Ajker Patrika

জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র: শফিক রেহমানের পক্ষে আপিল শুনানি শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
শফিক রেহমান। ছবি: সংগৃহীত
শফিক রেহমান। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের মামলায় নিম্ন আদালতের সাজার বিরুদ্ধে সাংবাদিক শফিক রেহমানের করা আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তারিক এজাজের আদালতে শফিক রেহমানের পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ শুনানি করেন।

আইনজীবী সাংবাদিকদের জানান, আজ আপিল শুনানি শেষ হয়েছে। আদালত এ বিষয়ে পরে রায়ের তারিখ ধার্য করবেন।

শুনানিতে আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, এটি সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার একটি মিথ্যা মামলা। তিনি নিজে মামলা করেননি, পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। শফিক রেহমান একজন ৯০ বছর বয়সী বয়স্ক ব্যক্তি। তাঁকে এই মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল, অথচ তাঁর কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেই। মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। জয়ও এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আইনজীবী অভিযোগ করে বলেন, যেদিন জয় এই মামলায় সাক্ষ্য দেন, সেদিন সাক্ষ্য শেষে বিচারক তাঁর পেছনে দৌড়াচ্ছেন—এমন চিত্র দেখা যায়। তাহলে দেখুন কেমন বিচার হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ খলিলুর রহমান (খলিল) বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা। তিনি একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক। তাঁকে খালাস দিলে রাষ্ট্রপক্ষের কোনো আপত্তি নেই।

শুনানির সময় সাংবাদিক শফিক রেহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২১ নভেম্বর শফিক রেহমান এই মামলায় উচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন। এর আগে তাঁর অনুপস্থিতিতে গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর শফিক রেহমান, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচজনকে সাত বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন।

ওই রায়ের পর গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শফিক রেহমান ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে হাজির হন। তিনি আপিল করার জন্য মামলার জাবেদা নকল সরবরাহের আবেদন করেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন জানান। ওই দিন বিচারিক আদালত শফিক রেহমানকে আপিল করার জন্য মামলার জাবেদা নকল সরবরাহের নির্দেশ দেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।

এর আগে সরকার গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর শফিক রেহমানের এই মামলায় প্রাপ্ত শাস্তি এক বছরের জন্য স্থগিত করে গেজেট প্রকাশ করেছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকায় তিনি এই মামলায় পলাতক হিসেবে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।

মামলার অভিযোগ ছিল, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যেকোনো সময় থেকে বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় একত্রিত হয়ে পরস্পর যোগসাজশে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয়। এই মামলার বিচার চলাকালে মোট ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।

উল্লেখ্য, এই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আরেক আসামি আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গত ১০ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত