Ajker Patrika

উত্তরের পথে ঘরমুখী মানুষের স্বস্তির ঈদযাত্রা শুরু, নেই যানজট

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুর থেকে ছেড়ে যাচ্ছে যানবাহন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুর থেকে ছেড়ে যাচ্ছে যানবাহন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন শিল্প-কারখানার কর্মজীবী মানুষ। ঈদকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার সকাল থেকেই গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখী মানুষের ভিড় দেখা গেছে। তবে যানবাহনের চাপ বাড়লেও দুপুর পর্যন্ত কোথাও যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। স্বস্তিদায়ক পরিবেশে শুরু হয়েছে এবারের ঈদযাত্রা।

দীর্ঘ ১০ দিনের ঈদের ছুটিতে কর্মস্থল ছাড়ছেন অনেকে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে গাজীপুর মহানগর পুলিশ, জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে। প্রশাসনের লক্ষ্য, কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই মানুষ যেন স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানী থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলগামী প্রবেশমুখ হিসেবে পরিচিত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে কোথাও যানজট ছিল না। তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থায় কাজ করছে পুলিশ। ভোর থেকে চন্দ্রা ও চান্দনা চৌরাস্তা দিয়ে যাত্রা শুরু করেছেন অনেকে। অনেকেই পরিবারকে আগে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। যাত্রীদের হাতে ব্যাগ ও মাথায় বস্তা দেখা গেছে।

অনেক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, সাধারণ সময়ের তুলনায় বাসভাড়া কিছুটা বেশি নেওয়া হচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী একতা পরিবহনের হেলপার আলমগীর জানান, সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ বাড়ছে। দুপুরের পর কারখানা ছুটি হলে চাপ আরও বাড়বে।

সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা পোশাক শ্রমিক খোরশেদ আলম বলেন, ‘নাইট ডিউটি শেষে সকালে রওনা হয়েছি। সড়কে তেমন ভিড় নেই। মনে হচ্ছে আরামে বাড়ি পৌঁছাতে পারব। তবে বিকেলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে।’

শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরে ২ হাজার ১৭৬টি নিবন্ধিত কলকারখানা রয়েছে, যার মধ্যে ১ হাজার ১৫৪টি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় কর্মরত লাখো শ্রমিক যেন একযোগে রাস্তায় বেরিয়ে যানজট সৃষ্টি না করে, সে জন্য তিন দিন ধরে ছুটি দেওয়া হচ্ছে। গত মঙ্গলবার ১০ ভাগ, গতকাল বুধবার ৪০ ভাগ এবং বৃহস্পতিবার বাকি ৫০ ভাগ কারখানায় ছুটি দেওয়া হবে। ফলে বুধবার পর্যন্ত মহাসড়কে চাপ সহনীয় ছিল।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ী পর্যন্ত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ট্রাফিক বিভাগ। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছে।

গাজীপুর জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক জানান, যানজট নিরসনে প্রায় ৮০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। চন্দ্রায় ৫৯৭ ও মাওনায় ২০০ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। মহাসড়কে অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে, যাতে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারেন।

সালনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকাতুল আলম জানান, যানজট এড়াতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বিকেল নাগাদ চাপ আরও বাড়তে পারে।

জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তিন শিফটে কাজ করবেন। রেলস্টেশন, চন্দ্রা ও মাওনার মতো ব্যস্ত এলাকায় তারা মোতায়েন থাকবেন।

ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জানান, যানজট ও জলাবদ্ধতা রোধে ড্রেন পরিষ্কারসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে অন্যান্য সরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করেই কাজ করছে সিটি করপোরেশন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টায় এবারের ঈদযাত্রা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় স্বস্তিদায়ক হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত