Ajker Patrika

‘ভাইয়া আমরা ১১ তলায় আটকা পড়েছি, আমাদের বাঁচান প্লিজ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০: ০২
‘ভাইয়া আমরা ১১ তলায় আটকা পড়েছি, আমাদের বাঁচান প্লিজ’

রাজধানীর গুলশান–২–এর একটি ১২ তলা ভবনের সপ্তম তলা অগ্নিকাণ্ড ৪ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণের এসেছে। ভবনটির বিভিন্ন তলায় এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন। ফায়ার সার্ভিস, বিমানবাহিনী ও সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দল উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত শিশুসহ ২২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, গুলশানের মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে ১২ তলা ভবনের সপ্তম তলায় আজ রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগুন লাগে। এ সময় ওই ভবনসহ আশপাশের ভবনে আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে আশপাশের ভবন থেকে লোকজন দ্রুত নিচে নেমে এসে নিরাপদ জায়গায় অবস্থান নেন। আগুন লাগা ভবনে অনেকে আটকা পড়েছেন। ওই ভবন থেকে কয়েকজন লাফ দিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। এমন অন্তত তিনজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। লাফ দেওয়ার সময় অনেকে গায়ে আগুন জ্বলছিল। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মইয়ের মাধ্যমে ভবন থেকে কয়েকজনকে নিচে নামিয়ে এনেছেন। ভবন থেকে লোকজনের চিৎকারের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকে টর্চ জ্বালানি উদ্ধারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।

সরেজমিনে রাত ১০টায় গিয়ে দেখা যায়, আগুনের তীব্রতা তখন কিছুটা কমে এসেছে। তবে ধোঁয়া অনেক। এ জন্য ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। ঘটনাস্থলের পাশে একাধিক অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওই ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত তিনজনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ৭ম তলায় আগুন লাগলেও তা ১১ তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি টিম হেলিকপ্টারের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন।

ভবনটিতে বসবাসকারীরা বলছেন, আগুন লাগার পর অনেকেই ভবনের ভেতরে আটকা পড়েন। 

৭ম তলায় আগুন লাগলেও তা ১১ তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকাওই ভবনের নিচে থাকা সুলেমান চৌধুরী নামের একজন জানান, তাঁর ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ফোন দিয়ে বলেন, ‘ভাইয়া আমি ১১ তলায় আটকে পড়েছি। আমার সঙ্গে আরও মানুষ আছে। দ্রুত লোক পাঠিয়ে আমাদের বাঁচান, প্লিজ!’

সুলেমানের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ভবনটির পাঁচতলায় থাকেন। সঙ্গে তাঁর স্বামীও থাকেন। তবে স্বামী বর্তমানে বিদেশ রয়েছেন। ছোট ভাইয়ের স্ত্রী পেশায় চিকিৎসক। সুলেমান চৌধুরী আরও বলেন, কিছুক্ষণ আগে ফোন করে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী জানান, আগুন লাগার সময় তিনি ভবনের ৫ম তলায় ছিলেন। আগুন লাগার পর ধোঁয়ার কারণে নিচে নামতে পারেননি। জীবন বাঁচাতে ওপরে চলে গেছেন। 

রাত পৌনে ১০টার দিকে মনির নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, তাঁর তিনজন আত্মীয় ভবনটির ১১ তলায় আটকে আছেন। ভেতরে আগুন ও ধোঁয়ার কারণে তারা বের হতে পারছেন না। 

আগুন লাগার পর ঘটনাস্থলে ছুড়ে আসেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। 

গুলশান থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আবাসিক ওই ভবনে অনেক পরিবার বসবাস করে। ভবন থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। ভবনের বিভিন্ন তলায় অনেকে আটকা পড়েছেন। তাঁদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত