Ajker Patrika

আলোকিত মানুষ গড়তে পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরছে ‘ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি’

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান প্রতিনিধি
আলোকিত মানুষ গড়তে পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরছে ‘ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি’

আলোকিত মানুষ চাই-স্লোগান নিয়ে গড়ে ওঠা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সারা দেশের মানুষের কাছে পরিচিত নাম। বই পড়ায় আগ্রহ সৃষ্টি, মননের বিকাশ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আজ দেশব্যাপী এক আন্দোলন। সেই আন্দোলন রাজধানীর সীমানা পেয়ে এবার পাহাড়ি জেলা বান্দরবানেও কার্যক্রম শুরু করেছে। তিন বছর আগে বান্দরবান সদরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র কার্যক্রম শুরু হয়। 

বই পড়ায় আগ্রহ বাড়াতেই ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি বান্দরবানের প্রত্যন্ত এলাকা চষে বেড়ায়। শুক্রবার বাদে বাকি ছয় দিনই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির গাড়ি বান্দরবানের  বিভিন্ন প্রত্যন্ত জনপদে চষে বেড়ায়। 

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা আবদুল হামিদ মিয়া বলেন, ‘মোট ৪৩টি স্থানে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ঘুরে বেড়ায়। প্রতিটি স্থানে ত্রিশ মিনিট থেকে দুই ঘণ্টা অবস্থান করে। ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে পড়তে হলে আগে সদস্য হতে হয়। চার ধরনের সদস্য করা হয়। এর মধ্যে, সাধারণ সদস্যের এককালীন ফি ১০০ টাকা, বিশেষ সদস্যের এককালীন ফি ২০০ টাকা, অগ্রবর্তী সদস্যের এককালীন ফি ৫০০ টাকা এবং বিশেষ অগ্রবর্তী সদস্যের এককালীন ফি ৮০০ টাকা। তবে সদস্যদের বই রক্ষণাবেক্ষণের মাসিক ফি ১০ টাকা।’ 

আবদুল হামিদ আরও বলেন, ‘সাধারণত একটি বই বাড়ি নিয়ে এক সপ্তাহ পর্যন্ত রাখা গেলেও বিশেষ কারণ থাকলে তা অনুমতি সাপেক্ষে আরও বেশি সময় রাখা যায়।’ 

ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি বান্দরবান ইউনিটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, বান্দরবান সদরের উল্লেখযোগ্য স্থান গুলি হলো—সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি), গোয়ালিয়াখোলা, রেইছা, সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল, সি অ্যান্ড বি কলোনি, আর্মিপাড়া, মেম্বারপাড়া, সুয়ালক, রাজার মাঠ, বান্দরবান সরকারি কলেজ এবং সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। বিশেষ করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও জনসমাগমপূর্ণ উন্মুক্ত স্থানে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির কার্যক্রম পরিচালনা করে। সপ্তাহে কোন দিন, কোন স্থানে, কোন সময় ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি অবস্থান নেবে সদস্যদের কাছে তার তালিকা দেওয়া হয়। 

ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বান্দরবান ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে মোট সদস্য সংখ্যা ৭০০। প্রতি মাসে গড়ে ৫০ জন্য সদস্য করার লক্ষ্য থাকলেও এখন মাসে ৩০ থেকে ৪০ জন সদস্য হচ্ছে। প্রতিনিয়ত সদস্য সংখ্যা বাড়ছে।’ 

আবদুল হামিদ বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি বান্দরবানে কেবল বই পড়ার অভ্যাসই গড়ে তুলছে তা নয়, অনলাইনে পড়ার আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। প্রতি মাসেই নির্ধারিত নিয়মে এ প্রতিযোগিতা হয় এবং বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। বান্দরবানের বৈচিত্র্যময় জীবন-সংস্কৃতির মাঝেও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি সাড়া জাগিয়েছে।’ 

লাইব্রেরির সদস্য শিক্ষার্থী রাসেল, নয়ন, নেসার, রাবেয়া, তন্বীসহ আরও কয়েকজন জানান, বই পড়ার প্রতি আগ্রহ থাকলেও আগে তা ছিল অনিয়মিত। কিন্তু বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির সদস্য হওয়ার পর বই পড়ার প্রতি বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দেখে আরও নতুন নতুন সদস্য হচ্ছেন। একসঙ্গে অনেকে বই পড়ে নতুন একটা জগতের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা। বই পড়ে জ্ঞানের পরিধি বাড়ছে, নতুন অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে। 

তারা বলেন, ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির বইগুলো অধিকাংশই পুরোনো, নতুন নতুন আরও বেশি বই রাখা হলে তাদের উপকার হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত