Ajker Patrika

পাওনা চাইতে গিয়ে চুরির অপবাদে মারধরের শিকার, এক সপ্তাহ পর মৃত্যু

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
আপডেট : ২৩ মে ২০২৫, ১৮: ৪৯
মারা যাওয়া আনোয়ার হোসেনের স্বজনের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা
মারা যাওয়া আনোয়ার হোসেনের স্বজনের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে পাওনা টাকা চাইতে গেলে চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করা এক ব্যক্তি এক সপ্তাহ পর মারা গেছেন। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের পোষাইদ গ্রামে তিনি মারা যান।

ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন (৫০) পোষাইদ গ্রামের মো. সাইদুর রহমানের ছেলে। স্বজনদের দাবি, পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে তিনি দুই দফা মারধরের শিকার হয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন একই গ্রামের মো. কাজল মিয়া, শাহিন, কবির হোসেন ও আকরাম হোসেন।

আনোয়ারের ছেলে রিয়াদ হোসেন বলেন, ‘কাজল বাবার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা ধার নিয়েছে। পাওনা টাকা চাইতে পরপর কয়েক দিন তাদের বাড়িতে যায় বাবা। কিন্তু কাজল টাকা দিতে গড়িমসি শুরু করে। এই ক্ষোভে বাবা আমাদের বাড়ির পাশে বেঁধে রাখা কাজলের একটি মহিষ নিয়ে রওনা করে। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে কাজল খবর পেয়ে দৌড়ে এসে বাবাকে ধরে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। অভিযুক্ত কাজলের ছেলে শাহিন বাবাকে মারতে মারতে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে শাহিন বাবার বুকে ওঠে লাফিয়ে আঘাত করতে থাকে। এরপর আমাদের খবর দিলে আমরা তাদের বাড়িতে গেলে সালিসি বৈঠক বসে। জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সই-স্বাক্ষর নিয়ে বাবাকে আমাদের হাতে তুলে দেয়। এরপর বাবার চিকিৎসা করি। বাবা শুধু বলতেন বুকে প্রচণ্ড ব্যথা হতো। আজ বাবা মারা গেছে। আমরা তাদের হুমকির ভয়ে বাবাকে ভালো চিকিৎসাও করাতে পারিনি। বাবা মৃত্যুর আগে সবকিছু বলে গেছে। আমি বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাই।’

স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘টাকা লেনদেনের বিষয়টি সঠিক। এর জেরে পাশের মাঠে বেঁধে রাখা কাজলের মহিষ নিয়ে যেতে চেষ্টা করেন আনোয়ার হোসেন। এটা হয়তোবা ভয় দেখানোর জন্য। চুরি করা তাঁর উদ্দেশ্য না। তিনি তো চোর না। এরপর কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে কাজল খবর পায় আনোয়ার হোসেন মহিষ নিয়ে যাচ্ছেন। এমন খবর পেয়ে কাজল ও তার লোকজন এসে তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। শুনেছি হালকা মারধর করেছে।’

সালিসে উপস্থিত থাকা স্থানীয় আরেক বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ‘জানতে পারি, আনোয়ার হোসেন কাজলের কাছে ৬০ হাজার টাকা পাবে। সেই কারণে মহিষ নিয়ে রওনা করলে তারা ধরে আনে। এরপর সালিসি বৈঠক বসে সমাধানের পর আনোয়ার হোসেনকে নিয়ে যায় তার স্বজনেরা। কেমন মারধর করছে, এটা তো আমি বলতে পারব না। মারধরের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে কি না, এটাও বলতে পারব না।’

জানতে চাইলে কাজল বলেন, ‘সে আমার কাছে ৬০ হাজার টাকা পাবে, এটা সঠিক। আমি টাকা দিয়ে দেব বলছি। তবু বাড়ি থেকে চলে গিয়ে মাঠে বেঁধে রাখা মহিষ নিয়ে রওনা হয়। আমরা দৌড়ে গিয়ে তাকে আটক করি। মারধর করিনি। এটি মিথ্যা অভিযোগ। এরপর সালিস বৈঠক বসে ওখানেই সমাধান হয়।’

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে পাওনা টাকা ও মহিষ-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটে। সে বিষয়ে সালিস বৈঠকে মীমাংসা হয়। আজ ভুক্তভোগী মারা যাওয়ার পর অভিযোগ করেছে যে মারধরের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনা যাঁকে ঢাকায় ‘হত্যা করলেন’, তিনি ময়মনসিংহে জীবিত!

নগদে স্ত্রীর চাকরি, স্বার্থের সংঘাতে জড়ালেন নাহিদের সাবেক পিএ আতিক মুর্শেদ

জীবিত ভাইকে জুলাই আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মামলায় সাক্ষীও দুই ভাই, নেপথ্যে যা জানা গেল

যুক্তরাষ্ট্রে সি চিন পিংয়ের মেয়েকে বহিষ্কারের দাবি, হঠাৎ কেন এই বিতর্ক

পেট্রল-অকটেন-ডিজেলের দাম কমল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত