Ajker Patrika

চট্টগ্রাম বন্দরে এক লাখ কন্টেইনার কম হ্যান্ডেলিং হতে পারে: সচিব

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বন্দরে এক লাখ কন্টেইনার কম হ্যান্ডেলিং হতে পারে: সচিব

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি, ডলার সংকট, এলসি খোলায় ব্যাংকের কড়াকড়িসহ সর্বোপরি বৈশ্বিক মন্দার কারণে আমদানি-রপ্তানি কমে যাওয়ায় চলতি বছরে চট্টগ্রাম বন্দরে এক লাখ কন্টেইনার কম হ্যান্ডেলিং হয়েছে। এতে বিশ্বের ব্যস্ততম ১০০ বন্দরের বৈশ্বিক তালিকা থেকেও চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থানের ক্রমাবনতি ঘটতে পারে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং হয়েছে ৩০ লাখ ৯৩ হাজার ৯৫৪ টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কন্টেইনার)। বাকি পাঁচ দিনে মোট ৩১ লাখ পর্যন্ত কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং হতে পারে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক। তিনি বলেন, বিদায়ী বছরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকট, এলসি খোলায় ব্যাংকের কড়াকড়িসহ সর্বোপরি বৈশ্বিক মন্দার কারণে আমদানি-রপ্তানির প্রতিকূল অবস্থাতেও চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং কম হয়নি। এ অবস্থায়ও মাত্র এক লাখ কন্টেইনার কম হ্যান্ডেলিং হতে পারে।

সূত্র আরও জানা গেছে, কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং কম যাওয়া মানেই বৈশ্বিক ক্রমতালিকা থেকেও বন্দরের অবস্থান পিছিয়ে যাওয়া। কারণ লয়েডস লিস্টে ক্রমতালিকা করা হয় কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং পরিসংখ্যানের ওপর।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স ফাল্গুনী ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইসমাইল খান বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে সারা বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। এ চিত্র শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বেই রয়েছে। তাই চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং কম হয়েছে।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে ৩০-৪০ শতাংশ ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কমেছে। এতে বিশ্বে পোশাকের ক্রয়-বিক্রয় অনেক কমে গেছে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো দেশের প্রধান এ সমুদ্রবন্দর দিয়ে ৩ মিলিয়ন টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের রেকর্ড করে। পরবর্তী বছরে অর্থাৎ ২০২০ সালে করোনার প্রভাবে কম হ্যান্ডেলিং হওয়ার কারণে ৩ মিলিয়ন ক্লাব থেকে বন্দরটির নাম ছিটকে পড়ে। ওই বছর বন্দর দিয়ে ২ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং হয়েছে। এতে লয়েডস লিস্টে ৫৮ তম স্থান থেকে পিছিয়ে ৬৭ তমতে বন্দরের নাম চলে যায়।

তবে, ২০২১ সালে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে ১৮৮৮ সালের ২৫ এপ্রিল প্রথম অপারেশনে যাওয়া চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৪ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ কন্টেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের রেকর্ড গড়ে। ২০২১ সালে বন্দর দিয়ে ৩ দশমিক ২১ মিলিয়ন কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং হয়েছে। ফলে ২০২১ সালে লয়েডস লিস্টে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ৩ ধাপ এগিয়ে ৬৩ তম স্থানে আসে। পরবর্তীতে ২০২২ সালে এসে পরিস্থিতি আবারও বদলে যায়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্যে ধস নামে। ডলার সংকটে কমে যায় আমদানি-রপ্তানি। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে ক্রমাগত আমদানি-রপ্তানি কমতে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত