Ajker Patrika

২০ বছরে পদার্পণ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের

কুবি প্রতিনিধি 
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে আনন্দ র‍্যালি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে আনন্দ র‍্যালি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

১৯ বছর পেরিয়ে ২০ বছরে পদার্পণ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। আজ বুধবার (২৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান পালন করা হয়।

সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে আনন্দ র‍্যালি, বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা ওড়ানো হয়। র‍্যালি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে কেক কাটা হয়। পরে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমাইয়া আফরিন সানি ও ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারিন বিনতে এনামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা ও প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. এম এম শরীফুল করিম এবং প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, ‘শুরুর দিক থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি। এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে। তবে গত ১৫-১৬ বছর তো আমরা অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলাম, সে ইতিহাস আর কী বলব। শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আমাদের পক্ষে মাত্র চারটি ভোট পড়ত। সবাই আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করত, এমনকি পত্রপত্রিকায়ও এটা নিয়ে লেখা হতো।’

বিশেষ অতিথি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ‘এবারের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আমাদের মনে বিশেষ এক অনুভূতি সৃষ্টি করেছে। এই অনুভূতির জন্য আমাদের ১৮ বছর অপেক্ষা করতে হয়ছে। আজকের এই দিনে আসতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্যের ত্যাগকে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। সেই সঙ্গে আমি প্রতিষ্ঠাকালীন কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ত্যাগকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজকে আমরা এই পর্যায়ে আসতে পেরেছি, আজকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমাদের একটাই অঙ্গীকার হোক, আমরা সবাই একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে, কোনো বিভাজন না করে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাব। মনে রাখবেন, আপনার সন্তান যদি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য প্রথম চয়েস না রাখে, তাহলে আমাদের পরিশ্রম বৃথা। তাই চলুন, একসঙ্গে কাজ করি, একসঙ্গে এগিয়ে যাই।’

বিশেষ অতিথি উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, ‘আজকে এখানে প্রত্যেকেই স্মৃতিচারণ করছে, আমি স্মৃতিচারণের দিকে যাব না। আমি একজন প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক হিসেবে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। দীর্ঘদিন ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনের পর এবারের আয়োজনটা একটু ভিন্ন হয়েছে। আজকে এই দিন দেখার জন্য আমাদের আব্দুল কাইয়ুমের জীবন গেছে এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। এখন অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হচ্ছে, তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। আমাদের অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’

প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা মিশন নিয়ে এসেছি। আমার মিশন হচ্ছে, দুর্নীতিমুক্ত রেখে সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে যা দরকার তা বাস্তবায়ন করা। আমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই, যেখানে শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি থাকবে না, গবেষণা হবে তাঁদের প্রধান মাপকাঠি। এখন পর্যন্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮৩ জনের মধ্যে ১০১ জন শিক্ষকের প্রোফাইল ব্ল্যাংক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের কাজ শুধু পড়াশোনা করানো নয়। তাই আমরা সবাই পড়ানোর পাশাপাশি গবেষণা করে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রথম শ্রেণির বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার অঙ্গীকার করি।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুর দিকের সময় নিয়ে স্মৃতিচারণ করে অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম এম শরীফুল করিম বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস এক ঐতিহ্যের ইতিহাস। শুরুতে আমাদের কিছুই ছিল না, বিগত ১৯ বছরে আমাদের ইতিহাস হয়েছে, গৌরব হয়েছে। আমরা ১৫ জন শিক্ষক শুরু করেছিলাম, কারও পিএইচডি ডিগ্রি ছিল না। এখন প্রতি মাসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা পিএইচডি ডিগ্রির জন্য আবেদন করছে। বিগত ১৫-১৬ বছরে আমরা অনেক অবহেলার শিকার হয়েছি। আজকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে প্রতিজ্ঞা করতে চাই, আগামী ২০৩১ সালে ২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে একটা নতুন মাইলফলক গড়তে চাই।’ উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ২৮ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৭ সালে চারটি অনুষদ সাতটি বিভাগের ১৫ জন শিক্ষক এবং ৩০০ শিক্ষার্থী নিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে ছয়টি অনুষদের ১৯টি বিভাগে ৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে নারীকে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া ‘শিবিরের লোক’ আকাশ চৌধুরীকে ধরছে না পুলিশ

প্রফেসর আনোয়ারা আ.লীগের লোক হলে এত অপমান নিয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হত না: ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময়

আলিপুরদুয়ার থেকে মোদির ‘মিশন বেঙ্গল’, নজর বাংলাদেশে

বৈষম্যবিরোধীদের মিছিল থেকে জি এম কাদেরের বাড়ি ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে আগুন

পরিচালক পদ বাতিল, বিসিবি সভাপতির পদ থেকে ফারুককে অপসারণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত