Ajker Patrika

‘হিজাব না পরায় আমার চুল কেটে নিয়েছে, আমি আর স্কুলে যামু না’

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
Thumbnail image

‘হিজাব না পরায় আমার চুল কেটে নিয়েছে, আমি আর স্কুলে যামু না’ কেঁদে কেঁদে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার সৈয়দপুর আব্দুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মাইসা জাহান একথা জানায়। 

আজ বুধবার মাইসা আক্তারসহ আরও ৭ জনের চুল কেটে নেন বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ের শিক্ষিকা রুমিয়া সরকার। 

সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মাইসা জাহান, তানজিলা আক্তার, আনীল আক্তার, তাসফিয়া, মাহাদিয়া, সুমাইয়া ও ইফা হিজাব পরে না আসার কারণে তাদের চুল কেটে নেওয়া হয় বলে জানায় তারা। 

মাইসা জাহান জানায়, ‘আমার একটাই হিজাব। ওই হিজাবটা ময়লা হয়ে গেছে। তাই ধুয়ে দিয়েছি। এজন্য পড়ে যেতে পারিনি।’ ম্যাডামকে অনেক অনুরোধ করে বললেও আমি রক্ষা পাইনি, ম্যাডাম আমাদের চুল কেটে দিল। তাই আমি আর স্কুলে যামু না। 

মাইসা জাহানের পিতা কহিনুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মেয়ে অন্যায় করেছে বললেই হত, আমরা শাসন করতাম। তাকে চুল কেটে ন্যাড়া বানিয়ে দিল। তাই আমার মেয়েটা ভেঙে পড়েছে। ও আর স্কুলে যেতে চাচ্ছে না।’ 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, ‘বর্তমান সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম হোসেন সাহেব সভাপতি হওয়ার পর ছেলে মেয়েদের ড্রেস কোড চেঞ্জ করেছেন, এ ব্যাপারে তিনি শিক্ষকদের খুব চাপে রাখেন এবং এ বিষয়ে যে কোনো অ্যাকশন নিতে বলেন।’ 

সৈয়দপুর আব্দুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি সন্ধ্যায় প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছেন। আগামীকাল আমি প্রতিষ্ঠানে যাব এবং ঘটনা জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’ 

অভিযুক্ত শিক্ষিকা রুমিয়া সরকারের মোবাইলে ফোন দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়। 

সৈয়দপুর আব্দুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিয়া মো. ফরিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ক্লাসেই কেচি ছিল। তাই হাতের কাছে পেয়ে এ কাজ করে ফেলেছে। তবে কাজটা অন্যায় করেছে। আমরা ব্যবস্থা নেব।’ 

সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ঘটনা জেনেছি। ইতিমধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। আগামীকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখব। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত