Ajker Patrika

চালের দাম বৃদ্ধির জন্য মাছ-মুরগীর খামারকে দায়ী করলেন মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২: ১৩
চালের দাম বৃদ্ধির জন্য মাছ-মুরগীর খামারকে দায়ী করলেন মন্ত্রী

গত কয়েক দিন ধরেই চালের দাম বাড়ার বিভিন্ন কারণ ব্যাখ্যা করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। বুধবার একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান যে মাছ, পোলট্রি, প্রাণী খাদ্য ও স্টার্চ হিসেবে চালের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সব মিলে দেশে চালের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এর আগে মঙ্গলবার মন্ত্রী বলেছিলেন জনসংখ্যা বাড়ার কারণে চালের দাম বাড়ছে। তার এক দিন পরই বুধবার মাছ মুরগির ওপর দোষ চাপালেন তিনি। 

বুধবার ঢাকার ফার্মগেটে বিএআরসি মিলনায়তনে ‘ফার্ম সেক্টর অব বাংলাদেশ: প্রসপেক্টাস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। ফোরাম ফর ইনফরমেশন ডিসেমিনেশন অন এগ্রিকালচার (ফিডা) ও সিনজেন্টা বাংলাদেশ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

মন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের নানা পদক্ষেপে দেশে রেকর্ড পরিমাণ চাল উৎপাদন হয়েছে। দেশে প্রতি শতাংশ জমিতে এখন আগের চেয়ে বেশি এক মণ ধান উৎপাদন হয়। তারপরও চাল আমদানি করতে হচ্ছে নানা কারণে। 

বুধবার মন্ত্রী আবার বলেন, প্রতি বছর জনসংখ্যা বাড়ছে, ধানের ক্ষেত কমছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভুট্টার চাষ। এ সবের সঠিক পরিসংখ্যান দেশে নেই। ফলে কি পরিমাণ চালের চাহিদা আছে দেশে তা নির্ণয় করা যাচ্ছে না। তাই চাল উৎপাদনে রেকর্ড গড়লেও দেশে চালের দাম বাড়ছে।
 
শুধু কৃষিমন্ত্রী নয়, চালের দাম অব্যাহত বাড়তে থাকায় খোদ সরকারের ভেতরেই নানা প্রশ্ন উঠেছে। যদি গত কয়েক বছর ধরে ধান উৎপাদনে রেকর্ড করে তাহলে তো চাল উদ্বৃত্ত থাকার কথা। উল্টো লাখ লাখ টন চাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে কেন? কেনই বা দাম আকাশ ছোঁয়া? 

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-(ব্রি) বলছে, দেশে সব সময়ই কমপক্ষে ২৮ লাখ টন চাল মজুত থাকে। কৃষি গবেষকেরা বলছেন, এই তথ্যে অবশ্যই গরমিল আছে। নইলে চাল আমদানি করার কথা নয়।
 
গেল দুই বছর দেশে ধান উৎপাদনে রেকর্ড হচ্ছে বলে সরকারিভাবে যে প্রচারণা চলছে, তার সত্যতা কতটুকু? তা নিয়ে এর আগে আজকের পত্রিকাকে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘দেশে যদি চালের উদ্বৃত্ত থাকে তবে কেন ৭০ লাখ টন চাল আমদানি করতে হবে? বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য ২-৩ টন আনা যেতে পারে। কিন্তু এত বিপুল পরিমাণে আমদানির কী প্রয়োজন? আর উদ্বৃত্তই যদি থাকবে তাহলে বাজারে এর দাম বাড়বে কেন? অর্থনীতির সংজ্ঞা তো তা বলে না। উদ্বৃত্তের চাল গেল কোথায়? উদ্বৃত্ত চালের তথ্যে গরমিল করেছে কৃষি বিভাগ। তাদেরই এটা ঠিক করতে হবে।’
 
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে চালের উৎপাদন হয়েছে ৩ কোটি ৬৬ লাখ মেট্রিক টন। আর বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের চালের লক্ষ্যমাত্রা ৩ কোটি ৯৬ লাখের বিপরীতে আউশ ও আমন ফলন হয়েছে মোট ১ কোটি ৭৬ লাখ টন। আর বোরো ফলনের চূড়ান্ত হিসাব না পাওয়া গেলেও আগের বছরের অর্জন ধরলেও তা হয় ১ কোটি ৯৬ লাখ টন। সেই হিসাবে মোট উৎপাদন হওয়ার কথা ৩ কোটি ৭২ লাখ টন।
 
উৎপাদনের তথ্য যদি এটা হয়, তাহলে চালের মোট চাহিদা কত? এর সঠিক কোনো হিসাব নেই বলে বুধবারের অনুষ্ঠানে জানালেন কৃষিমন্ত্রী।
 
বাংলাদেশে কর্মরত জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রভারটি অ্যান্ড সোশ্যাল প্রোটেকশন পলিসির সাবেক উপদেষ্টা মিজানুল হক কাজলের হিসাব অনুযায়ী, জনপ্রতি যদি তা আধা কেজি হিসাবেও ধরা হয়, তবে ১৭ কোটি মানুষের বছরে চাল লাগার কথা ৩ কোটি ১৯ লাখ টনের মতো। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত