Ajker Patrika

ছেলের কাঁধে চড়ে বাড়ি ফিরলেন বাবা

সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়, পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ)
আপডেট : ০৫ মে ২০২২, ১৫: ৫১
ছেলের কাঁধে চড়ে বাড়ি ফিরলেন বাবা

ছেলের কাঁধে চড়ে ঈদগাহ থেকে বাড়ি ফিরছেন আবদুল হেকিম নামের এক বাবা। সন্তানের কাঁধে বাবার এই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়ে যায়। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের সুখিয়া গ্রামের ঘটনা এটি। গত মঙ্গলবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সুখিয়া সরকারবাড়ির বাসিন্দা আবদুল হেকিম। বয়স তাঁর ৭৫। দীর্ঘদিন ধরে হাঁপানিজনিত রোগে ভুগছেন তিনি। বয়সের কারণে ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারেন না। তাই ঈদের দিন একমাত্র ছেলে দুলাল মিয়াকে নিয়ে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরের স্থানীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করতে যান। নামাজ শেষে ফেরার পথে বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় বয়োবৃদ্ধ পিতা আবদুল হেকিম কাদাময় রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে পারবেন না ভেবে নিজের কাঁধে চড়ান ছেলে দুলাল মিয়া। সন্তানের কাঁধে চড়ে ঈদগাহ থেকে গ্রামের মেঠো পথ ধরে বাড়ি ফিরছেন বাবা। এলাকার একজন এমন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন, যা মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাল হয়ে যায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা তাঁদের মন্তব্যে উল্লেখ করেন, এখনকার সময়ে এমন দৃশ্য বিরল। যেখানে প্রতিনিয়ত খবরের শিরোনাম হচ্ছে সন্তানেরা পিতামাতাকে রাস্তায় ফেলে যাচ্ছেন কিংবা বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সে সময় বয়োবৃদ্ধ পিতার প্রতি দুলাল মিয়ার এমন দায়িত্ব-কর্তব্য নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। পিতা-পুত্রের সম্পর্ক এমনই হওয়া উচিত। যে পিতা একসময় সন্তানকে কাঁধে চড়িয়ে ঘুরিয়েছেন, সেই পিতার বার্ধক্যে ছেলে তাঁর দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করছেন।

এ বিষয়ে ছেলে দুলাল মিয়া বলেন, ‘ভাইরাল হওয়ার জন্য আমি এমন কাজ করিনি। আমার আব্বা (পিতা) দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। সব সময় আব্বার সেবা করছি। সেদিন ঈদগাহ থেকে নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টিতে গ্রামের রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। ওই রাস্তা দিয়ে আব্বা হাঁটতে পারছিলেন না। তাই তাঁকে কাঁধে করে বাড়ি এনেছি। আমার এলাকার কেউ একজন সেই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। তাই এই ছবি ভাইরাল হয়েছে। আমি সারা জীবন আব্বার সেবা করে যেতে চাই। আমার আব্বার জন্য দোয়া করবেন।’

সৈয়দুর রহমান নামের স্থানীয় একজন বলেন, ‘অসুস্থ বাবার প্রতি ছেলের এমন দায়িত্ব নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। বাবা-ছেলের সম্পর্ক এমনই হওয়া উচিত। দুলাল মিয়ার জন্য এলাকাবাসী হিসেবে আমরাও গর্বিত। বাবার প্রতি এমন দায়িত্ব-কর্তব্য প্রত্যেক সন্তানের পালন করা উচিত।’

সুখিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুল হামিদ টিটু বলেন, ‘আমার এলাকার এক ছেলে বাবার প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য পালনের জন্য সর্বত্র প্রশংসনীয় হচ্ছে। এটি আমার জন্যও গর্বের। আমাদের সবার উচিত বাবা-মায়ের প্রতি যত্নবান হওয়া। তাঁদের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত