Ajker Patrika

ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে কুবি উপাচার্যের পদত্যাগ

কুবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২৪, ১৪: ৪৬
Thumbnail image

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। আজ রোববার রাষ্ট্রপতি বরাবর দেওয়া পদত্যাগপত্র থেকে এ বিষয় জানা গেছে। 

পদত্যাগপত্রে অধ্যাপক আবদুল মঈন বলেন, ‘বর্তমানে আমি ব্যক্তিগত কারণে উপাচার্যের পদ থেকে এই পত্রের মাধ্যমে অদ্য অপরাহ্ণে পদত্যাগ করিতে আপনার নিকট পদত্যাগপত্র পেশ করিলাম। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়ন অব্যাহত থাকুক এই কামনা করছি। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে আমাকে বাধিত করিবেন।’ 

আবদুল মঈন উপাচার্য হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর যেসব উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন তা তিনি পদত্যাগপত্রে জানিয়েছেন। তাতে তিনি বলেন, ‘আমি ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগদান করি। যোগদানের পর অভিজ্ঞতা, সততা, নৈতিকতা, দক্ষতা ও আইন মেনে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি নেতৃস্থানীয় ও মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা যায়, সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করি। এ জন্য প্রথমেই আমি উদ্ভাবনে নেতৃত্ব, সমাজের ক্ষমতায়ন, উন্নয়ন, মানবকল্যাণ, সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধকরণ এবং টেকসই প্ল্যানেট গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ভিশন তৈরি করি। এই ভিশন অর্জনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করি এবং শিক্ষা, শিক্ষণ ও গবেষণার সংস্কৃতি এবং পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে রূপান্তরের জন্য অনেক নতুন ধরনের স্কিম গ্রহণ করি।’ 

স্কিমগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মেধার স্বীকৃতিস্বরূপ ভর্তি পরীক্ষার আয় থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি এবং উন্নতমানের প্রকাশনার জন্য শিক্ষকদের জন্য সম্মানজনক অ্যাওয়ার্ড চালু করা। তা ছাড়া, দীর্ঘ সেশনজট হ্রাসকল্পে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করা, উচ্চতর ডিগ্রি শেষে বিদেশে থেকে পদ ধরে রাখার কারণে যে শিক্ষকসংকট তৈরি হয়েছে তাঁদের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা বাবদ টাকা ফেরত এনে পদ শূন্য করা এবং মানসম্পন্ন গবেষণা ও প্রকাশনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা ইত্যাদি। 

পদত্যাগপত্রে আবদুল মঈন উল্লেখ করেছেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গত দুই বছরে বিভিন্ন সূচকে অনেক সফলতা অর্জন করেছে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভাবমূর্তি বাড়াতে সমর্থ হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, গুচ্ছ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এক নম্বর অবস্থান অর্জনে সক্ষম হয়েছে। বৈশ্বিক এডি ইনডেক্সের গবেষকদের তালিকায় যেখানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র কয়েকজন শিক্ষকের নাম ছিল, তা এ দুই বছরে প্রায় ১৫ গুণ বেড়ে ৯০ জনে উন্নীত হয়েছে। 

পদত্যাগপত্রে আবদুল মঈন বলেন বলেন, ‘আমার যোগদানের আগে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এপিএতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৪২তম, যা আমরা কঠিন পরিশ্রম করে দুই বছরে ১০ম স্থানে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। তা ছাড়া, স্পেনভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবমেট্রিক্স গ্লোবাল র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী দুই বছরে আমরা কয়েক শ ধাপ অতিক্রম করেছি। অতি সম্প্রতি প্রকাশিত আন্তর্জাতিক সিমাগো র‍্যাঙ্কিং (যেখানে বাংলাদেশের ৪১ বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে) অনুযায়ী বাংলাদেশের ৮ নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করে নিয়েছে। সামগ্রিকভাবে, জাতীয় পর্যায়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় একটি ভালো ভাবমূর্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।’ 

অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম উপাচার্য। তিনি ইমরান কবির চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত