Ajker Patrika

কক্সবাজারে পাচারের প্রধান টার্গেট রোহিঙ্গারা, ২০২৪ সালে ৬৫৭ জনের হদিস নেই

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারে মানব পাচার রোধ ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা বিষয়ে অনুষ্ঠিত কর্মশালা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজারে মানব পাচার রোধ ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা বিষয়ে অনুষ্ঠিত কর্মশালা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উপকূল ব্যবহার করে সাগরপথে দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে মানব পাচার হচ্ছে। বিশেষ করে, শুষ্ক মৌসুমে সাগর শান্ত থাকার সুযোগ নিয়ে পাচারকারীরা মাছ ধরার ট্রলারে করে প্রায় প্রতিদিনই মানব পাচার করছেন। ২০১৮ সাল থেকে রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে এই হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। কেবল ২০২৪ সালে পাচারের শিকার ৬৫৭ জন রোহিঙ্গার হদিস নেই। তাঁরা বেঁচে আছেন না মারা গেছেন, সেই তথ্যও নেই।

কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে আজ সোমবার মানব পাচার রোধ ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা বিষয়ে এক কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি (বিএনডব্লিউএলএ) এই কর্মশালার আয়োজন করে।

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি ২০১৮ সাল থেকে আইওএমের সহযোগিতায় কক্সবাজারের দুটি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ও মহেশখালী উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে মানব পাচার প্রতিরোধে কাজ করছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সংস্থাটির জরিপে দুটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৫৭৪ এবং জেলার টেকনাফ, মহেশখালী, সদর ও উখিয়ায় ৮৩০ জন পাচারের শিকার ব্যক্তিকে চিহ্নিত ও সেবা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রতিবেদন বলছে, কক্সবাজারে সাম্প্রতিক মানব পাচার উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে ৮৬টি মানব পাচারের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার বেশির ভাগই কর্মসংস্থানের প্রলোভন দেখিয়ে পাচারের ঘটনা।

কর্মশালায় উপস্থাপন করা প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪ সালে মানব পাচারের মাধ্যমে ১৫০টির বেশি বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রায় ৬৫৭ জন রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছেন। এর আগের বছর ২০২৩ সালে সারা দেশে ১৩৭টি মানব পাচারের মামলা হয়। এর মধ্যে ৪৪ শতাংশ ভুক্তভোগী কক্সবাজারের বাসিন্দা। ভুক্তভোগীদের ৬৬ শতাংশ ছিল পুরুষ। এসব ভুক্তভোগীকে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করা হয়।

বিএনডব্লিউএলএর সভাপতি অ্যাডভোকেট সীমা জহুরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দিন শাহীন। অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ইউনূছ, আবু হায়দার ওসমানী প্রমুখ। কর্মশালায মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প ব্যস্থাপক নাজমুল করিম।

পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দিন শাহীন বলেন, কক্সবাজারের ২১টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মানব পাচারের ঘটনা ঘটছে। অভিযানের সময় পাচারে জড়িত কিছু ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলেও মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। পাচারকারীদের একটি ডেটাবেস করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, মানব পাচার রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সমাজের সব পর্যায়ের মানুষের অংশগ্রহণ জরুরি। নাহলে ভয়ংকর এই অপরাধ দমানো সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সীমা জহুর বলেন, কক্সবাজার জেলা আদালতগুলোতে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ৪৬০টি মানব পাচার মামলা বিচারাধীন রয়েছে। দেশে তা সর্বোচ্চ বলে জানান তিনি।

কর্মশালায় জেলা পুলিশ, ডিবি, ডিএসবি, এপিবিএন, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, আইনজীবী, সাংবাদিক ও এনজিও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনা যাঁকে ঢাকায় ‘হত্যা করলেন’, তিনি ময়মনসিংহে জীবিত!

চরফ্যাশন থেকে গেটিসবার্গ কলেজ

জীবিত ভাইকে জুলাই আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মামলায় সাক্ষীও দুই ভাই, নেপথ্যে যা জানা গেল

নগদে স্ত্রীর চাকরি, স্বার্থের সংঘাতে জড়ালেন নাহিদের সাবেক পিএ আতিক মুর্শেদ

যুক্তরাষ্ট্রে সি চিন পিংয়ের মেয়েকে বহিষ্কারের দাবি, হঠাৎ কেন এই বিতর্ক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত