Ajker Patrika

এমপি আনোয়ারুল হত্যা: কামালকে ১০ দিনের মধ্যে ঝিনাইদহ কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৪, ২১: ১৯
Thumbnail image

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার অপহরণ মামলায় ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে ১০ দিনের মধ্যে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ এই নির্দেশ দেন।

একই সঙ্গে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করেন। তবে ঝিনাইদহ কারাগারে নেওয়ার পর একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তদন্ত কর্মকর্তা আসামি গ্যাস বাবুকে নিয়ে মোবাইল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে পারবেন বলে আদেশে বলা হয়েছে।

পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন শুনানির শেষে আদালত এসব নির্দেশ দেন। রিমান্ডের আবেদন শুনানির জন্য সকালেই গ্যাস বাবুকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ৩টায় শুনানি হয়।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমপি আনার হত্যার তথ্য রয়েছে এমন একটি মোবাইল ফোনসেট ফেলে দেওয়া হয়েছে। ওই ফোনসেট উদ্ধারের জন্য তাঁকে পুনরায় রিমান্ডে দেওয়ার প্রয়োজন।

এর আগে ৫ জুন আসামি গ্যাস বাবু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওই দিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে এই মামলায় আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, তাঁর ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

রিমান্ড শুনানির সময় গ্যাস বাবুকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানির সময় গ্যাস বাবুর আইনজীবী আদালতকে বলেন, আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর পুনরায় রিমান্ডের আবেদন বেআইনি। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডে আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং আসামিকে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তাকেও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মোবাইল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করার নির্দেশ দেন।

আনোয়ারুল আজীম ভারতে খুন হওয়ার ঘটনায় গত ২২ মে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণের পর বাবাকে গুম করার অভিযোগে মামলা করেন তাঁর মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

মামলার এজাহারে এমপির মেয়ে উল্লেখ করেন, ৯ মে রাত ৮টার দিকে তাঁর বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। ১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে তাঁর বাবার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্নতা মনে হয়। এরপর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পান।

গত ১৩ মে আনারের ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল-, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমি অমিত শাহের কাছে যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেব।’ এ ছাড়া আরও কয়েকটি মেসেজ আসে। মেসেজগুলো মুনতারিনের বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে বলে এজাহারে বলা হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, বাদীর বাবা ভারতে খুন হয়েছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তবে এখনো বাবার লাশ পাননি তাঁর পরিবার। তাঁর বাবাকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।

আনোয়ারুল আজীম গত ১২ মে দর্শনা–গেদে সীমান্ত দিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। বরাহনগরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু ১৬ মে থেকে তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে না পারায় নিখোঁজ জানিয়ে ১৮ মে বরাহনগর থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। 

গত ২২ মে সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আনোয়ারুল আজীম খুন হওয়ার খবর আসে। এরপর তাঁর মেয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণের পর গুম করার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত