Ajker Patrika

গাজীপুরে কারখানায় অসুস্থ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, বিক্ষোভ-ভাঙচুর

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে কারখানায় অসুস্থ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু,  বিক্ষোভ-ভাঙচুর

গাজীপুর মহানগরীর যোগীতলা এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করার সময় এক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। এ নিয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা একই মালিকের অপর একটি কারখানায় ভাঙচুর করেছে। অভিযোগ উঠেছে কারখানার অবহেলার কারণে ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

আজ রোববার সকালে অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেড কারখানার সুইং সেকশনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মৃত শ্রমিকের নাম শাহ আলম। তার বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার মুসল্লিপাড়া এলাকায়। তিনি গাজীপুর মহানগরীর যোগীতলা এলাকায় আলফাজের বাড়িতে ভাড়া থেকে ওই কারখানায় চাকরি করতেন।

কারখানার শ্রমিকেরা জানান, রোববার সকালে ওই কারখানার সুইং সেকশনের আয়রনম্যান শাহ আলম (৩৩) কাজ করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে কারখানার চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে দায়িত্ব পালনকারী নার্স মিতু আক্তার অসুস্থ শ্রমিকতে চিকিৎসা না দিয়ে কাজ করতে বলেন। এর কিছুক্ষণ পর শ্রমিকের অবস্থা আরও খারাপ হলে ওই নার্স শাহ আলম স্ট্রোক করেছেন জানিয়ে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

শ্রমিকেরা অভিযোগ করেন, তাঁরা শাহ আলমকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য গাড়ি চাইলে কারখানা কর্তৃপক্ষ গাড়ি দিতে অনীহা প্রকাশ করে। পরে শ্রমিকেরা তাঁকে অটোরিকশায় করে তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহ আলমকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা যায়, শাহ আলম মারা যাওয়ার পর কারখানার কর্তৃপক্ষ তাঁকে সঠিক সময়ে চিকিৎসা দেয়নি। তাদের অবহেলায় বিনা চিকিৎসায় শাহ আলম মারা গেছেন। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকদের মাঝে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরপর তাঁরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা একই মালিকের পার্শ্ববর্তী টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার গেট ও জানালার কাচ ভাঙচুর করেন। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ঢাকা বাইপাস সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। এ সময় গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও জিএমপির বাসন থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। এ সময় শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। পরে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ সময় শ্রমিকদের ইটের আঘাতে গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক এনামুল হক আহত হন। তাঁকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মালেক খসরু খাঁন জানান, মৃত শ্রমিকের বোন ও ভগ্নিপতি শাহ আলম স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁরা শাহ আলমের মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। বর্তমানে কারখানার পরিবেশ শান্ত রয়েছে।

ওসি আরও জানান, আগামীকাল সোমবার মালিক পক্ষ শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনা করবেন কেন, কি কারণে শ্রমিক বিক্ষোভ হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত