Ajker Patrika

বন্ধু পরিচয়ে মায়ের মৃত্যুর কথা বলে হাতাতেন টাকা, পুলিশ এলেই ঢুকে পড়তেন ভারতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২: ৩৬
Thumbnail image

অপরিচিত নম্বর থেকে কল দিয়ে বন্ধু বলে পরিচয় দিয়ে কুশল বিনিময় করেন। কোন বন্ধু জিজ্ঞেস করলে উল্টো প্রশ্ন করেন, ‘তোর কোন বন্ধু বিদেশ থাকে বল।’ তখন বিদেশ থাকা কোনো বন্ধুর নাম বললেই নিজেকে সেই পরিচয় দেন। এরপর হাসপাতালে মায়ের মৃত্যুর কথা বলে টাকা চান।

টাকা চাওয়ার পাশাপাশি নেন অন্য বন্ধুদের ফোন নম্বর। সবার সঙ্গে এভাবেই কথা বলে অনুরোধ করে হাতিয়ে নিতেন টাকা। এমনই এক প্রতারককে গতকাল রাজধানীর কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে দুর্জয় (২৭)। কখনো কখনো প্রতারণার কাজে নিজেকে জিনের বাদশা বলেও পরিচয় দিতেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, গত ৫ জানুয়ারি মো. আমির হোসাইন মোল্লাসহ তাঁর দুই বন্ধুকে মোবাইল ফোনে প্রতারক সাইফুল কল দেন। এরপর নিজের সেই কৌশল খাঁটিয়ে বন্ধু পরিচয় দেন। এরপর নিজের মায়ের মৃত্যু সংবাদ জানান এবং জরুরি ভিত্তিতে বিকাশে টাকা পাঠানোর অনুরোধ করেন। বন্ধুর মায়ের মৃত্যুসংবাদ শুনে তাঁরা তিন বন্ধু মিলে তৎক্ষণাৎ এক লাখ ৬৯ হাজার টাকা পাঠান। পরে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ডিএমপির সবুজবাগ থানায় অভিযোগ করলে প্রতারক সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবি প্রধান বলেন, তাঁর বাড়ি নীলফামারী জেলার ডোমার থানাধীন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার প্রত্যন্ত একটি গ্রামে। সেখান থেকেই প্রতারণা করতেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেলে তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের অংশে চলে যেতেন। প্রায় ১০ বছর যাবৎ এভাবেই প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি। এই কাজে তাঁর কয়েকজন সহযোগীও আছে। যাদের একটি গ্রুপ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে মোবাইল ফোন চুরি করে এবং আরেকটি গ্রুপ বিভিন্ন এলাকায় বিকাশের দোকান থেকে প্রতারণার মাধ্যমে পাওয়া টাকা ওঠান।

হারুন অর রশীদ বলেন, গত ১০ বছরে প্রতারক সাইফুল কতজনকে প্রতারিত করেছে তা জানা না গেলেও গত ৬ মাসে শতাধিক সিমকার্ড ব্যবহার করে প্রায় ২ হাজার ৫০০ জনকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ফোন দেন। তাঁদের অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে টাকা দিয়েছেন। প্রতারণার কাজে চুরি করা ফোন ব্যবহার করতেন।

নীলফামারীতে জিনের বাদশা নামেও পরিচিত সাইফুল। এর আগেও একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, ছিনতাই ও প্রতারণাসহ ৯টি মামলা রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত