Ajker Patrika

অস্ত্রের সঙ্গে গুলির অমিল, থমকে গেল প্রশিক্ষণ

  • গেজেটে গুলি ৯ মিমি, বাস্তবে ৭.৬২
  • প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে হতাশা ও বিস্ময়
  • শটগানসহ বিকল্প অস্ত্রেরও দাবি
  • গেজেট সংশোধন হলেই সমাধান: কর্মকর্তা
 শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১০: ৪৪
অস্ত্রের সঙ্গে গুলির অমিল, থমকে গেল প্রশিক্ষণ

১৩ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অবশেষে অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছেন। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ বাস্তবে রূপ নেওয়ার দ্বারপ্রান্তে এসে ঘটেছে বিপত্তি। প্রশিক্ষণ শুরুর মাত্র পাঁচ দিন আগে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আপাতত বন্ধ থাকছে কর্মকর্তাদের অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ। বলা হচ্ছে ‘গেজেটের ভাষার অসংগতি’ই এর কারণ।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৫ দিন মেয়াদি প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছিল। কোর্সটি শুরু হওয়ার কথা ছিল ১৫ এপ্রিল। প্রথম ধাপে ৮০ জন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। অংশগ্রহণকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট ও ব্যক্তিগত সরঞ্জাম নিয়ে ১৪ এপ্রিল একাডেমিতে উপস্থিত হতে বলা হয়। এ প্রশিক্ষণের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা।

কিন্তু কর্মকর্তাদের বহুল প্রতীক্ষিত এই প্রশিক্ষণের আয়োজন থমকে যায় গেজেটের বিবরণে অস্ত্র ও গুলির মধ্যে অসংগতির কারণে। গেজেটে বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ব্যবহার করবেন ৯ মিমি সেমি-অটোমেটিক টি-৫৪ পিস্তল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অনুমোদিত সেমি-অটোমেটিক টি-৫৪ পিস্তলে ব্যবহৃত হয় ৭.৬২ বোরের গুলি। অস্ত্র ও গুলির মধ্যে এই অমিলের বিষয়টি প্রশিক্ষণ শুরুর কয়েক দিন আগে ধরা পড়ে। গেজেটের এই অসংগতি চিহ্নিত করে পুলিশ একাডেমি আপত্তি জানায়। বাধ্য হয়ে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ স্থগিত করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

প্রশিক্ষণ স্থগিত হওয়ার এ ঘটনায় বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করেছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, এত বছর ধরে অপেক্ষার পর এভাবে প্রশিক্ষণ স্থগিত হওয়ার বিষয়টি কাম্য নয়। কেউ কেউ বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, অস্ত্র বরাদ্দের গেজেট প্রস্তুতকরণ কমিটির প্রধান ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং অস্ত্র বিষয়ে অভিজ্ঞ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস) তানভীর মমতাজ। তিনি এতে যুক্ত থাকার পরও কীভাবে এমন একটি ভুল হলো, সেটা তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না।

পরিচালক (অপারেশনস) তানভীর মমতাজ অবশ্য বিষয়টিকে ‘ছোটখাটো সমস্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন।

আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘এখানে বড় কোনো ভুল হয়নি, সব ঠিকঠাকই আছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশ সদর দপ্তরকে নির্দেশ দিলেই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আবার শুরু করা যাবে।’

পুলিশ একাডেমির পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, গেজেট সংশোধন হলেই প্রশিক্ষণ আবার শুরু করা যাবে। একাডেমির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পুলিশ সুপার মাহমুদা আফরোজ লাকী বলেন, ‘সবই ঠিকঠাক ছিল। শুধু গুলির সঙ্গে অস্ত্রের অমিল থাকায় পুলিশ সদর দপ্তরকে জানিয়েছি। তারা নির্দেশ দিলে প্রশিক্ষণ আবার শুরু করা যাবে। আমরা প্রস্তুত আছি।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত পদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘মাদকসংশ্লিষ্ট অপরাধীরা প্রায়ই সশস্ত্র থাকে। তারা বেপরোয়া। অনেক সময় আমাদের নিরস্ত্র সদস্যদের আহত হতে হয়। তাই দ্রুত অস্ত্র হাতে পাওয়া ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সেই অস্ত্র ব্যবহার শেখার বিষয়টি পিছিয়ে গেল।’

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, পুরো বিষয়টি এখন নির্ভর করছে গেজেট সংশোধনের ওপর। তাঁরা বলছেন, গেজেট সংশোধন করে আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠাতে হবে। এরপর পুলিশ সদর দপ্তর রাজশাহীর একাডেমিকে জানালে আবার শুরু হবে অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ। জানা গেছে, সংশোধিত গেজেটে অস্ত্র হিসেবে লেখা থাকবে ৯ মিমি সেমি-অটোমেটিক পিস্তল। কোনো নির্দিষ্ট মডেলের নাম থাকবে না।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের নভেম্বরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উপপরিদর্শক থেকে উপপরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অস্ত্র ব্যবহার বিষয়ে একটি নীতিমালা অনুমোদন করেন। এতে বলা হয়, মাদকবিরোধী অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা সেমি-অটোমেটিক টি-৫৪ পিস্তল ব্যবহার করতে পারবেন। তবে গুলি চালানোর বিষয়টি কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা হয়। প্রথমে দুটি ফাঁকা গুলি ও সরাসরি একটি গুলি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়। এরপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলেই কেবল আবার গুলি করা যাবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে বর্তমানে ৯০ জন উপপরিচালক, ৯৩ জন সহকারী পরিচালক, ১৮৬ জন পরিদর্শক ও ২১০ জন উপপরিদর্শক রয়েছেন, যাঁরা এই নীতিমালার আওতায় অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন।

এদিকে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁদের জন্য বরাদ্দ হওয়া অস্ত্রটি প্রাণঘাতী। তাঁদের মতে, অভিযানের সময় পরিস্থিতি অনুযায়ী বিকল্প অস্ত্রের ব্যবস্থাও থাকা উচিত। এই কর্মকর্তারা রাবার বুলেটের শটগানসহ অন্য বিকল্প অস্ত্র ব্যবহারেরও অনুমতি চেয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাংনীতে কারেন্ট পোকার আক্রমণে কৃষকের সর্বনাশ: ভেজাল কীটনাশকের অভিযোগ

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর) 
উপজেলার তেরাইল-দেবীপুর মাঠের কৃষক মিরাজুল ইসলামের ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে গতকাল সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলার তেরাইল-দেবীপুর মাঠের কৃষক মিরাজুল ইসলামের ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে গতকাল সকালে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কার্তিকের এই সময়ে যখন কৃষকের মাঠভরা ধান দেখে আনন্দের নিশ্বাস ফেলার কথা, তখন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর-তেরাইল মাঠের রোপা আমনচাষি মিরাজুল ইসলামকে হতাশা নিয়েই ছুটতে হচ্ছে মাঠে। কারেন্ট পোকার (ঘাসফড়িং) আক্রমণে তাঁর দেড় বিঘা জমির ধান একেবারে শেষ হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এত কষ্টের সব ধান আমার নষ্ট হয়ে গেল। মাঠে আমার ধান ছিল সেরা, এখন একেবারে জিরো। কীটনাশক প্রয়োগ করে অনেকের সেরে গেছে, কিন্তু আমি সব ধরনের বিষ ব্যবহার করেও কোনো সুফল পাইনি। আমার এতটাই ক্ষতি হয়েছে, যা কল্পনা করা যায় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি অফিস থেকে তেমন সঠিক কোনো দিকনির্দেশনাও পাইনি। কৃষি অফিস থেকে যদি সঠিক নির্দেশনা পাওয়া যেত কোন কীটনাশক ব্যবহার করলে ভালো হবে, তাহলে আমাদের অনেক উপকার হতো।’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মজুরি খরচ, সার ও কীটনাশকের বাড়তি দামে কৃষকের নাভিশ্বাস উঠেছে। এর মধ্যেই আমনে কারেন্ট পোকার আক্রমণ মারাত্মক রূপ নিয়েছে। পোকার আক্রমণে কৃষক মিরাজুল ইসলামের ধানের গাছ শুকিয়ে সাদা হয়ে শুধু খড় দেখা যাচ্ছে। যেটুকু আছে, তা-ও দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয় চাষি আব্দুল মজিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আগে থাইডন, বাসোডিনের মতো বিষ ছিল, যা প্রয়োগ করলে সঙ্গে সঙ্গে কাজ হতো। কিন্তু এখনকার বিষে কোনো কাজ হয় না, এগুলো ভেজালে পরিপূর্ণ। বিষ কোম্পানিগুলো আসলে কী বিষ দেয়? এভাবে চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোথায় যাবে?’

আরেক ধানচাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মিরাজ নামের এই চাষির ধান কারেন্ট পোকার আক্রমণে এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে বিচালি (খড়) করাও সম্ভব না। ধানের জমি খড়ের মতো হয়ে গেছে। এই মাঠে তার ধান অত্যন্ত সুন্দর হয়েছিল এবং সে তার ধানের প্রতি খুবই যত্নবান ছিল। সে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

গাংনী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আরাফাত মিয়া বলেন, ‘রোপা আমন মৌসুমে স্বাভাবিকভাবে এই ধরনের রোগ দেখা দেয়। আমরা অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে এনেছি পুরোপুরি। বাজারে বিভিন্ন ভেজাল কীটনাশক রয়েছে। এর মধ্য থেকে আসলটা বাছাই করে যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে যেসব উপসহকারী রয়েছে, তাদের বলা আছে কৃষকদের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম আসলাম হোসেন (৪৫)। তিনি উপজেলার কোলা ইউনিয়নের পারিচা গ্রামের মোলায়েমের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরের দিকে বদলগাছী উপজেলার আক্কেলপুর মধ্যপাড়া (মণ্ডলপাড়া) গ্রামে মুসা নামের এক ব্যক্তির নারকেলগাছে উঠেছিলেন আসলাম। ধারণা করা হচ্ছে, ডাব চুরি করার সময় তিনি গাছ থেকে নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা গাছের নিচে ডাবসহ লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে বদলগাছী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ডাব পাড়তে গিয়ে পা ফসকে পড়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিক দগ্ধ, অবস্থা গুরুতর

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ২৯
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্পনগরীতে এমএস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং নামে একটি কারখানায় বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় তাঁদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন— কারখানাটির শ্রমিক আল আমিন (৩০), আজিজুল্লাহ (৩২), মো. সেলিম (৩৫), মো. জালাল মোল্লা (৪০), মো. নাজমুল হুদা (৩৫) এবং সিকিউরিটি গার্ড সুপারভাইজার নুর মোহাম্মদ (৩৫)।

দগ্ধরা জানান, সকালে কারখানার নিচতলায় বয়লার রুমে কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তেই সেই কক্ষে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। এতে ৬ জনের শরীর ঝলসে যায়। সহকর্মীরা দগ্ধদের উদ্ধার করে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, দগ্ধদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের সবার অবস্থাই গুরুতর। কার শরীরে কত শতাংশ পুড়েছে তা পরবর্তীতে বলা যাবে।

ফতুল্লা ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার খায়রুল ইসলাম আজকের পত্রিকা বলেন, সকালে এসএম ডাইং স্টেশনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে কারাখানা থেকে কোনো তাদের (ফায়ার সার্ভিস) বিস্ফোরণের সংবাদ জানানো হয়নি। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করছেন। বিস্ফোরণের কারণ তদন্তের পর জানা যাবে। তবে এ ঘটনায় কারখানাটির বেশ কয়েক শ্রমিক-কর্মচারী আহত হয়েছেন।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগুনে দগ্ধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। অফিশিয়ালি আমাদের এই বিষয়ে কেউ তথ্য দেয়নি। গণমাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেশবপুরে হাডুডু খেলায় অতর্কিত হামলা: ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ আহত ১০

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি 
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলার অনুষ্ঠানে অতর্কিত হামলায় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের সাগরদত্তকাটি গ্রামের মধ্যপাড়ায় হাডুডু খেলার পুরস্কার বিতরণের সময় এই ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান, বিদ্যানন্দকাটির কামরুজ্জামান (২৮), মির্জাপুর গ্রামের আবু মুসা (২০), পাত্রপাড়া গ্রামের নয়ন (২১), সাগরদত্তকাটি গ্রামের সুমন হোসেন (২৫), মইনুল ইসলাম (২৫), মনোহরনগর গ্রামের আলী হাসান, মজিদপুর গ্রামের রিয়াদ হোসেন (২২) ও মাদারডাঙ্গা গ্রামের মাসুদ হোসেন (২৩)। রাতে আহত ব্যক্তিদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খেলা দেখতে আসা একাধিক দর্শক জানান, আটদলীয় হাডুডু টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ও অতিথি নির্বাচন নিয়ে আয়োজক কমিটির দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।

শনিবার দুপুরে পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মুকুল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করার পরই আয়োজক কমিটির একটি অংশ এতে আপত্তি জানিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করে।

একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানের মঞ্চে থাকা মকবুল হোসেন মুকুলকে উদ্দেশ করে অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকলে তিনি মঞ্চ থেকে চলে যান।

সন্ধ্যায় ওই হাডুডু খেলার ফাইনাল দেখার জন্য মঞ্চে আসেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান। ফাইনালে উপজেলার বুড়ুলি দল খুলনার চুকনগর দলকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলের কাছে পুরস্কার হিসেবে ফ্রিজ হস্তান্তর করার সময় একদল যুবক মঞ্চে এসে অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় মঞ্চে থাকা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমানসহ আরও কয়েকজন আহত হন। হামলার কারণে দর্শকেরা ভয়ে দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

খেলার রেফারি শওকত হোসেন বলেন, সুষ্ঠুভাবে হাডুডু খেলা সম্পন্ন হলেও পুরস্কার বিতরণের সময় ওই ঘটনা ঘটে। টুর্নামেন্টের সভাপতি রেজাউল করিম সরদার বলেন, ‘হামলা শুরু হলে আমি দ্রুত এলাকা ত্যাগ করি।’

পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুল বলেন, ‘কিছু যুবক পুরস্কার বিতরণের সময় হামলা চালিয়েছে। ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না এবং এটি কোনো রাজনৈতিক বিষয়ও নয়।’

এ ব্যাপারে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের বিট পুলিশিংয়ের সহকারী কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুন বলেন, খেলার অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত