Ajker Patrika

সেনাসদস্য পরিচয়ে এক ব্যক্তি বাড়ি ভাড়া করে দেন আরসা নেতা আতাউল্লাহকে

সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ 
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ভূমিপল্লী আবাসন এলাকায় এই বাড়িতে ভাড়া ছিলেন আরসার নেতা আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি। ছবি: আজকের পত্রিকা
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ভূমিপল্লী আবাসন এলাকায় এই বাড়িতে ভাড়া ছিলেন আরসার নেতা আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ভূমিপল্লী আবাসন এলাকায় চার মাস আগে বাসা ভাড়া নিতে আসেন আরসার প্রধান আতাউল্লাহ। বাড়ির মালিকদের কাছে চট্টগ্রামের মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। জাতীয় পরিচয়পত্র ‘দিই, দিচ্ছি’ করে সময়ক্ষেপণ করেন তিনি। এরই মধ্যে র‍্যাবের জালে গ্রেপ্তার হওয়ায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছে আরসা নেতার ভাড়া করা বাড়ি দেখতে।

১৭ মার্চ রাত ৩টায় ভূমিপল্লী আবাসিক এলাকার ৬ নম্বর সড়কের একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আরসা নেতা আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনিকে। দশতলা বাড়িটির আটতলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়ায় বসবাস করতেন। ফ্ল্যাটের মালিক ইতালিপ্রবাসী। তাঁর অবর্তমানে একজন কেয়ারটেকার ফ্ল্যাটের দেখভাল করেন।

আজ বুধবার সরেজমিনে খোঁজ নেওয়া হয় আরসা নেতা আতাউল্লাহর বিষয়ে। এলাকার লোকজন বিশ্বাস করতে পারছে না একটি রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রধান এই বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করবেন। কারণ, গত চার মাসে যাঁরা তাঁকে দেখেছেন, তাঁরা বলেছেন, খুব সাধারণ জীবন যাপন করেছেন। কারও কারও চোখে তাঁকে শারীরিক অসুস্থ বলেও মনে হয়েছে।

বাড়িটির তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটের মালিক হুমায়ুন কবীর। চার মাস আগে তাঁর ফ্ল্যাটে প্রথম ভাড়া ওঠেন আতাউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘মাস চার আগে আমার কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, সে সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। তার বাসার একজন অসুস্থ ভাড়াটিয়া নতুন বাসা খুঁজছে। আমি সেনাবাহিনীর সদস্যের কথা শুনে বিশ্বাস করে ফেলি। সেই লোক আদৌ সেনাবাহিনীর কি না, তা যাচাই করা হয়নি। এরপর আতাউল্লাহ বাড়িতে উঠলে দুজন সাংবাদিক পরিচয়ে লোক আসে তার নতুন ফ্ল্যাট দেখার জন্য। তাদের চেহারা ছিল চাকমাদের মতো। এসব কারণে তাকে অপরাধী ভাবার চিন্তা মাথায় আসেনি।’

হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, ‘আমার বাসায় এক মাস ১০ দিন ছিল। এনআইডির কপি চাইলে দিই, দিচ্ছি করে ঘুরায়। এরপর বলে, তাঁর পরিবার বড়, আমার ছোট ফ্ল্যাটে হবে না। সে আমার ফ্ল্যাট ছেড়ে আটতলার বড় ফ্ল্যাটে গিয়ে ওঠে।’

বাড়ির কেয়ারটেকার ইমরান বলেন, ‘আতাউল্লাহর বাসায় ৮-১০ জন থাকত। তিনতলার বাসায় ভাড়া দিত ১১ হাজার, আর আটতলার বাসায় ২০ হাজার টাকা। ঘর থেকে খুব বেশি বের হতো না। লাঠিতে ভর করে চলাফেরা করত।’

আতাউল্লাহর ফ্ল্যাটে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছিলেন স্থানীয় ইলেকট্রিশিয়ান সোহাগ। তিনি বলেন, ‘আমাকে ড্রিল করার জন্য বাসার ভেতরে নিয়েছিল। ভেতরের অবস্থা খুবই সাধারণ। ঘরের ভেতরে জাঁকজমক বা আভিজাত্যের কিছু ছিল না।’

আতাউল্লাহসহ তাঁর ৫ অনুসারীকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘র‍্যাবের দায়ের করা মামলায় তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, রিমান্ডে তাদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত