আকাশ আহমেদ, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম)
নেত্রকোণা জেলার বাসিন্দা রহমত খাঁ। বয়স ৬৫। নদীর পেটে হারিয়ে গেছে বাড়িঘর। বসবাস করার কোনো উপায় না দেখে পরিবারকে আত্মীয়ের বাসায় রেখে কাজের সন্ধানে ছুটে এসেছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বৃহত্তম বাজার রোয়াজার হাটে। অভাবের তাড়নায় তিনি যে কোনো কাজ করতে প্রস্তুত। আজকের মতো সে চন্দ্রঘোনার আদুরপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজের সঙ্গে ৬০০ টাকা পারিশ্রমিকে চাষাবাদের কাজ করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
রহমত খাঁর মতো কাজের সন্ধানে আসা রোয়াজার হাটে শত শত দিনমজুরের সমাগমে অনেকেরই মনে হবে যেন মানুষের জটলা। কাছে গেলেই দেখা যাবে দিনমজুরদের কাঁধে কাপড়-চোপড়ের ব্যাগ। এসব দরিদ্র মানুষ এখানে আসেন শ্রম বিক্রি করতে। তাঁরা অভাবের তাড়নায় শ্রম বিক্রির জন্য সোমবার ও শুক্রবার উপজেলা পৌরসভার রোয়াজার হাটে এবং শনিবার ও মঙ্গলবার পোমরা ইউনিয়নের শান্তির হাটে জড়ো হন। টাকার বিনিময়ে শ্রম বিক্রি করেন তাঁরা। শ্রমিক দরদাম করে ঘরে নিয়ে যান উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকেরা। এসব দিনমজুর কৃষিকাজসহ বাড়ির অনেক গৃহস্থালি কাজেও পারদর্শী।
স্থানীয়রা জানান, দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে চলছে এই শ্রম বিক্রির হাট। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের পাশে রোয়াজার হাট ও শান্তির হাটে বসে এই হাট। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত সচল থাকে শ্রম বিক্রির হাট।
সিলেটের আহমদ মিয়া (৬০) এসেছেন রোয়াজার হাটের শ্রম বিক্রির হাটে। তিনি জানান, অনেক কষ্ট করে দুই ছেলেকে বড় করেছেন। ছেলেরা বিয়ে করে নিজেদের মতো আলাদা সংসার গড়েছেন। ৪ শতক জমি আর অসুস্থ স্ত্রী ছাড়া এখন আর কিছুই নেই তাঁর। জীবনের শেষ সময়ে দুমুঠো খাবারের জন্য তিনি এসেছেন এই হাটে কাজের সন্ধানে। নিজের শ্রম বিক্রি করে স্ত্রীর মুখে অন্ন তুলে দেবেন এই আশায়। চাচাতো ভাই আবদুল শুক্কুরের কাছেই এই হাটের খোঁজ পেয়েছেন তিনি।
তাঁর সঙ্গে প্রথমবারের মতো আজ আরও ছয়-সাতজন দিনমজুর এসেছেন। এঁদের মধ্য থেকে কথা হয় আবদুল শুক্কুরের সঙ্গে। তিনি জানান, এই সময়টায় তাঁদের এলাকায় কাজের সংকট। গত তিন বছর ধরে তিনি রাঙ্গুনিয়ায় শ্রম বিক্রি করতে আসেন। তাঁরা দল বেঁধে কাজ করেন। তাঁদের দলের কাসেম জানান, এখানে অন্য জেলার চেয়ে মজুরি বেশি। ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত ধান কাটা ও অন্যান্য কাজে মজুরি পাওয়া যায়। সঙ্গে থাকে তিন বেলা খাবার। এখন রাঙ্গুনিয়ায় নবান্নের মৌসুম চলছে। এখানে দিনমজুরদের কদর বেশি হওয়ায় মজুরিও বেশি পাওয়া যায়।
রংপুর থেকে আসা আবদুল মতিন জানান, রাঙ্গুনিয়ার মানুষ তুলনামূলকভাবে ভালো; আন্তরিক। আমরা এখানে দল বেঁধে এসে কাজ পাই। এখানে কাজ করে আমাদের সংসারের প্রয়োজনীয় অর্থ উপার্জন করি।
বরিশালের আরেক শ্রমিক রাসেদ মিয়া জানান, মহাজনেরা সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি তাঁদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেন। তবে মজুরির সঙ্গে তিন বেলা খাবার দেন। অনেক বাড়ির লোকজন তাঁরা নিজেরা যা খান, তাঁদেরও তাই খেতে দেন। অনেকে আবার আলাদা করেও রান্না করে দেন।
রাসেদ মিয়ার সঙ্গে থাকা আবদুল মালেক বলেন, `ভাই, আমরা গরিব মানুষ। দিন এনে দিন খাই। এই সময়টা আমাদের ওখানে কাজ থাকে না। তাই বাড়িতে অলস বসে না থেকে সংসার চালাতে পরিবার-পরিজন ছেড়ে এখানে চলে আসি। কাজ শেষে মজুরি যা পাই, পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেই।'
হাটে শ্রমিক নিতে আসা রাজানগর ইউনিয়নের আবদুল গফুর জানান, ধান কাটার জন্য তিনি শ্রমিক নিতে এসেছেন। এখানে দরদাম করে দেখেশুনে শ্রমিক নেওয়া যায়। বেতাগী ইউনিয়নের তিনচৌদিয়া গ্রাম থেকে আবদুল কাদের এসেছেন ধান কাটার শ্রমিকের জন্য। তিনি জানান, শ্রমিকদের মধ্যে অধিকাংশই বৃদ্ধ ও রোগাক্রান্ত। তাঁরা চাহিদামতো কাজ করতে পারেন না। অন্যদিকে মজুরিও বেশি। আবার রয়েছে দলভিত্তিক কাজ করার শর্ত। সবকিছু মিলে শ্রমবাজার বেশ ব্যয় সাপেক্ষ।
কয়েকজন শ্রমিক জানান, শ্রমবাজারের জন্য কোনো নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় তাঁরা রোয়াজার হাট ও শান্তির হাটে কাপ্তাই সড়কের পাশেই ভিড় জমান। এতে করে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বকাঝকাও শুনতে হয়। এ ছাড়া সড়কে প্রচুর গাড়ি চলাচল করায় দুর্ঘটনারও ঝুঁকি থাকে। তাই তাঁদের দাবি, স্থানীয় প্রশাসন যদি কোনো নির্দিষ্ট একটা স্থানে হাটের ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে অনেকটা নিরাপদেই তাঁরা শ্রম বিক্রি করতে পারবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুস আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি জেলা-উপজেলা থেকে অভাবী মানুষগণ রাঙ্গুনিয়ায় শ্রম বিক্রি করতে আসেন। সড়কের পাশে তাঁদের অবস্থান একটু ঝুঁকিপূর্ণ। তবে নির্দিষ্ট একটি নিরাপদ স্থানে শ্রমিকদের বসানো যায় কি না, ভেবে দেখা হচ্ছে।
নেত্রকোণা জেলার বাসিন্দা রহমত খাঁ। বয়স ৬৫। নদীর পেটে হারিয়ে গেছে বাড়িঘর। বসবাস করার কোনো উপায় না দেখে পরিবারকে আত্মীয়ের বাসায় রেখে কাজের সন্ধানে ছুটে এসেছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বৃহত্তম বাজার রোয়াজার হাটে। অভাবের তাড়নায় তিনি যে কোনো কাজ করতে প্রস্তুত। আজকের মতো সে চন্দ্রঘোনার আদুরপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজের সঙ্গে ৬০০ টাকা পারিশ্রমিকে চাষাবাদের কাজ করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
রহমত খাঁর মতো কাজের সন্ধানে আসা রোয়াজার হাটে শত শত দিনমজুরের সমাগমে অনেকেরই মনে হবে যেন মানুষের জটলা। কাছে গেলেই দেখা যাবে দিনমজুরদের কাঁধে কাপড়-চোপড়ের ব্যাগ। এসব দরিদ্র মানুষ এখানে আসেন শ্রম বিক্রি করতে। তাঁরা অভাবের তাড়নায় শ্রম বিক্রির জন্য সোমবার ও শুক্রবার উপজেলা পৌরসভার রোয়াজার হাটে এবং শনিবার ও মঙ্গলবার পোমরা ইউনিয়নের শান্তির হাটে জড়ো হন। টাকার বিনিময়ে শ্রম বিক্রি করেন তাঁরা। শ্রমিক দরদাম করে ঘরে নিয়ে যান উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকেরা। এসব দিনমজুর কৃষিকাজসহ বাড়ির অনেক গৃহস্থালি কাজেও পারদর্শী।
স্থানীয়রা জানান, দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে চলছে এই শ্রম বিক্রির হাট। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের পাশে রোয়াজার হাট ও শান্তির হাটে বসে এই হাট। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত সচল থাকে শ্রম বিক্রির হাট।
সিলেটের আহমদ মিয়া (৬০) এসেছেন রোয়াজার হাটের শ্রম বিক্রির হাটে। তিনি জানান, অনেক কষ্ট করে দুই ছেলেকে বড় করেছেন। ছেলেরা বিয়ে করে নিজেদের মতো আলাদা সংসার গড়েছেন। ৪ শতক জমি আর অসুস্থ স্ত্রী ছাড়া এখন আর কিছুই নেই তাঁর। জীবনের শেষ সময়ে দুমুঠো খাবারের জন্য তিনি এসেছেন এই হাটে কাজের সন্ধানে। নিজের শ্রম বিক্রি করে স্ত্রীর মুখে অন্ন তুলে দেবেন এই আশায়। চাচাতো ভাই আবদুল শুক্কুরের কাছেই এই হাটের খোঁজ পেয়েছেন তিনি।
তাঁর সঙ্গে প্রথমবারের মতো আজ আরও ছয়-সাতজন দিনমজুর এসেছেন। এঁদের মধ্য থেকে কথা হয় আবদুল শুক্কুরের সঙ্গে। তিনি জানান, এই সময়টায় তাঁদের এলাকায় কাজের সংকট। গত তিন বছর ধরে তিনি রাঙ্গুনিয়ায় শ্রম বিক্রি করতে আসেন। তাঁরা দল বেঁধে কাজ করেন। তাঁদের দলের কাসেম জানান, এখানে অন্য জেলার চেয়ে মজুরি বেশি। ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত ধান কাটা ও অন্যান্য কাজে মজুরি পাওয়া যায়। সঙ্গে থাকে তিন বেলা খাবার। এখন রাঙ্গুনিয়ায় নবান্নের মৌসুম চলছে। এখানে দিনমজুরদের কদর বেশি হওয়ায় মজুরিও বেশি পাওয়া যায়।
রংপুর থেকে আসা আবদুল মতিন জানান, রাঙ্গুনিয়ার মানুষ তুলনামূলকভাবে ভালো; আন্তরিক। আমরা এখানে দল বেঁধে এসে কাজ পাই। এখানে কাজ করে আমাদের সংসারের প্রয়োজনীয় অর্থ উপার্জন করি।
বরিশালের আরেক শ্রমিক রাসেদ মিয়া জানান, মহাজনেরা সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি তাঁদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেন। তবে মজুরির সঙ্গে তিন বেলা খাবার দেন। অনেক বাড়ির লোকজন তাঁরা নিজেরা যা খান, তাঁদেরও তাই খেতে দেন। অনেকে আবার আলাদা করেও রান্না করে দেন।
রাসেদ মিয়ার সঙ্গে থাকা আবদুল মালেক বলেন, `ভাই, আমরা গরিব মানুষ। দিন এনে দিন খাই। এই সময়টা আমাদের ওখানে কাজ থাকে না। তাই বাড়িতে অলস বসে না থেকে সংসার চালাতে পরিবার-পরিজন ছেড়ে এখানে চলে আসি। কাজ শেষে মজুরি যা পাই, পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেই।'
হাটে শ্রমিক নিতে আসা রাজানগর ইউনিয়নের আবদুল গফুর জানান, ধান কাটার জন্য তিনি শ্রমিক নিতে এসেছেন। এখানে দরদাম করে দেখেশুনে শ্রমিক নেওয়া যায়। বেতাগী ইউনিয়নের তিনচৌদিয়া গ্রাম থেকে আবদুল কাদের এসেছেন ধান কাটার শ্রমিকের জন্য। তিনি জানান, শ্রমিকদের মধ্যে অধিকাংশই বৃদ্ধ ও রোগাক্রান্ত। তাঁরা চাহিদামতো কাজ করতে পারেন না। অন্যদিকে মজুরিও বেশি। আবার রয়েছে দলভিত্তিক কাজ করার শর্ত। সবকিছু মিলে শ্রমবাজার বেশ ব্যয় সাপেক্ষ।
কয়েকজন শ্রমিক জানান, শ্রমবাজারের জন্য কোনো নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় তাঁরা রোয়াজার হাট ও শান্তির হাটে কাপ্তাই সড়কের পাশেই ভিড় জমান। এতে করে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বকাঝকাও শুনতে হয়। এ ছাড়া সড়কে প্রচুর গাড়ি চলাচল করায় দুর্ঘটনারও ঝুঁকি থাকে। তাই তাঁদের দাবি, স্থানীয় প্রশাসন যদি কোনো নির্দিষ্ট একটা স্থানে হাটের ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে অনেকটা নিরাপদেই তাঁরা শ্রম বিক্রি করতে পারবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুস আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি জেলা-উপজেলা থেকে অভাবী মানুষগণ রাঙ্গুনিয়ায় শ্রম বিক্রি করতে আসেন। সড়কের পাশে তাঁদের অবস্থান একটু ঝুঁকিপূর্ণ। তবে নির্দিষ্ট একটি নিরাপদ স্থানে শ্রমিকদের বসানো যায় কি না, ভেবে দেখা হচ্ছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মাহরীন চৌধুরীকে যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে পারিনি। এটি আমাদের ব্যর্থতা। তিনি ২০ জন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে নিজের জীবন দিয়েছেন। এ দেশে বাহিনী ছাড়া সিভিলিয়ানরা...
১১ মিনিট আগেচলছে শ্রাবণ মাস। বর্ষা মৌসুম। এই সময়ে টানা বৃষ্টি, স্যাঁতসেঁতে মাঠঘাট আর আকাশে মেঘের ঘনঘটা—এমন চিত্রই আমাদের কাছে চিরচেনা। কিন্তু উত্তরবঙ্গের জেলা পঞ্চগড়ে আজ বুধবার একদমই অন্যরকম সকালের চিত্র দেখা গেছে। ভোরবেলা ঘুম ভাঙতেই দেখা গেল—চারদিক কুয়াশায় ঢাকা। ঘাসে ঘাসে শিশির, রাস্তায় ঝাপসা আলো, যেন শীতকাল
২১ মিনিট আগেনিহতের সহকর্মী ওবায়দুর রহমান জানান, আতিকুর রহমান কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। বাড়ি মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার উত্তর ইসলামপুর গ্রামে। রাজধানীর সবুজবাগ বাসাবো এলাকায় একটি মেসে থাকতেন। তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান গ্রামে থাকেন।
২৮ মিনিট আগেডেমরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাকন মিয়া বলেন, ‘সকালে ডেমরার শাপলা চত্বর এলাকায় এক তরুণ গণপিটুনির শিকার হয়েছে বলে খবর পাই। পরে সেখানে গিয়ে তাঁকে অচেতন অবস্থায় পেয়ে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
৩৬ মিনিট আগে