Ajker Patrika

সাটুরিয়ায় সেতুর অভাবে চরম ভোগান্তিতে ৪ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ

প্রতিনিধি, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ)
সাটুরিয়ায় সেতুর অভাবে চরম ভোগান্তিতে ৪ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ

মানিকগঞ্জ সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের ধলেশ্বরী নদীতে সেতু নির্মাণ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ৪ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। প্রতিদিন এ খেয়াঘাট দিয়ে হাজারের অধিক মানুষ পারাপার হচ্ছে। রাতে খেয়া বন্ধ থাকায় কেউ অসুস্থ হলে তাঁদের নিয়ে পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। দ্রুত হাসপাতালে নিতে না পারায় মারা যাচ্ছেন অনেকে। সেতু নির্মাণের জন্য অনেকবার মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। তবুও নির্মিত হয়নি সেতু। 

ধলেশ্বরী নদী তিল্লি ইউনিয়নকে তিন ভাগে বিভক্ত করেছে। আর বরাইদ ইউনিয়নকেও করেছে দ্বিখণ্ডিত। তাই নদীর এপার ও ওপারের মানুষসহ ৪ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ সীমাহীন কষ্টে রয়েছে। ইঞ্জিন চালিত খেয়া পারের আশায় ভোর থেকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে দুই পারের মানুষ। 

আজ সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সাটুরিয়ার রাজৈর খেয়াঘাটে মানুষ পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছে। এদের মধ্যে কৃষক শ্রেণির মানুষই বেশি। কাঁচামাল ও দুধ মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে খেয়া পারের জন্য। একবার খেয়ায় না উঠতে পারলে ঘাটে অপেক্ষা করতে হয় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। খেয়াঘাটের দুই পারেই রয়েছে সাপ্তাহিক হাট বাজার। হাট বাজারে সকালে চরাঞ্চলের মানুষ গাভির দুধ ও কৃষি পণ্য বিক্রি করতে আসেন। গোপালপুর রাজৈর খেয়াঘাট দিয়ে টাঙ্গাইলের নাগরপুর, সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর ও ঘিওর উপজেলার মানুষজন পারাপার হয়। এ ছাড়া গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়, ফয়জুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়, দরগ্রাম সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসা, আব্দুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়, দরগ্রাম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, সাটুরিয়া সৈয়দ কালুশাহ ডিগ্রি কলেজ, দরগ্রাম সরকারি ভিএম কলেজের ছাত্রছাত্রীরা পারাপার হয়। 

রাজৈর গ্রামের লিয়াকত আলী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, `দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছরেও এই জেলায় কত এমপি মন্ত্রী হলো তবুও এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলো না। আর কত বছরে আমাদের দুঃখ ঘুচবে? আমাদের বয়স ত শেষই। কিন্তু সেতু দেখে যেতে পারলাম না। নাতি পুতী যদি দেখে যেতে পারত তবুও কবরে গিয়ে শান্তি পেতাম।' 

সাটুরিয়ার রাজৈর খেয়াঘাটে নৌকা থেকে নামছেন মানুষগোপালপুর গ্রামের যুবক মো. আপেল মাহমুদ চৌধুরী জানান, সেতুটি হলে সাটুরিয়া দরগ্রাম সড়ক দিয়ে দৌলতপুর, ঘিওর, টাঙ্গাইলের নাগরপুর ও সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন হবে। সেই সঙ্গে সময়ের স্বল্পতা কমে আসবে। এ ছাড়া ব্যবসা বাণিজ্য আরও সমৃদ্ধি পাবে। উপকার হবে ছাত্র ছাত্রী, কৃষক ও সাধারণ মানুষের। 

বরাইদ ফয়জুনেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মজিবুর রহমান জানান, শিক্ষার্থীরা অনেক সময় তাড়াহুড়া করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পার হয়। এতে নৌকা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ভরা মৌসুমে নদীতে একাধিক রার খেয়া পারাপারের সময় নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে বলেও জানান তিনি। 

সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশল এ এফ এম তৈয়াবুর রহমান বলেন, `৩৪০ মিটার সেতুটির আনুমানিক নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭ কোটি টাকা। সেতুটি নির্মাণ করার জন্য এলজিইডি প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে নদীর ভূগর্ভের মাটির নমুনা পরীক্ষা করেছে। কিন্তু প্লানিং মিনিস্ট্রি কেন ছাড়ছেন না তা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা হবে।' 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত