Ajker Patrika

লিবিয়ার বন্দী মাদারীপুরের ৩ তরুণের খোঁজ মিলছে না

মাদারীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ২২: ৪১
জিম্মি মারুফ হোসেন, মহিউদ্দিন মোড়ল ও সোলায়মান আকন। ছবি: সংগৃহীত
জিম্মি মারুফ হোসেন, মহিউদ্দিন মোড়ল ও সোলায়মান আকন। ছবি: সংগৃহীত

উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে লিবিয়া হয়ে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয় মাদারীপুর সদরের মধ্য হাউসদী এলাকার তিন তরুণকে। ছয় মাস আগে ইতালির উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন তাঁরা। লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর প্রথম কিছুদিন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও গত দুই মাস কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁদের।

এদিকে লিবিয়ায় পৌঁছার পর ভুক্তভোগী তিন তরুণের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। দালালদের খপ্পর থেকে বাঁচাতে পরিবার থেকে ধাপে ধাপে দেওয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা। কিন্তু এরপরও ওই তিন যুবকের খোঁজ না পাওয়ায় শঙ্কায় দিন কাটছে তাঁদের স্বজনদের।

নিখোঁজ তিনজন হলেন মাদারীপুর সদরের মধ্য হাউসদী গ্রামের বাবুল ফকিরের ছেলে মারুফ হোসেন (২০), তাঁর ভাগনে মহিউদ্দিন মোড়ল (২০) এবং একই এলাকার সোলায়মান আকন (২০)।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র বলেছে, মাদারীপুর সদরের হাউসদী এলাকার স্থানীয় দালাল বাবুল মাতুব্বর এবং একই এলাকার হাওয়া বেগম ওই তিন তরুণকে লিবিয়া হয়ে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখান। গত দুই মাস ওই তিন তরুণের খোঁজ না পেয়ে তাঁদের পরিবার দালাল হাওয়া ও বাবুলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে। এরপরও সন্ধান পাননি পরিবারের লোকজন। উল্টো দালালেরা বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিখোঁজ সোলায়মান আকনের মা সালমা আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলেকে লিবিয়ায় আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এর পর দফায় দফায় মুক্তিপণের টাকা আদায় করা হয়। কয়েক দফায় বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে মোট ৩৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এরপরও ছেলের সন্ধান পাইনি। উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দিচ্ছেন দালাল হাওয়া ও বাবুল মাতুব্বর।’

দুই দালাল বাবুল মাতুব্বর ও হাওয়া বেগম। ছবি: সংগৃহীত
দুই দালাল বাবুল মাতুব্বর ও হাওয়া বেগম। ছবি: সংগৃহীত

নিখোঁজ মারুফের বাবা এবং অপর নিখোঁজ মহিউদ্দিন মোড়লের মামা বাবুল ফকির বলেন, ‘স্থানীয় দালাল হাওয়া বেগম ও বাবুল মাতুব্বর ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখান। পরে লিবিয়াতে নিয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করেন। আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে দালাল চক্র। এরপরও সন্ধান পাইনি ছেলে ও ভাগনের।’

এই ঘটনায় অভিযুক্ত দালাল হাওয়া বেগম ও বাবুল মাতুব্বরের সঙ্গে কথা বলতে বাড়িতে গেলে তাঁদের পাওয়া যায়নি। বাবুল মাতুব্বর মাদারীপুর শহরের চরমুগুরিয়া বন্দর শাখা সোনালী ব্যাংকে কর্মরত। তবে মামলার পর দীর্ঘদিন সেখানে তিনি অনুপস্থিত বলে জানা গেছে।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেন বলেন, ‘দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হুমকি দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত