলাকায় দেখা যায় টেলিফোন মার্কার প্রার্থী কামাল হোসেনের টানিয়ে রাখা পোস্টারগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। কোথাও কোথাও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এসব পোস্টার। কে করেছে এই কাজ তা রাতের ঘটনার পর বুঝতে বাকি থাকে না কারও।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর বিপরীতে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন। তিনি এই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আয়নাল হকের ছেলে। টেলিফোন প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন তিনি। তবে তাঁর প্রতিপক্ষ নৌকার প্রার্থী মাসুম আহম্মেদের সঙ্গে রয়েছে স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমানের প্রকাশ্য সমর্থন। তাই তার জয়ের পথ অনেকটাই পরিষ্কার বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। 

টেলিফোন মার্কার প্রার্থী কামাল হোসেনের টানিয়ে রাখা পোস্টারগুলো কেটে ফেলা হয়েছেকিন্তু নির্বাচনের মাঠে নামতেই একের পর এক বাঁধার মুখোমুখি হচ্ছেন কামাল হোসেন। রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী হিসেবে মাসুম আহম্মেদ এগিয়ে থাকলেও স্বতন্ত্র কামাল হোসেন এই নির্বাচনে বড় বাঁধা হয়ে উঠছেন। তাঁর মত স্বতন্ত্র প্রার্থীর পোস্টার ছিঁড়তে লোক নিয়োগ করার মত ঘটনা এখন ধামগড়ে বড় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। 

নাম গোপন রাখার শর্তে এক প্রত্যক্ষদর্শী আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘রাত ১টার দিকে একটি টং দোকানের সামনে এই ব্যক্তিকে আমরা দেখতে পাই। তিনি এই এলাকার কেউ নন। কথা বলে জানতে পারি ধামগড়েও তাঁর বাড়ি নয়। এসেছেন পোস্টার ছেঁড়ার কাজে। শুধুমাত্র টেলিফোন মার্কার পোস্টার ছিঁড়তে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সে কার জন্য কাজ করছে তা বুঝতে কারও বাকি থাকে না। আমরা ২ / ১ কথা জিজ্ঞেস করতেই ইজিবাইক নিয়ে দ্রুত সরে যায় সে। সকালে উঠে দেখতে পাই বিভিন্ন স্থানে কামালের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অক্ষত আছে মাসুম আহম্মেদের সকল ফেস্টুন ও পোস্টার।’

এই বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন বলেন, এই নির্বাচনে যত অভিযোগই দিই না কেন, আমার কোন অভিযোগেরই কোন বিচার হবে না। আর তাই আমি কোন অভিযোগ দিতে চাই না। তবে এটুকু বলতে পারি আমাকে যারা ভয় পায় তারাই এই কাজ করিয়েছে। আমি যেহেতু এখানে কোন বিচার পাব না তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করছি না। 

এ বিষয়ে বন্দর উপজেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুল কাদির বলেন, যার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে তার তো আমাদের কাছে এসে বলতে হবে। যদি সেটা না করে তাহলে কীভাবে আমরা ব্যবস্থা নেব? নির্বাচন আচরণবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তুত আছি। সে আমাদের কাছে বিষয়গুলো উপস্থাপন করুক। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত