Ajker Patrika

লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, পানিবন্দী ১০ লাখ মানুষ 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৪, ১২: ৩২
লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, পানিবন্দী ১০ লাখ মানুষ 

বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবারের তুলনায় আজ বুধবার পানি বেড়েছে অন্তত ১ ফুট। পাঁচ উপজেলায় পানিবন্দী আছে ১০ লাখ মানুষ। এত দিন যাঁরা এই পরিস্থিতিতে ঘর ছাড়তে চাননি, তাঁদের অনেকেই এখন উঠছেন আশ্রয়কেন্দ্রে ও স্বজনদের বাড়িতে। পানিতে তলিয়ে আছে অন্তত ৩০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। এদিকে বন্যায় আক্রান্ত হওয়ার পর ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকেই। তবে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, প্রত্যেক মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। 

ভয়াবহ বন্যায় জেলার পাঁচটি উপজেলার ৫৮টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার প্রতিটি এলাকাই বিপর্যস্ত। প্রতিনিয়ত বাড়ছে পানি। পানিবন্দী রয়েছে অন্তত ১০ লাখ বাসিন্দা। ১৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এসব মানুষের কেউ কেউ খাবার, ওষুধ, স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানির সংকটের কথা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পানিবাহিত নানা রোগ। 

আশ্রয়কেন্দ্রে না আসা পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ আরও বেশি। কোথাও হাঁটু, কোথাও কামর এবং কোথাও গলাপানির নিচে তলিয়ে রয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। অনেকেই ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন প্রসূতি, শিশু এবং বৃদ্ধরা।

লক্ষ্মীপুরের পাঁচটি উপজেলার ৫৮টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার প্রতিটি এলাকাই বিপর্যস্ত। ছবি: আজকের পত্রিকাবশিকপুরের বাসিন্দা আবদুস শহিদ ও শাহআলম বলেন, গত ১০ দিন ধরে বন্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। এর আগে টানা বৃষ্টি ও মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৪০টি এলাকা প্লাবিত হয়। এরপর ধীরে ধীরে অন্যান্য উপজেলা প্লাবিত হয়। গত কয়েক দিন ধরে ফেনী ও নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালী ও ডাকাতিয়া নদী হয়ে লক্ষ্মীপুরে ঢুকে পড়ছে। কোথাও কোথাও প্রায় চার থেকে ছয় ফুট পানিতে ডুবে আছে জনপদ। 

দীঘলীর বাসিন্দা ফারুক হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সবকিছু ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। কোথাও বের হতে পারছে না বানভাসি মানুষ। রান্না করা যাচ্ছে না। এখনো কোনো সরকারি বা বেসরকারিভাবে ত্রাণসহায়তা পাওয়া যায়নি। চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছি।’ 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মঞ্জুর হোসেন জানান, পানিতে তলিয়ে আছে অন্তত ৩০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। 

আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের পাশাপাশি ঠাঁই হয়েছে গবাদিপশুরও। ছবি: আজকের পত্রিকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ-উজ-জামান বলেন, প্রতিনিয়ত পানি বাড়ছে। মঙ্গলবার রাতভর বৃষ্টির কারণে নতুন করে পানি বেড়েছে এক ফুট। এখন বন্যার কোনো উন্নতি নেই। এমনকি পানি নামতে শুরু করলেও এখনই উন্নতির আশা করা যায় না। পানি নামানোর জন্য স্লুইসগেট ও খালের ওপর বাঁধগুলো কেটে দেওয়া হচ্ছে। 

জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, বন্যার দুর্যোগ মোকাবিলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ত্রাণ বিতরণে যেন কোনো সমন্বয়হীনতা না ঘটে, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। পানিবন্দী রয়েছে অন্তত ১০ লাখ বাসিন্দা। প্রতিদিন আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ রয়েছে। সঠিকভাবে বণ্টন করতে পারলে কোনো সমস্যা হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত