Ajker Patrika

মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা: হাতিয়ায় ২০ হাজার জেলের ৭ হাজারই চাল পাননি 

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৪: ৫০
মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা: হাতিয়ায় ২০ হাজার জেলের ৭ হাজারই চাল পাননি 

ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে জেলেদের জন্য সরকারিভাবে সহযোগিতার জন্য চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চাল বিতরণ শেষে দেখা গেছে, ওই এলাকার নিবন্ধিত ১৯ হাজার ৫৯৫ জন জেলের মধ্যে বরাদ্দের ২৫ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে ১২ হাজার জনকে। নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যেই বাদ পড়েছেন ৭ হাজার ৫৯৫ জন।

এ বিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ বরাদ্দই বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরে কাউকে দেওয়ার সুযোগ নেই।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার হাতিয়া উপজেলার জেলেদের জন্য ৩০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যেগুলো ২৫ কেজি করে ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১২ হাজার জেলের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

নোয়াখালীর এই দ্বীপ উপজেলায় অধিকাংশই মৎস্যজীবী। মৎস্যজীবী সমিতির তথ্য অনুযায়ী এই এলাকায় জেলের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ। মাছ শিকার বন্ধ থাকায় একরকম অলস সময় পার করতে হচ্ছে তাঁদের। এ ছাড়া এই মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মাছ না পেয়ে অধিকাংশ জেলে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের কালিরচর সুউজের ঘাটে ছোট-বড় ৫ শতাধিক মাছ ধরার ট্রলার বাঁধা রয়েছে। সেখানে জাল বোনার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কালিরচর গ্রামের শ্যামল মাঝির ট্রলারের মাঝি-মাল্লারা। বেশ কিছু জেলে সেখানে বসে অলস সময় পার করছেন।

সেখানে কথা হয় ওই ঘাটের ট্রলারমালিক ও মুদি দোকানি মো. হাসানের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই ঘাটে জেলে ও ব্যবসায়ীসহ প্রায় ১০ হাজার লোক মাছের সঙ্গে জড়িত। এ বছর মৌসুমের প্রথম থেকে মাছ না পাওয়ায় কারও অস্তিত্ব নাই। অনেক মাঝি-মাল্লা জালসহ ট্রলার ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে। অনেক ট্রলারমালিক হিসাব না দিয়ে আত্মগোপন করেছে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে ২ নভেম্বর, এরপর আর মাছ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।’

শ্যামল মাঝি নামের একজন জেলে ও ট্রলারমালিক বলেন, ‘যে চাল দেওয়া হয়েছে, তাতে আমার ট্রলারের ১৮ জন জেলের মধ্যে দুজন পেয়েছে। এই চালের জন্য ওই দুজনকে জাল বোনার কাজ ফেলে ইউনিয়ন পরিষদে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।’

এ বিষয়ে বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বুড়িরচর হাতিয়ার সবচেয়ে বড় দুটি ইউনিয়নের মধ্যে একটি। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় আমার ইউনিয়নে ১ হাজার ৮০০ জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। অথচ এই ইউনিয়নে ছয়টি ঘাটে জেলে আছেন ১০ হাজার। এর মধ্যে নিবন্ধিত জেলে আছেন ৩ হাজার ৬০০ জন।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা অনুপাতে অর্ধেক জেলেকে চাল দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একাধিকবার উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় উত্থাপন করেও কোনো সুফল পাইনি।’

চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর নদীতে মাছ না পেয়ে অনেক জেলে ও ট্রলারমালিক দেউলিয়া হয়ে গেছে। অনেকে ঋণগ্রস্ত হয়ে আত্মগোপনে রয়েছে, কেউ বিদেশে চলে গেছে। প্রতিদিন ইউনিয়ন পরিষদে জেলে ও ট্রলারমালিকদের দেনা-পাওনার সালিসবৈঠক করতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে হাতিয়া মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাতিয়ায় ৪১টি ঘাটে ছোট-বড় প্রায় ১০ হাজার জেলে নৌকা রয়েছে। এসব নৌকায় ১০ জন করে হলেও ১ লাখ লোক এই পেশার সঙ্গে জড়িত। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ১২ হাজার জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। বড় একটি অংশ সরকারি এই সুবিধা থেকে বাদ পড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২৫ কেজি চাল হয়তো কয়েক সদস্যের একটি জেলে পরিবারের জন্য তেমন উপকার হবে না। কিন্তু এ বছর নদীতে মাছ না পেয়ে জেলেদের মধ্যে এই চাল পাওয়ার জন্য হাহাকার অনেক বেশি।’

এ বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাজু চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের জন্য হাতিয়াতে ৩০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় জেলেদের সংখ্যা অনুপাতে নিজ নিজ ইউনিয়নে এই বরাদ্দ বিভাজন করে দেওয়া হয়েছে। প্রতি ইউনিয়নে এই চাল বিতরণ শেষ হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাতিয়ায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৯ হাজার ৫৯৫, কিন্তু বরাদ্দের ২৫ কেজি করে চাল ১২ হাজার জেলের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরে আমাদের কিছুই করার নেই। আমার জানামতে অন্যান্য উপজেলায়ও একই অবস্থা।’

মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘হাতিয়ায় জেলের সংখ্যা অনেক বেশি। আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ বছর গত বছরের তুলনায় বরাদ্দ কিছুটা বেশি দেওয়া হয়েছিল।’

উল্লেখ্য, ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করার জন্য সরকার সমুদ্রে ও নদীতে মাছ শিকারের ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই সময়ে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার, মজুত ও ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে ডাইং কারখানায় গ্যাস বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৬ শ্রমিক

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ২২
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার এনায়েতনগর বিসিক শিল্প এলাকায় একটি কারখানায় লিকেজ থেকে গ্যাস বিস্ফোরণে ছয় শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। রোববার ভোরে এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং নামে ওই কারখানায় এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় দগ্ধ শ্রমিকদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা হলেন আল আমিন (৩০), আজিজুল্লাহ (৩২), সেলিম (৩৫), জালাল মোল্লা (৪০), নাজমুল হুদা (৩৫) ও কারখানার নিরাপত্তাকর্মী নুর মোহাম্মদ (৩৫)।

ারখানার শ্রমিকেরা জানান, নিচতলায় বয়লার রুমে শ্রমিকেরা কাজ করছিলেন। ভোরের দিকে সেই রুমে গ্যাসলাইন থেকে বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। এতে ছয়জনের শরীর ঝলসে যায়।

ার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান জানান, দগ্ধ ব্যক্তিদেরকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সবার অবস্থা গুরুতর। কার শরীরের কত শতাংশ পুড়েছে, তা নির্ণয় করে পরে জানানো যাবে।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগুনে দগ্ধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। অফিশিয়ালি আমাদের এই বিষয়ে কেউ তথ্য দেয়নি। গণমাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেশবপুরে হাডুডু খেলায় অতর্কিত হামলা: ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ আহত ১০

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি 
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলার অনুষ্ঠানে অতর্কিত হামলায় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের সাগরদত্তকাটি গ্রামের মধ্যপাড়ায় হাডুডু খেলার পুরস্কার বিতরণের সময় এই ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান, বিদ্যানন্দকাটির কামরুজ্জামান (২৮), মির্জাপুর গ্রামের আবু মুসা (২০), পাত্রপাড়া গ্রামের নয়ন (২১), সাগরদত্তকাটি গ্রামের সুমন হোসেন (২৫), মইনুল ইসলাম (২৫), মনোহরনগর গ্রামের আলী হাসান, মজিদপুর গ্রামের রিয়াদ হোসেন (২২) ও মাদারডাঙ্গা গ্রামের মাসুদ হোসেন (২৩)। রাতে আহত ব্যক্তিদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খেলা দেখতে আসা একাধিক দর্শক জানান, আটদলীয় হাডুডু টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ও অতিথি নির্বাচন নিয়ে আয়োজক কমিটির দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।

শনিবার দুপুরে পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মুকুল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করার পরই আয়োজক কমিটির একটি অংশ এতে আপত্তি জানিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করে।

একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানের মঞ্চে থাকা মকবুল হোসেন মুকুলকে উদ্দেশ করে অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকলে তিনি মঞ্চ থেকে চলে যান।

সন্ধ্যায় ওই হাডুডু খেলার ফাইনাল দেখার জন্য মঞ্চে আসেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান। ফাইনালে উপজেলার বুড়ুলি দল খুলনার চুকনগর দলকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলের কাছে পুরস্কার হিসেবে ফ্রিজ হস্তান্তর করার সময় একদল যুবক মঞ্চে এসে অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় মঞ্চে থাকা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমানসহ আরও কয়েকজন আহত হন। হামলার কারণে দর্শকেরা ভয়ে দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

খেলার রেফারি শওকত হোসেন বলেন, সুষ্ঠুভাবে হাডুডু খেলা সম্পন্ন হলেও পুরস্কার বিতরণের সময় ওই ঘটনা ঘটে। টুর্নামেন্টের সভাপতি রেজাউল করিম সরদার বলেন, ‘হামলা শুরু হলে আমি দ্রুত এলাকা ত্যাগ করি।’

পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুল বলেন, ‘কিছু যুবক পুরস্কার বিতরণের সময় হামলা চালিয়েছে। ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না এবং এটি কোনো রাজনৈতিক বিষয়ও নয়।’

এ ব্যাপারে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের বিট পুলিশিংয়ের সহকারী কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুন বলেন, খেলার অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে ট্রাকের পেছনে মাইক্রোবাসের ধাক্কা, নিহত ১

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আবুল কালাম আজাদ। ছবি: সংগৃহীত
আবুল কালাম আজাদ। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আবুল কালাম আজাদ (৫৩) নামের এক ব্যবসায়ী মারা গেছেন। রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোরে মাইজদী টিভি সেন্টার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় আবুল কালামকে বহনকারী মাইক্রোবাসটি দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। তখন মাইক্রোবাসের যাত্রী আবুল কালাম আজাদ মারা যান এবং আহত হন আরও তিনজন।

আবুল কালাম আজাদ জেলার সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল হক ছোট মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় উত্তর ওয়াপদা বাজারের ব্যবসায়ী ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে শনিবার রাতে দেশে ফেরেন আজাদ। এরপর মাইক্রোবাস যোগে স্ত্রী নাসিমা আক্তার, মা ও ভাতিজা লিমনসহ গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন। যাত্রাপথে মাইক্রোবাসটি সোনাপুর-চৌমুহনী আঞ্চলিক মহাসড়কের মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেন।

এতে মাইক্রোবাসটি ধুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আজাদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার পরপরই মাইক্রোবাসের চালক পালিয়ে যান। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নেমেছেন জেলেরা, মাছঘাটে কর্মচাঞ্চল্য

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরে মাছঘাটে মাছ দরদাম করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুরে মাছঘাটে মাছ দরদাম করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় পর আবারও নদীতে নেমেছেন চাঁদপুরের জেলেরা। আড়তগুলোয় শুরু হয়েছে কর্মচাঞ্চল্য। তবে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে অনেকেই হতাশ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইলিশ কম পাওয়া গেলেও দাম বাড়েনি।

রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোর থেকে সদর উপজেলার অন্যতম হরিণা মাছঘাট ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম হয়ে ওঠে। ঘাটসংলগ্ন এলাকা থেকে কয়েকজন জেলে নদীতে নামছেন। আবার কেউ ইলিশ ধরে ঘাটে নৌকা নিয়ে আসছেন। ঘাটে ইলিশ উঠানোর পরে হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

জেলেরা নদী থেকে সরাসরি এই ঘাটে ইলিশ নিয়ে আসেন। যে কারণে টাটকা ইলিশ কেনার জন্য এই ঘাটে পাইকারি ও খুচরা ক্রেতা সব সময় বেশি থাকেন।

লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘পেশা ইলিশ ধরা। অন্য কাজ করি না। যে কারণে ধারদেনা করে হলেও নদীতে নামতে হয়। যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে খরচ বাদ দিয়ে তেমন আর থাকে না।’

হরিণা ফেরিঘাট এলাকার জেলে হুমায়ুন ঢালি বলেন, ‘পাঁচজনে মিলে মধ্যরাতে মেঘনায় ইলিশ ধরতে নেমেছি। যে পরিমাণ ইলিশ পেয়েছি, তাতে খরচ বাদে তেমন একটা থাকবে না। হয়তো জনপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পাওয়া যাবে।’

হরিণা মাছঘাটে ইলিশ কিনতে এসেছেন ফরিদগঞ্জ থেকে সাইফুর রহমান ও হাবিবুল্লা। তাঁরা বলেন, ঘাটে মাছ থাকলেও দাম কমেনি। দাম আগের মতোই।

চাঁদপুরে মাছঘাটে মাছ দরদাম করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুরে মাছঘাটে মাছ দরদাম করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এই ঘাট থেকে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ক্রয় করে চাঁদপুর শহরের বাজারগুলোয় বিক্রি করেন খুচরা মাছ ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান।

আব্দুর রহমান বলেন, মাছের দাম কমেনি বা বাড়েনি। ওজনে এক কেজিতে ৪টা, এমন প্রতি হালি ইলিশ কিনেছেন ৮০০ টাকা দরে। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। বড় সাইজের পাঙ্গাশ কিনেছেন প্রতি কেজি সাড়ে ৮০০ টাকা ধরে।

এই ঘাটের প্রবীণ মাছ ব্যবসায়ী আবুল কাশেম কালু হাওলাদার বলেন, জেলেরা রাত থেকে নদীতে নামলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছেন না। তবে যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দাম বাড়েনি। আগের দামে বিক্রি করছেন তাঁরা। তবে কয়েক দিন অতিবাহিত হলে বোঝা যাবে নদীতে ইলিশ আছে কি না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত