Ajker Patrika

কারাগারে হামলা মামলায় বন্দীকেও আসামি, বাদী দুষলেন পুলিশকে

গোপালগঞ্জ সংবাদদাতা
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে হামলার ঘটনায় করা মামলার আসামিদের অধিকাংশকেই চিনেন না বাদী। অপরদিকে বন্দী ব্যক্তিকেও এই মামলার আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। বেশ কয়েকজনের নাম মামলায় একাধিকবার উল্লেখ করা হয়েছে। বাদী বলছেন, কিছু আসামিকে ভিডিও ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয়েছে, অন্যদের নাম সদর থানা থেকে দেওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাতে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১৬১ জনকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আরও ৯০০ থেকে ১০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করলে বেলা ১টার দিকে বন্দীদের লকাপ করে দেওয়া হয়। ১টা ৪৫ মিনিটে এনসিপির নেতারা সমাবেশ শেষ করে ফেরার পথে এজাহারনামীয় আসামিসহ ৯০০ থেকে ১ হাজারজন শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় তাঁদের ওপর হামলা চালান।

এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে আসামিরা লঞ্চঘাট বটতলা ও মডেল মসজিদের সামনে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে বেলা ৩টার দিকে আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জেলা কারাগারে হামলা চালান। এতে বেশ কয়েকজন কারারক্ষী গুরুতর আহত হন। এ ছাড়া জেলা কারাগারের বিভিন্ন মালামাল, গাড়িসহ স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে মামলার ৮৫ নম্বর আসামি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম এম নাসির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমরা সব আইনজীবী জেলা জজের খাস কামরায় অবস্থান করছিলাম। সেখানের সিসিটিভি ফুটেজও হয়তো রয়েছে। তারপরও আমাদের কেন আসামি করা হলো, বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। আমাদের মোট ১২ জন আইনজীবীকে আসামি করা হয়েছে।’

মামলার ৬৬ নম্বর আসামি তোরাব আলী সরদার বর্তমান জেলা কারাগারে বন্দী রয়েছেন। বন্দী থেকেও তিনি কারাগারে হামলার মামলায় আসামি হয়েছেন। এ বিষয়ে তাঁর স্ত্রী লিয়ামনি বলেন, ‘আমার স্বামী গত ২৪ মে থেকে কারাগারে বন্দী রয়েছেন। গতকাল শুনলাম ১৬ জুলাই কারাগারে যে হামলা হয়েছে, সেই মামলার আসামি করা হয়েছে আমার স্বামীকে। কারাগারে বন্দী থেকেও কীভাবে আমার স্বামী হামলা করল, আমরা বুঝি না।’

জানতে চাইলে বাদী গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার (ভারপ্রাপ্ত) তানিয়া জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা সিসিটিভি দেখে কিছু নাম দিয়েছি। বাকি নাম সদর থানা থেকে দেওয়া হয়েছে। আপনি সদর থানায় যোগাযোগ করেন। আমরা যে কয়েকজনকে শনাক্ত করতে পেরেছি, সেই কয়জনের নাম দিয়েছি।’

তোরাব আলী সরদার কারাগারে বন্দী থেকেও কীভাবে মামলার আসামি হলেন—জানতে চাইলে তানিয়া জামান বলেন, ‘তোরাব আলী সরদারের নাম তো আমি দিইনি। আমি যে কয়জনকে শনাক্ত করতে পেরেছি, সে কয়েকজনের নাম দিয়েছি।’

১২ আইনজীবীকে আসামি করার বিষয়ে তানিয়া জামান বলেন, ‘সেটাও সদর থানা-পুলিশ জানে। কারণ, মামলার সবাইকে তো আর আমি চিনি না। সবাইকে চেনাও আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ আমাদের কারারক্ষীরা দেখে শনাক্ত করে বেশ কয়েকজনের নাম দিয়েছে, আমি তাদের নাম দিয়েছি। মামলার ১৬১ জনকে আমি চিনি না বা আমার পক্ষে চেনা সম্ভব নয়।’

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ চলাকালে জেলা কারাগারে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান বাদী হয়ে ১৬১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৯০০ থেকে ১০০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এর বেশি আর কিছু বলতে পারব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ওসি হয়েও আমার কম দামি ফোন, দামি ফোন নিয়ে ঘুরলে ছিনতাই তো হবেই’, ভুক্তভোগীকে মোহাম্মদপুরের ওসি

মোহাম্মদপুর থানায় ভুক্তভোগীকে হেনস্তা: চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার, ৩ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

এনসিপির পদযাত্রা উপলক্ষে ‘স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত’, প্রধান শিক্ষকের দুই রকম বক্তব্য

হিন্দু মন্দির নিয়ে কেন সংঘাতে জড়াল বৌদ্ধ-অধ্যুষিত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মহড়া শুরু, চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত