Ajker Patrika

নারায়ণগঞ্জে কনস্টেবল নিয়োগে জালিয়াতি অমার্জনীয়: টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২: ৪৫
নারায়ণগঞ্জে কনস্টেবল নিয়োগে জালিয়াতি অমার্জনীয়: টিআইবি

নারায়ণগঞ্জে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ(টিআইবি)। এ ঘটনায় অধস্তন কর্মকর্তাদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে টিআইবির পক্ষ থেকে এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত উচ্চপদস্থসহ সকলের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জানানো হয়েছে। আজ রোববার টিআইবির পক্ষ থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে জেলা কোটায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই এবং পুলিশ ভ্যারিফিকেশন রিপোর্টে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতি হয়েছে, যা ২০২০ সালে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের এক তদন্তে উঠে এসেছে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই তদন্ত রিপোর্টের তথ্যে দেখা যায়, নিয়োগপ্রাপ্ত কনস্টেবলদের অন্তত ১৮ জনের বিরুদ্ধে ভুয়া ও জাল কাগজপত্র দাখিল করে চাকরিতে নিয়োগের প্রমাণ মিলেছে। এমনকি স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার প্রমাণপত্র হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন ৫জন একই নিবন্ধন নম্বরের জমির দলিল প্রদান করেছে এবং অন্তত ১১ জন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ২৩ দিন পর একই তারিখে, হুবহু একই মৌজা, দাগ ও খতিয়ানে একই সিএস, এসএ ও আরএস নম্বরে নিবন্ধিত জমির দলিল জমা দিয়েছে, যা আদতে অসম্ভব ও অবিশ্বাস্য! অথচ যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে গেছেন কিংবা গোপন করে ইতিবাচক রিপোর্ট প্রদান করেছেন, যা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সরাসরি সম্পৃক্ততা ছাড়া সম্ভব নয় বলেই ধারণা করা যায়।

এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ড. জামান বলেন, পুলিশের চাকরিতে ভুয়া ও জাল কাগজপত্র দাখিলের পরও মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়োগের কোনো  নৈতিক বা আইনগত ভিত্তি ও সুযোগ নেই। তাই সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার কি উদ্দেশ্যে এমন নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে, অবিলম্বে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে তার সুরাহা হওয়া দরকার। একই সঙ্গে এই নিয়োগে কোনো  অবৈধ অর্থের লেনদেন হয়েছিল কি-না  সেটিও খতিয়ে দেখতে হবে। সংশ্লিষ্ট উচ্চপদে অধিষ্ঠিত থেকে অধস্তন কর্মকর্তাদের ওপর দোষ চাপিয়ে নিজেকে দায়মুক্ত প্রমাণের চেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ ও অগ্রহণযোগ্য। এ প্রসঙ্গে বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক ‘কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না মর্মে ১৪ সেপ্টেম্বর যে অঙ্গীকার করেছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে টিআইবি মনে করে।’

প্রকাশিত এই ঘটনা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীতে নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির বহুল প্রচারিত ‘কথিত গুজব’-এর প্রমাণ হিসেবে দেখা যেতে পারে মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতির কথা শোনা গেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা স্বীকার করা হয় না। তাই নারায়ণগঞ্জের এই ঘটনা ‘হিমশৈলের চূড়ামাত্র’ এ কথা বলা অত্যুক্তি হবে না। এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে ভবিষ্যতে এই ধরনের অনিয়মের বেপরোয়া পুনরাবৃত্তি রোধ সম্ভব হবে না এবং অপরাধীরা আরও দুঃসাহসী হয়ে উঠবে; যা চূড়ান্ত বিচারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর জনগণের বিশ্বাস ও আস্থার সংকট আরও প্রকট করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত